Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

আম উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি

আম উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি
ড. মোঃ হাফিজুর রহমান
সকল ফলের সেরা ফল আম। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। বাংলাদেশে প্রায় সব জেলাতেই আম উৎপাদন হয়। বাংলাদেশে উৎপাদিত ফলসমুহের মধ্যে জমির পরিমাণ, মোট গাছের সংখ্যা এবং মোট ফল উৎপাদনের পরিমাণের দিক দিয়ে আমের স্থান সর্বাগ্রে। কিন্তু উৎকৃষ্টমানের আম উৎপদন প্রধানত উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে যেমন : চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও সাতক্ষীরাতেই সীমাবদ্ধ। অতি সম্প্রতি এসব অঞ্চলের বাইরেও অন্যান্য জেলায় বাণিজ্যিক আম চাষ শুরু হয়েছে  আম উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশে^ সপ্তম।  বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৩ লক্ষ ৬ হাজার একর জমিতে আমের চাষ হয় এবং বার্ষিক মোট উৎপাদন ১৪.৮২ লক্ষ মে. টন (বিবিএস, ২০২৪)। বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যে এবং যুক্তরাজ্যের বাজারে আম রপ্তানি করছে এবং এর রপ্তানি সম্প্রসারণের প্রচুর সম্ভবনা আছে।
পুষ্টিমান
প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী পাকা আমে ৭৮.৬ গ্রাম জলীয় অংশ, ০.৪ গ্রাম খনিজ, ০.৭ গ্রাম আঁশ, ১.০ গ্রাম আমিষ, ০.৭ গ্রাম চর্বি, ২০.০ গ্রাম শর্করা, ১৬.০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.৩ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.১ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১, ০.০৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২, ৪১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৮৩০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন ও ৯০ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি রয়েছে।
জাত
আমের জনপ্রিয় জাতের মধ্যে গোপালভোগ, খিরসাপাত, ল্যাংড়া, হিমসাগর, ফজলি, আশি^না, সূর্যপুরী ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। প্রচলিত জাতের আম গাছে প্রতি বছর আম ধরে না। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে আমের ১৮টি উন্নত জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। জাতগুলো হলো বারি আম-১, বারি আম-২, বারি আম-৩ ও বারি আম-৪ (হাইব্রিড) ইত্যাদি। উদ্ভাবিত জাতগুলো প্রতি বছরই ফল দিয়ে থাকে। 
উৎপাদন কলাকৌশল
মাটি : গভীর সুনিষ্কাশিত, উর্বর দো-আঁশ মাটি আশ চাষের জন্য উত্তম।
জমি নির্বাচন ও তৈরি : বর্ষার পানি দাঁড়ায় না এমন উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। চাষ ও মই দিয়ে জমি সমতল এবং আগাছামুক্ত করে নিতে হবে।
চারা/কলম তৈরি ও নির্বাচন : অনেক মাধ্যমের মধ্যে ভিনিয়ার বা ফাটল কলমের মাধ্যমে চারা তৈরি করা ভালো। এক বছর বয়স্ক সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত কলমের চারা নির্বাচন করতে হবে।
রোপণ পদ্ধতি : সমতল ভূমিতে বর্গাকার এবং পাহাড়ি ভূমিতে কন্টুর পদ্ধতি উত্তম।
রোপণের সময় : জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় এবং ভাদ্র-আশি^ন মাস।
রোপণ দূরত্ব : ৮ দ্ধ ৮ মি. থেকে ১০ দ্ধ ১০ মি.
গর্ত তৈরি : গর্তের আকার ১ দ্ধ ১ দ্ধ ১ মি.
গর্তে সার প্রয়োগ : প্রতি গর্তে সারের পরিমাণ
সমুদয় সার গর্তের উপরের মাটির সাথে ভালভালে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে তাতে পানি দিতে হবে।
চারা/কলম রোপণ : গর্ত ভর্তির ১০-১৫ দিন পর ১ বছর বয়সের চারা গোড়ার মাটির বলসহ গর্তের মাঝখানে সোজাভাবে লাগাতে হবে। চারা রোপণের পর পানি, খুঁটি ও বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
গাছের মুকুল ভাঙন : কলমের গাছের বয়স ৪ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মুকুল ভেঙে দিতে হবে।
আগাছা দমন : বর্ষা আরম্ভ হওয়ার সাথে সাথে এবং বর্ষা শেষ হওয়ার পরপরই জমিতে চাষ দিয়ে অতি সহজেই আগাছা দমন করা যায়।
ডাল ছাঁটাইকরণ : গাছকে সুন্দর কাঠামো দেওয়ার জন্য রোপণের ২-৩ বছর পর গোড়ার দিকে ১.০-১.৫ মিটার কা- রেখে সমস্ত ডাল ছাঁটাই করতে হবে। প্রতি বছর বর্ষার শেষে মরা, রোগাক্রান্ত, শুকনো ও দুর্বল ডালপালা কেটে দিতে হবে। এ ছাড়া গাছ বেশি ঝোপালো হলে অতিরিক্ত ডালপালা ছাঁটাই করে আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।
পরগাছা দমন : আম গাছে বিভিন্ন ধরণের পরগাছা হতে দেখা যায়। এসব পরগাছা খাদ্য-রস শোষণ করে আম গাছের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। ফলে গাছের বৃদ্ধি ও ফলন ব্যাহত হয়। এগুলো দেখা মাত্র দমনের ব্যবস্থা করতে হবে।
সার প্রয়োগ : চারা রোপণের পর গাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। গাছ বৃদ্ধির সাথে সাথে সারের পরিমাণও বাড়াতে হবে। বয়স ভিত্তিতে গাছপ্রতি সারের পরিমাণ সারণি দ্রষ্টব্য।
উল্লিখিত সার ৪ ভাগ করে অর্থাৎ ফল আহরণের পর প্রথম ভাগ মার্চ -এপ্রিল মাসে, দ্বিতীয় ভাগ জুন-জুলাই মাসে, তৃতীয় ভাগ সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে এবং চতুর্থ ভাগ ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে প্রয়োগ করতে হবে। জিপসাম ও জিংক সালফেট ৬ মাস পর পর প্রয়োগ করলেও চলবে। প্রয়োজনে সার প্রয়োগের পর হালকা সেচ দিতে হবে। সেচ দেওয়ার পর গাছের গোড়ার চারপাশে জাবড়া দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এতে মাটি অনেকদিন পর্যন্ত আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে।
পানি সেচ : চারা গাছের দ্রুত বৃদ্ধিও জন্য ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। ফলন্ত গাছে মুকুল বের হওয়ার ৩ মাস আগে থেকে সেচ দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে। আমের মুকুল ফোটার শেষ পর্যায়ে ১বার এবং ফল মটর দানার আকৃতি ধারণ পর্যায়ে আর এক বার পরিবর্তিত বেসিন পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগ করতে হবে। 
আম গাছের উপর্যুক্ত পরিচর্যার অভাব ও অধিকাংশ জেলায় উন্নত জাতের আমগাছ এবং বাগানের অনুপস্থিতির কারণ ছাড়াও শুধুমাত্র রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণের ফলেই আমের উৎপাদন বহুলাংশে ব্যাহত হয় । 
রোগবালাই ও প্রতিকার
এ্যানথ্রাকনোজ : এ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণে গাছের পাতা, কা-, মুকুল ও ফলে ধূসর বাদামি রঙের দাগ পড়ে। এ রোগে আক্রান্ত মুকুল ঝরে যায়। আমের গায়ে কালচে দাগ হয় এবং আম পঁচে যায়।
প্রতিকার : আমের মৌসুম শেষে গাছের মরা ডালপালা কেটে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। কাটা অংশে বর্দোপেস্ট (প্রতি লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম তুঁতে ও ১০০ গ্রাম চুন) লাগাতে হবে; গাছের নিচে পড়া মরা পাতা কুড়িয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে; গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি টিল্ট-২৫০ইসি অথবা ২ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫/ ইন্ডোফিল এম ৪৫ মিশিয়ে সমস্ত মুকুল ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের আকার মটর দানার মতো হলে ২য় স্প্রে করতে হবে। 
পাউডারী মিলডিউ : পাউডারি মিলডিউ রোগের আক্রমণে আমের পাতা ও মুকুল সাদা পাউডারের মতো আবরণ দেখা যায় এবং মুকুর ঝরে যায়। মেঘলা দিনে বাতাসের মাধ্যমে এ রোগ বেশি বিস্তার লাভ করে।
প্রতিকার : গাছে মুকুল আসার পর একবার এবং ফল মটর দানা আকারের হলে আর একবার প্রতি লিটার পানিতে থিওভিট ২ গ্রাম অথবা টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
অনিষ্টকারী পোকামাকড় ও দমনব্যবস্থা 
আমের হপার : হপার এর আক্রমনে বাংলাদেশে সর্বত্র আমের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই পোকাগুলো অপ্রাপ্ত বয়স্ক নিম্ফ এবং পূর্ণবয়স্ক উভয় অবস্থাতেই আমগাছের সকল কচি অংশ থেকে গাছের রস চুষে খেয়ে বাঁচে। সারা বছর ধরেই আমগাছে এ পোকাগুলো দেখা যায়। আমের মুকুল আসার সময় প্রতিটি মুকুলে অসংখ্য হপার নিম্ফ দেখতে পাওয়া যায়। নিম্ফগুলো মুকুলের রস চোষার ফলে মুকুলের ফুল শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে যায়। এছাড়া নিম্ফগুলো মুকুলের রস চোষার সাথে সাথে মলদ্বার দিয়ে  এসময় প্রচুর পরিমাণে আঠালো মধুরস ত্যাগ করে যা মুকুলের ফুল ও গাছের পাতায় আটকে যায়। এই আঠালো পদার্থে ফুলের পরাগরেণু আটকে গিয়ে ফুলের পরাগসংযোগ ক্রিয়া ব্যাপকভাবে বিঘিœত হয়। এমতাবস্থায় হপার আক্রান্ত মুকুলে কদাচিৎ ফল ধরে। ফুল ও পাতায় মধুরসে ছত্রাক জন্মে ও পরে কালো হয়। হপার এর আক্রমণের ফলে আমের উৎপাদন শতকরা ২০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত  হ্রাস পেতে পারে। 
প্রতিকার : আম গাছে মুকুল আসার পর ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বেই (পুষ্পমঞ্জরি ছড়ার দৈর্ঘ্য যখন ৫-১০ সেমি) একবার এবং এর এক মাস পর আর এক বার প্রতি লিটার পানির সাথে ১.০ মিলি সিমবুস ফেনম/বাসাথ্রিন ১০ ইসি অথবা ডেসিস ২.৫ ইসি/রিপকর্ড মিশিয়ে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপালা ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দমনের ছত্রাকনাশক টিল্ট ২৫০ ইসি প্রতিলিটার পানির সাথে ০.৫ মিলি. হারে অথবা এন্ডোফিল এম জেড এবং হপার দমনের কীটনাশক একত্রে মিশিয়ে স্প্রে করা হলে শ্রম ও খরচ দুটোই সাশ্রয় হবে।
আমের ফল ছিদ্রকারী/ভোমরা পোকা : আমের ভোমরা পোকার কীড়া আমের গায়ে ছিদ্র করে ভেতরে ঢুকে শাঁস খায়। সাধারণত কচি আমে ছিদ্র করে এরা ভেতরে ঢুকে এবং ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। এ জন্য বাইরে থেকে আমটি ভাল মনে হলেও ভেতরে কীড়া বা পূর্ণবয়স্ক পোকা পাওয়া যায়। একবার কোন গাছে এ পোকার আক্রমণ হলে প্রতি বছরই সে গাছটি আক্রান্ত হয়ে থাকে। বীজ থেকে আমগাছের ফলই এই উইভিল পোকার দ্বারা সর্বাধিক আক্রান্ত হয়ে থাকে। বর্তমানে যমুনা নদীর পুর্বদিকে অবস্থিত জেলাগুলোতে উন্নতজাতের কলমের আমগাছের সংখ্যা খুব কম বলে এসব আম উইভিল দ্বারা কম আক্রান্ত হয়। এ পোকার শতকরা ২০ থেকে ১০০ ভাগ আম নষ্ট হতে পারে । আক্রান্ত আম ঘরে রাখলে পচে য়ায় । আমের উইভিল আম ছাড়া অন্য কোন ফলে আক্রমণ করে না । এ পোকা বছরে মাত্র একবারই বংশবৃদ্ধি করে । আমের মৌসুম শেষ হওার পর উইভিল আমগাছের নিচে মাটির ভেতরে, গাছের কা- ও ডালের শুকনো বাকলের নিচে এবং আমগাছে জন্মানো বিভিন্ন পরগাছা ও পরজীবী উদ্ভিদগুলোর দ্বারা সৃষ্ট জঞ্জালের মধ্যে পরবর্তী আমের ফলন না হওয়া পর্যন্ত  লুকিয়ে থাকে।  
প্রতিকার : উন্নতজাতের কলমের আমগাছের আমে উইভিলের আক্রমণ অনেক জায়গায় হতে দেখা যায়নি বলে এরূপ জাতের আমের আমগাছ লাগাতে হবে। বর্তমান অবস্থায় আম গাছগুলোর পোকাক্রান্ত আম পেড়ে এবং গাছের  নিচের মাটি থেকে এরূপ আম কুড়িয়ে নিয়ে গরুকে খাইয়ে কিংবা গভীর পানিতে ডুবিয়ে নষ্ট করা উচিত। এছাড়া জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি প্রতিটি আমগাছের চারদিকে চার মিটার ব্যাসার্ধের বৃত্তের মধ্যে সকল আগাছা পরিষ্কার করে ভালভাবে মাটি কুপিয়ে উল্টে দিতে হবে যাতে মাটির ভেতর লুকিয়ে থাকা উইভিল ধ্বংস হয় । আমগাছের আম সংগ্রহের পর আম গাছে মরা ও অপ্রয়োজনীয় শাখা, গাছের সমস্ত পরগাছা ও পরজীবি উদ্ভিদ ধ্বংস করে গাছে উইভিলের লুকিয়ে থাকার স্থানও নষ্ট করতে হবে; গাছে ফল আসার ১-২ সপ্তাহ পর প্রতি লিটার পানিতে লিবাসিড ৫০ ইসি অথবা সুমিথিয়ন ৫০ ইসি ২ মিলি মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ বার স্প্রে করে ভাল ফল পাওয়া যায়।
আমের মাছি পোকা : আম পাকার সময় স্ত্রী মাছি ডিম পাড়ার অঙ্গের সাহায্যে আমের গা ছিদ্র করে তার মধ্যে ডিম পারে। ডিম ফুটে কীড়া বের হয়ে ফলের শাঁস খায়। আক্রান্ত আম কাটলে তাতে অসংখ্য কীড়া দেখা যায়।
প্রতিকার : ১০০ গ্রাম পাকা আমের রসের সাথে ১ গ্রাম ডিপটারেক্স ৮০ এসপি মিশানো বিষটোপ ব্যবহার করতে হবে; প্রতি লিটার পানির সাথে ডেসিস ২.৫ ইসি ১ মিলি হারে মিশিয়ে আম সংগ্রহের ১ থেকে ১.৫ মাস আগে থেকে পাতা ও আম ভিজিয়ে ১৫ দিন অন্তর দুইবার স্প্রে করতে হবে; পাকার আগেই আম সংগ্রহ করতে হবে।
পাতাকাটা উইভিল : এ পোকার আক্রমণে আম গাছের নতুন পাতা ধ্বংস হয়।
প্রতিকার : মাটি থেকে নতুন কাটা পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে হবে; গাছে কচি পাতা বের হবার পর প্রতি লিটার পানির সাথে ২ মিলি সুমিথিয়ন/ফলিথিয়ন ৫০ ইসি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মিলিবাগ ও স্কেল পোকা : এসব পোকা চারা গাছের কচি ডালের সাথে লেপ্টে থাকে এবং রস শুষে খায় ও হানিডিউ নির্গত করে সুটি মোল্ড রোগের সৃষ্টি করে। 
প্রতিকার : এডমায়ার ২০০ এসএল প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২.৫ মিলি. হারে মিশিয়ে ভালভাবে ¯েপ্র করতে হবে।
ফল সংগ্রহ 
গাছে কিছু সংখ্যক আমের বোটার নিচের ত্বক যখন সামান্য হলুদাভ রং ধারণ করে অথবা আধাপাকা আম গাছ থেকে পড়া আরম্ভ করে, তখনই আম সংগ্রহ করার উপযুক্ত সময়। গাছ ঝাঁকি দিয়ে আম না পেড়ে জালিযুক্ত বাঁশের কোটার সাহায্যে আম সংগ্রহ করা ভাল।

লেখক : ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, শিবপুর, নরসিংদী, মোবাইল : ০১৭২০৬৪৫৬২৯