কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগনের প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম জেলায় ক্ষতিকর পোকা দমনের জৈব প্রযুক্তি সেক্স ফেরোমেন ফাঁদের ব্যবহার কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। জেলার সাতকানিয়া, লোহাগড়া, মীরসরাই, বাঁশখালী, পটিয়া, রাউজান, হাটহাজারী, সীতাকুন্ড সহ নগরের হালিশহর ও পতেঙ্গার বিস্তৃত এলাকায় বিভিন্ন সবজি যেমন বেগুন, টমেটো, শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি ফসলের মাঠে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদের ব্যবহার এখন একটি সফল সম্প্রসারিত কৃষি প্রযুক্তির উদাহরন। জৈব পদ্ধতিতে পোকা দমন করে উৎপাদিত এ সব ফসলে রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার না হওয়ায় ভোক্তাদের নিকটও এ এলাকার সবজির আলাদা কদর তৈরী হয়েছে। সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করে উৎপাদিত এসব নিরাপদ সবজি বাজারজাত করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভের মুখ দেখছেন। মৌসুম শুরুর পূর্বেই বিগত সেপ্টেম্বর মাসে সঠিক কর্মপরিকল্পনা প্রনয়ন করে তা বাস্তবায়নের ফলেই এ সফলতা এসেছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্মকর্তারা মনে করেন।
এ জেলায় সবজি আবাদী জমির পরিমান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্ববর্তী বছরে যেখানে রবি মৌসুমে মোট আবাদকৃত সবজি ফসলের জমির পরিমান ছিল ১৮,০০০ হেক্টর, সেখানে এ বছর তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২২,৮৫০ হেক্টর। সম্প্রতি সমাপ্ত জাতীয় সবজি মেলা ২০১৬ তে সবজি উৎপাদনে চট্টগ্রাম জেলা তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আমিনুল হক চৌধুরী জানান, বিগত রবি মৌসুমের তুলনায় এ বছর প্রায় পাঁচ গুনের বেশী ফেরোমেন ফাঁদ সবজি ফসলে ব্যবহৃত হয়েছে। মৌসুম শুরুর পূর্বে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা অনুসারে এলাকাভেদে ফসলের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বোরো মৌসুমের সেচ নির্ভর ধান আবাদের পরিবর্তে হালকা সেচ নির্ভর সবজির আবাদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। জৈব পদ্ধতিতে পোকা দমনে সেক্স ফেরমোন ফাঁদের ব্যবহার সম্প্রসারণের জন্য এ মৌসুমে জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্লক আকারে প্রদর্শনী স্থাপন করা হয় যা স্থানীয় কৃষকদের সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহারে উৎসাহিত করেছে। জেলায় এ বছর রবি মৌসুমে আনুমানিক পঁচিশ হাজার সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ স্থাপন করা হয়েছে যার পরিমান ভবিষ্যৎতে আরও বৃদ্ধি করার জন্য ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা প্রনয়ন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।