গত ২৪ অক্টোবর/২০২০ সকাল ১০ টায় কৃষি মন্ত্রনালয়ের মাননীয় সচিব মো. মেজবাহুল ইসলাম তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার গোয়ালবাড়ি স্থানে কপি বাগান পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন কালে তার সফর সঙ্গী ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ, রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীন উন্নয়য় প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ অজিউল্লা,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মনিরুজ্জামান, রংপুর জেলার উপপরিচালক ড. মো. সরওয়ারুল হক, কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার ড. মুহঃ রেজাউল ইসলাম, তারাগঞ্জ উপজেলার কৃষি অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ দুই শতাধিক কৃষক ও কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।
কপি বাগান পরিদর্শন কালে কৃষি সচিব বলেন, এদেশে চা চাষের ইতিহাস সুদীর্ঘ হলেও কফি চাষ খুব বেশি দিনের নয়। গত কয়েক বছরে উত্তরাঞ্চলে বেশ কিছু জেলায় চা চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। সেখানে বেশ উৎকৃষ্টমানের চা উৎপাদিত হচ্ছে। রংপুরের মাটি তুলনামূলক কম খরা সম্পন্ন মাটি হওয়ায় কফি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষক নায্যমূল্যে বাজারজাত করতে পারলে তারাগঞ্জে কফি চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে এবং কফি বীজের প্রক্রিয়া জাত করণ ও বাণিজ্যিকী করণের সুযোগ সৃষ্টি করা গেলে তারাগঞ্জ উপজেলার কফি দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতা কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন-তারাগঞ্জ উপজেলার মাটি এবং জলবায়ু চা ও কফি চাষের উপযোগী। ফলে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি চা বাগান গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এখানে কফি চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরাঞ্চলে চা চাষের সফলতার পর এবার কফি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। দেশের পার্বত্য জেলাগুলোয় বেশকিছু কফি বাগান গড়ে উঠলেও উত্তরবঙ্গে এই প্রথম কফির চাষ হচ্ছে।
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের গোয়ালবাড়ি গ্রামের কৃষক মোখলেছুর রহমান বলেন তিনি ২০১৭ সালে কক্সবাজারের একটি নার্সারি থেকে ৮০০টি কফি গাছের চারা নিয়ে এসে নিজের ৩০ শতাংশ জমিতে কফি চাষ শুরু করেন।অনেকটা শখের বশেই তিনি কফি গাছগুলো রোপণ করেছিলেন। কিন্তু গতবছর গাছে ফুল ও ফল আসার পর থেকে তিনি বেশ উৎফুল্ল। এবছরের ব্যাপক উৎপাদন দেখে কফির বাণিজ্যিক চাষাবাদের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এবছর তার বাগানের প্রায় ৪৫০টি গাছে ফল ধরেছে এবং সবকটি গাছ মিলিয়ে তিনি ফলন হিসেবে ২৫-৩০ কেজি শুকনো কফি বীজ পাবেন বলে আশা করছেন। এবছরের সংগৃহীত বীজ থেকে তিনি নিজেই বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন করে আরও প্রায় দেড় একর জায়গায় বাগান সম্প্রসারণ করার পাশাপাশি উৎপাদিত চারা এলাকায় আগ্রহী কৃষকসহ কফি উদ্যোক্তাদের দ্বারা দেশব্যাপী সরবরাহের মাধ্যমে কফি চাষকে সম্প্রসারিত করার ইচ্ছে রাখেন। তার কফি চাষের সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।