মো. নাজমুল সাকিব রেজা
রংপুর
প্রশ্ন : আম গাছের কচি পাতা ও পুষ্প মঞ্জরিতে সাদা পাউডারের মতো গুঁড়া দেখা যায়। এর জন্য কী করণীয়?
উত্তর : এটি একটি আম গাছের ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগের আক্রমণে কচি পাতা ও পুষ্প মঞ্জরিতে সাদা পাউডারের মতো গুঁড়া দেখা যায়। যার ফলে ফুল ও ফল ঝরে পড়ে। এ রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য বাগান সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ফুল আসার আগে একবার এবং ফুল ধরার পর একবার ৮০% সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন- কুমুলাস অথবা থিওভিট ২ গ্রাম এবং টিল্ট ০.৫ মিলি. প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
বজলুল রশিদ
ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন : গমের শিষে কচি দানার রস চুষে খায়। শিষ কালো হয়ে ঝরে পড়ে, কী করলে উপকার হবে।
উত্তর : পূর্ণবয়স্ক ও বাচ্চা জাবপোকা উভয়ই গমের পাতা, কা- ও শিষের কচি দানা থেকে রস চুষে খায়। জাবপোকা এক ধরনের রস নিঃসরণ করে ফলে তাতে শুঁটিমোল্ড ছত্রাক জন্মে এবং আক্রান্ত অংশ কালো দেখায়। জমিতে আক্রমণ বেশি হলে ইমিডাক্লোরপিড জাতীয় কীটনাশক (এডফায়ার, কনফিডর) ১ মিলি. লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
পান্না
দিনাজপুর
প্রশ্ন : আমার টমেটো ক্ষেতে ফুল ফল ধরার পর গাছ মরে যায়। প্রতিকার জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর : আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। আপনার টমেটো ক্ষেতের সম্পূর্ণ গাছ একবারে নেতিয়ে পড়ে বা ঢলে পড়ে মরে যায়, নাকি পাতা শুকিয়ে মরে যায় তা উল্লেখ করলে ভালো হতো। টমেটো গাছে ফুল-ফল আসার পর ঢলে পড়া রোগে গাছ মরে যেতে পারে। এ রোগ ছত্রাকজনিত ও ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে হতে পারে। ছত্রাকজনিত ঢলে পড়া রোগ নিয়ন্ত্রণে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলে বাকি গাছগুলোতে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক গাছ ও মাটি ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। অন্যদিকে শিকড়সহ গাছের মাটিসংলগ্ন স্থান যদি ভেজা ভেজা থাকে বা চাপ দিলে যদি পিচ্ছিল পদার্থ বের হয় বা পিচ্ছিল লাগে তাহলে আক্রান্ত গাছ শিকড় ও আক্রান্ত স্থানের মাটিসহ তুলে গভীর গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে। বাকি গাছগুলোতে ব্যাকটেরিয়ানাশক ক্রোসিন-এজি ১০ এসপি নির্ধারিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে।
রাকিব
বরিশাল
প্রশ্ন : দিনের কোন সময় ফসলে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
উত্তর : আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। সকালে বা বিকালে ভালো আবহাওয়ায় বাতাসের অনুকূলে স্প্রে করতে হয়। এ সময়ে রোদের তাপ কম থাকে। বৃষ্টির আগে বা পরে বা কড়া রোদে, বিশেষ করে দুপুরে এবং প্রবল বাতাস বয়ে যাওয়ার সময় কীটনাশক স্প্রে করা উচিত নয়।
পল্লব রায়
দিনাজপুর
প্রশ্ন : ধানক্ষেতের বৃদ্ধি কম। ধান গাছ বসে যায়। কী করণীয়?
উত্তর : ধানক্ষেতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সুষম সারের অভাবে এ লক্ষণ দেখা দেয়। সাধারণত দস্তা সারের অভাবে এ ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। ধান গাছের কুশি কম হয় ও গাছ খাটো হয় এবং বসে যায়। পুরনো পাতায় মরিচার মতো দেখা যায় এবং কচি পাতা সাদা হয়ে যায়। এ লক্ষণ দেখা গেলে করণীয়Ñ
০ ক্ষেতের পানি সরিয়ে দিতে হবে এবং বিঘাপ্রতি ১৫ কেজি দস্তা সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে।
অথবা
০ জিঙ্ক সালফেট ০.৫% হারে অর্থাৎ প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম জিংক সালফেট মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
সবুজ
দিনাজপুর
প্রশ্ন : কাঁঠালের মুচি কালো হয়ে ঝরে যায়। কী করণীয়?
উত্তর : ছত্রাকের কারণে এ ধরনের পচন রোগ দেখা যায়। এ রোগের কারণে কচি ফলের গায়ে বাদামি রঙের দাগ সৃষ্টি হয় এবং শেষ পর্যন্ত পচে যায়। বাতাসের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে।
করণীয়Ñ
০ গাছের নিচে ঝরে পড়া পুরুষ ও স্ত্রী পুষ্প মঞ্জরি সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
০ মুচি ধরার আগে ও পরে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার ব্যাভিস্টিন/ ইন্ডোফিল এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
তাহের হোসেন
মানিকগঞ্জ
প্রশ্ন : প্রতি শতাংশে কতগুলো মাছ দেয়া যাবে?
উত্তর : চাষ পদ্ধতি ও মাছের প্রজাতির ওপর সংখ্যা নির্ভর করে। নিচে শতাংশপ্রতি মাছের সংখ্যা উল্লেখ করা হলো।
১. সাধারণ মিশ্র চাষ : কাতলা ও সিলভার কার্প ২০টি, মৃগেল ১০টি, রুই ১০টি। অথবা কার্প ও গলদা চিংড়ি মিশ্র চাষে কার্প ৩৫টি এবং চিংড়ি ১৫টি।
২. আধা নিবিড় পদ্ধতিতে কার্প মিশ্র চাষ : কাতলা ১০টি, সিলভার কার্প ১৫টি, রুই ১০টি, মৃগেল ১০টি, সরপুঁটি ২০টি ও গ্রাস কার্প ২টি।
৩. মনোসেক্স তেলাপিয়ার একক চাষ : ২০০-২৫০টি।
৪. থাই কৈ একক চাষ : ৩০০-৩৫০টি।
৫. পাঙ্গাশ মিশ্র চাষ : ৬০-১০০টি পাঙ্গাশ, ২টি সিলভার কার্প, ২০টি শিং এবং ২৫টি মাগুর।
৬. পাঙ্গাশ একক চাষ : ১২৫-১৫০টি। মাছ চাষে লাভবান হতে হলে অবশ্যই সুষম খাবার ব্যবহার করতে হবে।
হাপান উদ্দিন
পঞ্চগড়
প্রশ্ন : আমার পুকুরের মাছের গায়ে ঘা দেখা যাচ্ছে। আমি মিশ্র চাষ করি। কিছু ঘাযুক্ত মাছ মরে যাচ্ছে। এখন আমি কী করতে পারি?
উত্তর : ১. যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মরা মাছগুলো তুলে ফেলে মাটিতে পুঁতে দিতে হবে।
২. আক্রান্ত মাছগুলো এক চা চামচ পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ২-৩ মিনিট গোসল করিয়ে নিতে হবে।
৩. প্রতি শতাংশ পুকুরে আধা কেজি চুন ও আধা কেজি লবণ দিতে হবে। মাছের ক্ষতরোগ বেশি হলে পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট শতাংশপ্রতি ১৫ গ্রাম দিতে হবে।
৪. মাছের ক্ষত থাকা অবস্থায় পুকুরে সার প্রয়োগ করা যাবে না।
৫. প্রতি কেজি খাবারের সাথে ৩ গ্রাম রেনামাইসিন এবং ৫ গ্রাম ভিটামিন সি দিতে হবে।
আইনুল হক
বগুড়া
প্রশ্ন : গরুর পায়ে ঘা হয়েছে। কী করণীয়?
উত্তর : সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে বোঝা যাবে গরুর পা পচা রোগ হয়েছে।
লক্ষণ : ১. আক্রান্ত পশুর পায়ের করোনেট ফুলে যায় এবং পশু খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে।
২. পশুর দেহ তাপমাত্রা ১০৩০ ফা.-১০৪০ ফা. পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। দুগ্ধবতী গাভীর উৎপাদন ও দৈহিক ওজন হ্রাস পায়।
৩. রোগ জটিল হলে বা একাধিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে আর্থ্রাইটিস, সাইনোভাইটিস, টেন্ডোনাইটিস হয় এবং এক পর্যায়ে পশু শুয়ে পড়ে। যথাসময়ে চিকিৎসা না হলে ক্ষুর খসে পড়ে এবং পশু স্থায়ীভাবে খোঁড়া হয়ে যেতে পারে।
৪. অনেক সময় পশুর পায়ে পুঁজ হয় এবং আক্রান্ত স্থান থেকে দুর্গন্ধ বের হয়।
রোগ প্রতিরোধ
পশুর পায়ে ক্ষত হওয়ার কারণগুলো বন্ধ করতে হবে। ৫% কপার সালফেট সলুশন ফুট বাথ হিসেবে প্রতিদিন ২ বার ব্যবহার করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এ ক্ষেত্রে কপার সালফেট ২৪ ঘণ্টা অন্তর অন্তর পরিবর্তন করতে হবে। গরুর খাদ্যে স্কয়ার সিটিসি ১৫% ২৮ দিন ব্যবহার করে এবং টিকার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
চিকিৎসা :
আক্রান্ত পশুকে জীবাণুমুক্ত শুকনা প্ররিবেশে রাখতে হবে। অতঃপর নিম্নলিখিত উপায়ে চিকিৎসা করা যায়।
১. ইরঢ়বহ ঠবঃজ রহলবপঃরড়হ/ড়ঃবঃৎধ-ঠবঃজ খঅ
ওহলবপঃরড়হ
২. অপব- ঠবঃ ইড়ষঁং/ কড়ঢ়-ঠবঃ জ ওহলবপঃরড়হ
৩. ঝঁসরফ- ঠবঃ চড়ফিবৎ.
রুবেল
নাটোর
প্রশ্ন : ছাগলের পি.পি.আর হয়েছে। কী করণীয়?
উত্তর : পি.পি.আর রোগের প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত পশুর খাদ্য গ্রহণে অনীহা, উচ্চ তাপমাত্রা (১০৭০ ফা.-১০৮০ ফা.), নাক, চোখ দিয়ে তরল পদার্থ নিঃসরণ এবং ঠোঁট, জিহ্বা ও মুখম-লে ঘা হয়।
অনবরত রক্ত মিশ্রিত ও দুর্গন্ধমুক্ত ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয়। লক্ষণ প্রকাশের ৪-৫ দিন পর চোখনাক দিয়ে পুঁজযুক্ত তরল পদার্থ নিঃসৃত হয় এবং এক পর্যায়ে শরীরে প্রচ- পানি শূন্যতা দেখা দেয়। এ ছাড়া কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং লক্ষণ প্রকাশের ৭-১০ দিনের মধ্যে আক্রান্ত পশু মারা যায়।
প্রতিরোধের উপায়
দুইভাবে প্রতিরোধ করা যায়।
১. আক্রান্ত পশুকে জবাই করে পুড়ে ফেলে বা পশুর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. টিকার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। নিকটস্থ পশু হাসপাতালে প্রাপ্ত পশুসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উৎপাদিত পিপিআর টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
চিকিৎসা :
১. ঝঁসরফ-ঠবঃ চড়ফিবৎ+ উড়ীধপরহ ঠবঃ চড়ফিবৎ ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন ২ বার প্রয়োগ করতে হবে।
২. কড়ঢ়-ঠবঃ ওহলবপঃরড়হ.
অপব ঠবঃ ইড়ষঁং.
৩. অহঃরযরংঃধ-ঠবঃ ওহলবপঃরড়হ.
৪. এবহধপুহ-ঠবঃ ১০ ওহলবপঃরড়হ.
উল্লিখিত চিকিৎসা অবশ্যই স্থানীয় পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে করতে হবে। য়
মো. তারেক
আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা
প্রশ্ন : কাঁঠালের মুচি পচে ঝরে যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : কাঁঠাল পচা রোগের আক্রমণে কচি ফলের গায়ে বাদামি রঙের দাগ দেখা যায়। ফলে আক্রান্ত ফল গাছ থেকে ঝড়ে পড়ে যায়। প্রতিকার হিসেবে গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। মুচিতে ১% বর্দোমিকচার বা ২ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ বা রিডোমিল এম জেড প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২ থেকে ১৫ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
আলাউদ্দিন
পীরগঞ্জ, রংপুর
প্রশ্ন : তরমুজ গাছের গোড়া পচে গাছ মারা যাচ্ছে। প্রতিকার কী?
উত্তর : ছত্রাকের আক্রমণে তরমুজ গাছের গোড়া পচে যায়।
প্রতিকার : ১. ক্ষেত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
২. রোগাক্রান্ত পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট বা পুড়ে ফেলা।
৩. বীজ বপনের আগে প্রোভেক্স ২.৫ গ্রাম বা ব্যাভিস্টিন ২ গ্রাম দ্বারা প্রতি কেজি বীজ শোধন করা।
৪. রোগের আক্রমণ দেখা দিলে কুপ্রাভিট ৪ গ্রাম ডাইথেন-এম ৪৫ ২.৫ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
নজরুল ইসলাম
সাপাহার, নওগাঁ
প্রশ্ন : চীনাবাদামের পাতার ওপর হলদে রঙের গোলাকার দাম পড়ে এবং ধীরে ধীরে পাতা ঝরে যায়। উপায় কী?
উত্তর : এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে বাদামের পাতার ওপর হলদে রেখা বেষ্টিত বাদামী রঙের দাগ পড়ে। একে পাতার দাগ বা টিক্কা রোগ বলা হয়।
প্রতিকার : ১. আক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২. ফসল কাটার পর আগাছা পুড়িয়ে ফেলা।
৩. রোগ সহনশীল জাতের চাষ করা।
৪. রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন/নোইন বা ২ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ মিশিয়ে ১২ থেকে ১৫ দিন পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করা।
জোবায়ের উদ্দিন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রশ্ন : ধান গাছের পাতায় ছোট ছোট চোখের মতো ফোসকা পড়া দাগ দেখা যায় ও পরে পাতা আগা থেকে শুকিয়ে আসে। করণীয় কী?
উত্তর : এটা ধানের ব্লাস্ট রোগ এর লক্ষণ। এ রোগ ধান গাছের তিনটি অংশে আক্রমণ করে যথা-পাতা, কা- ও শিষে।
প্রতিকার : ১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাত ব্যবহার করা। যথা- বি আর ১৫, ১৬, ২৩, ২৫ ও ব্রি ধান ২৮, ৩৩।
২. বীজতলা বা জমিতে পানি ধরে রাখা।
৩. সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা। আক্রান্ত জমিতে ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ বন্ধ রাখা।
৪. রোগমুক্ত জমি থেকে বীজ সংগ্রহ করা।
৫. রোগ দেখা দিলে ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা। যথা- প্রতি হেক্টরে ৪০০ গ্রাম ট্রুপার, জিল বা নেটিভো ১০ থেকে ১৫ দিনের ব্যবধানে দুইবার প্রয়োগ করা।
মো. মনিরুজ্জামান
সাঁথিয়া, পাবনা
প্রশ্ন : পুঁইশাকের পাতায় বাদামি বা লালচে রঙের ছোট ছোট দাগ দেখা যায়। কী করতে হবে?
উত্তর : আপনার পুঁইশাকের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে হলে যা করতে হবে তাহলো-
● আক্রান্ত পাতাগুলো তুলে নষ্ট বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
● রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাতের চাষ করা।
● সুষম সার ব্যবহার ও পরিমিত সেচ প্রদান করা।
● রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে কার্বন ডাজিম (ব্যাভিস্টিন বা নোইন) ১ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মো. রাজীব
যশোর
প্রশ্ন : ঘেরের প্রস্তুতপ্রণালি সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : ঘের শুকিয়ে তলদেশের পচা কাদা অপসারণ এবং তলদেশ সমান করতে হবে। পাড় উঁচু করে বাঁধতে হবে। সূর্যকে বাধাগ্রস্ত করে এমন ডালপালা রাখা যাবে না। ঘেরের পাড়সহ তলায় চুন ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে প্রতি শতকে ১ কেজি হারে। ঘেরের তলদেশ চাষ দিয়ে আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। ছোট মেসসাইজের নাইলন জাল দিয়ে ঘেরের চারপাশে বেড়া (৩ ফুট উঁচু) দিতে হবে। পানি প্রবেশ পথ ও জরুরি পানি নির্গমন পথ করতে হবে এবং তাতে স্ক্রিন বা বানা (বাঁশের পাটা ও নাইলনের জাল দিয়ে তৈরি) দিতে হবে। চুন প্রয়োগের ৫ থেকে ৭ দিন পরে প্রয়োজনমতো পানি প্রবেশ করিয়ে ইউরিয়া ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম/শতক, টিএসপি ৭৫ থেকে ১০০ গ্রাম/শতক হারে প্রয়োগ করতে হবে। এরপর ব্লিচিং পাউডার সব ঘেরে ছিটিয়ে দিয়ে পানি জীবাণুমুক্ত করতে হবে। অনেক সময় ঘেরের এককোণায় বাঁশের ফ্রেমের সাথে একটি নার্সারি তৈরি করতে বলা হয়। হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা বা গোবর ব্যবহার করা যাবে না।
মো. জামাল হোসেন
নোয়াখালী
প্রশ্ন : পুকুরে রেণু ছেড়ে পোনা মাছের চাষ কীভাবে করব?
উত্তর : রেণু পোনা চাষের জন্য তুলনামূলক ছোট পুকুর শনাক্ত করতে হবে। ১০ থেকে ২০ শতকের সাইজের ৪ থেকে ৫ টি পুকুর করতে হবে। পুকুর উত্তমরূপে প্রস্তুত করে নিতে হবে। পুকুর ভালোভাবে পরিষ্কার করে এবং সম্ভব হলে পুকুর শুকিয়ে ফেলে প্রতি শতকে ১ কেজি চুন দিতে হবে। এরপর নতুন পানি দিতে হবে। রেণু ছাড়ার আসে কীটনাশক দিয়ে পুকুরের পানিতে বিভিন্ন রকম পোকামাকড় ও ব্যাঙাচি থাকলে মেরে ফেলতে হবে। প্রতি শতকে ২০ থেকে ৩০ গ্রাম হারে রেণু পোনা ছাড়তে হবে। নিয়মিত সুষম খাবার দিতে হবে।
সোহেল রানা
শেরপুর
প্রশ্ন : পুকুরে রেণু পোনা চাষের সমস্যাগুলো কী কি? তাদের প্রতিকার কী?
উত্তর : নার্সারি পুকুরে সার প্রয়োগের পর সাধারণত হাঁসপোকা, ব্যাঙাচি ও অন্যান্য প্রাণী জন্ম নেয়। এরা মাছের রেণু খেয়ে ফেলে। অনেক সময় পুকুরে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে এবং বিভিন্ন রোগ জীবাণুর আক্রমণে রেণু মারা যেতে পারে।
এক বিঘা জমির পুকুরের জন্য সুমিথিয়ন ৫০ মিলি. বা ডিপটেরাস ১ কেজি পানিতে মিশ্রিত করে সব পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। পরিমাণমতো ডিজেল রেণু ছাড়ার আসে পুকুরে প্রয়োগ করলে হাঁসপোকা দমন করা যায়।
হোসেন মাহমুদ
দিনাজপুর
প্রশ্ন : গরুর গা খসখসে এবং ঘা হচ্ছে। কী করণীয়?
উত্তর : ইনজেকশন ভারমিক (Vermic) প্রতি ২৫ কেজি গরুর দেহের ওজনের জন্য ১ সিসি. ১ বার চামড়ার নিচে পুশ করতে হবে। যদি বেশি হয় তাহলে ৭ দিন পর বুস্টার ডোজ আরও ১ বার দিতে হবে।
-ইনজেকশন অ্যাসটাভেট (Astavet) ১০০ কেজি গরুর দেহের ওজনের জন্য ৫ সিসি. করে দৈনিক ১ বার ৩ থেকে ৫ দিন মাংসে পুশ করতে হবে।
-ইনজেকশন অ্যামক্সিভেট (Amoxcyvet) ১ ভায়েল করে রোজ ১ বার ৩ দিন মাংসে পুশ করতে হবে।
আমানুল্লাহ
চট্টগ্রাম
প্রশ্ন : কবুতর ঝিমোচ্ছে, ঘুরে ঘুরে পড়ে যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : ট্যাব. রেনামাইসিন ৫০০ মিলিগ্রাম (Tab. Renamycin 500 mg.) অর্ধেক ট্যাবলেট গুঁড়া করে আধা লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে অসুস্থগুলোকে আলাদা করে খেতে দিতে হবে। বাকি দ্রবণ সুস্থগুলোকে খাওয়াতে হবে।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ২ থেকে ৩ ফোঁটা খাওয়ার পানির সঙ্গে মিশিয়ে ৫ থেকে ৭ দিন খাওয়াতে হবে।
সাগর
ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন : গরুর খাদ্য হিসেবে ইউ.এম.এস-এর অনুপাত কত?
উত্তর : খড় ৫ কেজি
মোলাসেস ১০৫ থেকে ১২০ গ্রাম
ইউরিয়া ১৫ গ্রাম
পানি ২.৫ থেকে ৩.৫ লিটার ভালোভাবে মিশিয়ে গরুকে খাওয়াতে হবে। অনুপাতের কম বেশি করা যাবে না।
সোহাগ
নওগাঁ
প্রশ্ন : বাছুরকে কত মাসে টিকা দিতে হয়?
উত্তর : বাছুরের বয়স অনুযায়ী যেসব টিকা দিতে হয় তাহলো-
৪৫ দিন ক্ষরারোগ
৪ মাস ক্ষুরারোগ
৬ মাস বাদলা
৬ মাস ২১ দিন তড়কা
৭ মাস ১৪ দিন গলাফুলা
৮ মাস ৭ দিন প্লেগ
১০ মাস ক্ষুরা রোগ।
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মারুফ*
* কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫