নওগাঁর মহাদেরপুর উপজেলায় করোনা মোকাবেলায় আপদকালীন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক দেশে সবজি উৎপাদনে কোন প্রভাব না পড়ে সেই লক্ষ্যে প্রতি ইঞ্চি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে বসতবাড়ির আঙ্গিনাসহ পতিত জমিতে কৃষকগণ পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করে চলেছেন। এসকল সবজি বাগান দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং শুধু পুষ্টি নয়, সংসারের বাড়তি অর্থও যোগান দেয় অত্র এলাকার কয়েক শত কৃষক পরিবারের।
মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পুরো দেশ যখন লকডাউনে ছিল। তখন সবজির সরবরাহ ও উৎপাদনসহ বিভিন্ন ভাবে সবজির চরম সংকটের সৃষ্ঠি হয়েছিল। এছাড়াও অতি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়। ফলে সেই সংকট মোকাবেলার লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় কৃষকের ফেলে রাখা পতিত জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা হয়।
উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ৩২ টি করে মোট ৩২০ টি পরিবারে পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। এসব পারিবারিক পুষ্টি বাগানে উৎপাদিত বিভিন্ন রকমের বিষমুক্ত সবজি কৃষকরা নিজের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজি বাজারজাত করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করছেন এবং দেশের সবজি চাহিদার ঘাটতি পুরুনে অগ্রণী ভুমিকা রেখে চলেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস করোনকালীন সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রান্তিক কৃষক এক শতক জমিতে শাকসবজি চাষ করেছেন তাদের বিনামুল্যে বীজ ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়। সেই প্রনোদনা আওতায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনে প্রতিটি কৃষক পরিবারকে ১ হাজার ৯৩৫ টাকা এবং ১৬ প্রকার শাকসবজি বীজ প্রদান করেন এবং বাগানে কৃষকদের সবজি চাষ ও পরিচর্যা সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করে চলেছেন।
মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জনাব অরুন চন্দ্র রায় বলেন, পারিবারিক পুষ্টি বাগান কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রয় হচ্ছে আগাম শীতকালিন শাকসবজি যার মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে উপজেলা ৩২০ টি কৃষক পরিবার। তিনি আরো বলেন, সবজি ক্ষেত তৈরী, চারি দিকে বেড়া, পরিচর্যার জন্য প্রতিটি পরিবারকে ১ হাজার ৯৩৫ টাকা এবং জমিতে চাষের জন্য বিনামুল্যে লাউ, সিম, ঢেড়ষ, ডাঁটা, চিচিঙ্গা, পুইশাক, কলমীশাক, লালশাক, পালংশাক, পেঁপে, মুলা ও করলাসহ ১৬ প্রকার সবজি বীজ প্রদান করা হয়। আগামীতে উপজেলার প্রতিটি পরিবারে তৈরী হবে পারিবারিক পুষ্টি বাগান বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।