শুধু ফোনের তরঙ্গে ৩ জি কিংবা ৫ জি আছে তা নয়,আছে কৃষি প্রযুক্তিতেও। কৃষি প্রযুক্তিতে লাউ এ ২ জি, ৩ জি কাটিং এর মাধ্যমে কৃষকেরা ফলাচ্ছেন উন্নত জাতের লাউ। লাউ চিংড়ি, লাউ ঘন্টো, আর লাউ শাক সারা বছর বাঙালির ভোজন পাতে উপহার দিতে নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষকেরা করোনার কালে অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে মাচা পদ্ধতিতে করলা আর লাউ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। লাউ আর করলা চাষ করে আগামীর স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা।
অন্য ফসলের তুলনায় উৎপাদন খরচ কম, বাম্পার ফলন ও বাজারে ভাল দর পাওয়ায় এ এলাকায় কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে করলা আর লাউ চাষ। সবুজের সমারোহে হলদে আর সাদা ফুল উকিঁ দিছে আকাশ পানে। অবারিত ফসলের মাঠে মাঁচার নিচে ঝুলছে থোকা, থোকা করলা আর লাউ। নিতাই ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে লাউ খেতে দেখা মেলে মৃত তফেল উদ্দিনের ছেলে আনোয়ারুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, লাউ চাষে রোগবালাই কম, অল্প পরিশ্রম আর অধিক লাভ হওয়ায় প্রতিবছর অন্য ফসলের চাষাবাদ না করে লাউ আর করলা চাষ করে সংসারের অভাব দূর হয়েছে। এবারও তিনি ১৫ শতাংশ জমিতে লাউ আর ৪৫ শতাংশ জমিতে করলা চাষ করেছে। যা ইতোমধ্য বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। তিনি আরো জানান, প্রথমদিকে জমি প্রস্তুত, বীজ রোপন, মাচাঁ তৈরীর সময় একটু পরিশ্রম হয়। এছাড়া গাছ বড় হওয়ার পর তেমন শ্রম দিতে হয় না। শুধু নিয়মিত তদারকি করলেই হয়। এছাড়া কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শ সেবা পেয়ে থাকেন বলে তিনি জানান।
১৫ শতাংশ জমিতে লাউ ধরা পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। যা বিক্রি করে আয় করা যাবে ৪০/৫০ হাজার টাকার মতো। লাউ একটি শীতকালীন সবজি হলেও আগাম জাতের লাউ পুষ্টিগুণে ভরপুর লাউয়ের ডগা বাজারে ভোক্তার কাছে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।বর্তমান বাজারে একটি লাউ ৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর উৎপাদন আগামী তিন মাস অব্যাহত থাকবে। করলা চাষাবাদ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান ৪৫ শতাংশ জমিতে সবকিছু মিলিয়ে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকার মতো। আর প্রতি মণ করলা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা ধরে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত না হলে করলা বিক্রি করে প্রায় ২লক্ষাধিক টাকার মতো আয় করা যাবে। কৃষক আনারুলের পাশাপাশি স্থানীয় কৃষক বাবু ও আকবার তারা জানান যে করলা চাষে গোবর, ছাই, কচুরিপানা এসবের বাইরে রাসায়নিক সারের খুব একটা ভূমিকা নেই বললেই চলে। জমিতে মাচাঁ করতে বাশঁ, তার, সুতা, সার, বীজ, কামলা বাবদ এক বিঘা জমিতে করলা চাষে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার বেশি খরচ হয় না।অন্যান্য ফসলের তুলনায় করলা চাষে শ্রমও তুলনামূলক কম দিতে হয়। ইতোমধ্যে অতিবৃষ্টির কারণে অন্যান্য সবজি নষ্ট হওয়ায় করলার প্রচুর চাহিদা এবং বাজার দর ভালো থাকায় প্রতি বিঘা জমির করলালক্ষাধিক টাকা মত বিক্রি করা যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, পোকামাকড় দমনে নানা ধরনের কীটনাশক ব্যবহারে দেশে উৎপাদিত সবজি মানবদেহে জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে উপজেলা কৃষি বিভাগ গৃহীত কৃষি প্রণোদনা প্রকল্পের আওতায় আমরা স্থানীয় কৃষকদের লাউ সহ অন্যান্য সবজি বিষমুক্ত উপায় উৎপাদনের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এই উদ্যোগে উপজেলায় কৃষকদের মাঝে সাড়া ফেলেছে।