সকাল ১০ টায় ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার কুলফাডাঙ্গা গ্রামের এম কে হাই স্কুল মাঠে ও মাঠ সংলগ্ন ধানের ক্ষেতে কৃষির আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারে মাঠ দিবস ও কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদর্শন এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ হামিদুর রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যশোর অঞ্চল, যশোর কৃষিবিদ মোঃ খায়রুল আবরার এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কো অর্ডিনেটর ইকোনোমিক গ্রোথ ইউ এস এইড বাংলাদেশ মোহাম্মাদ নুরুজ্জামান। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আর এ আর এস যশোর কৃষিবিদ ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম প্রকল্প পরিচালক ফার্ম ম্যাকানাইজেশন, প্রকল্প ডি এই কৃষিবিদ শেখ নাজিম উদ্দিন, নির্বাহী পরিচালক জে সি এস আযাদুল কবির আরজু।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ও বিষয় ভিত্তিক বক্তব্য রাখেন, ড. খন্দকার সফিকুল ইসলাম, হাব কো অর্ডিনেটর সি সি সা এম আই সিমিট। বক্তব্য রাখেন, কৃষিতে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে উপকার ভোগী চাষি মনি কুমার জোদ্দার, মোঃ নিজাম উদ্দিন, যান্ত্রিক সেবা দানকারি কৃষক আমির হামজা, স্থানীয় মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বকর মল্লিক, কৃষিবিদ আফজাল হোসেন ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রকল্প পরিচালক যান্ত্রিক ম্যাকানাইজেশন ডি এ ই কৃষিবিদ নাজিম উদ্দিন বলেন, একই জায়গায় কমিউনিটি ভিত্তিক যান্ত্রিক কার্যক্রম কৃষি উন্নয়নে চাষিদেরকে আরো এগিযে নেবে।
উপ পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ ঝিনাইদহ কৃষিবিদ শাহ্ মোঃ আকরামুল হক বলেন, উন্নত বিশ্বের কৃষিতে শ্রমিক থাকে ৭-৮%, আমাদের দেশে কিছুদিন আগেও ছিল ৬০-৭০% ছিল বর্তমানে আছে ৪০% শ্রমিক। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ জেলায় ১৭ হেক্টর জমিতে যন্ত্রের মাধ্যমে ধান রোপনে সক্ষম হয়েছি। আগামীতে কৃষি যান্ত্রিকীকরন কার্যক্রম জোরদার হবে। ঝিনাইদহ জেলার ১৮ লক্ষ মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা দেয়ার পরেও ৪ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকে। ড. সিরাজুল ইসলাম মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, যশোর অঞ্চল কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে পথিকৃত। কৃষি গবেষণা ইনিষ্টিটিউট বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি নিয়ে গবেষণা করে। কৃষি গবেষণা এ পর্যন্ত ৩৫ টি কৃষি যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেছে। আর সীমিত আকারে হলেও এ সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে। যেমন আলু তোলা মেশিন, ঘাস কাটা মেশিন উল্লেখযোগ্য। ইউ এস এইড এর কো অর্ডিনেটর মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, কৃষিতে ম্যাকানাইজেশন ডিজিটাল করতে হবে। আমেরিকায় ৩২-৩৩ কোটি মানুষের খাদ্য উৎপাদনে মাত্র ২-৩% লোক কাজ করে।
প্রধান অতিথি কৃষিবিদ মোঃ হামিদুর রহমান বলেন, কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার আলোচনা সভা একটি মেলায় পরিণত হয়েছে। কৃষি উন্নয়নের স্বার্থে, কৃষি যান্ত্রিকীকরণে আমরা সবার অংশগ্রহণে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি তার কার্যক্রম চলছে। প্রধান অতিথি বলেন, ১৯৭১ সালে ১ কোটি হেক্টর জমি চাষের আওতায় ছিল আর জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি। ৪৫ বছর পর ৮০-৮২ লক্ষ হেক্টর জমিতে খাদ্য উৎপাদন করে আজকে ৩ কোটি ৬০ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদিত হচ্ছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সরকারের গৃহীত সড়ে তিন বছরের কৃষি কার্যক্রমকে গতিশীল করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জাতীয় কৃষি নীতি প্রনয়ণ করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি সম্প্রসারণ নীতিমালা প্রনয়ণ করে এর মাধ্যমে কৃষি কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার কৃষি যন্ত্রপাতি সহ অন্যান্য খাতে প্রনোদনা দিচ্ছে। আমাদের কৃষি গবেষণা গুলো নতুন নতুন জাতের আবিষ্কার করছেন। চাষযোগ্য জমির ৭০ ভাগ সেচের আওতায় আনা, এক ফসলী জমি দো ফসলী জমি হচ্ছে । দো ফসলী জমি তিন ফসলী হচ্ছে। মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে। গ্রাম ছেড়ে শহরে এমনকি বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এখন শ্রমিক সমস্যা মেটাতে ফসল উৎপাদনে কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে কোন বিকল্প নেই। আলোচনা সভার আগে মহা পরিচালক মেশিনের সাহায্যে ধান ক্ষেতে ধান কাটার পর সরিষা বুনন, ধান কাটা প্রত্যক্ষ করেন।
সভাপতির বক্তেব্যে অতিরিক্ত পরিচালক যশোর অঞ্চল, যশোর কৃষিবিদ খায়রুল আবরার বলেন, যশোর অঞ্চল বাংলাদেশের মধ্যে শাক সব্জি উৎপাদনে সমৃদ্ধ। এ অঞ্চলে ফসল উৎপাদনে কৃষি যন্ত্রের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য কৃষিযন্ত্রপাতির ব্যবহার ও প্রদর্শনে অংশগ্রহন করেন জনতা ইনজিনিয়ারিং, এসি আই মটরস লিঃ ও রংপুর ফাউন্ড্রি লিঃ।