Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর (আশ্বিন-১৪২৬)

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো: বাবুলু শেখ, গ্রাম: লাউযুথি, উপজেলা: ঠাকুরগাঁও সদর, জেলা: ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন: কুমড়া গাছের পাতায় এক ধরনের পোকার আক্রমণ হয়েছে। এ পোকা পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলছে এবং পাতার শিরাগুলো শুধু বাদ দেয়। কী করব?
উত্তর:  কুমড়া গাছের পাতায় কুমড়ার কাঁঠালে পোকা আক্রমণ করলে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এ পোকার আক্রমণে আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে যায়। সে কারণে সব সময় ক্ষেত পরিষ্কার রাখা দরকার। এছাড়া পোকার আক্রমণ কম হলে পোকা সংগ্রহ করে দমন করা যেতে পারে। তবে পোকার আক্রমণ বেশি হলে অর্থাৎ পোকার আক্রমণে শতকরা ১০ ভাগ পাতা পোকা দ্বারা আক্রান্ত হলে প্রতি লিটার পানিতে ফেনপ্রোপাথ্রিন গ্রুপের যেমন ডেনিটল ১০ ইসি ১ মিলি অথবা কার্বারিল গ্রুপের যেমন সেভিন ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিকভাবে স্প্রে করলে উপকার পাবেন।
মোছা: রহিমা বেগম রহমান, গ্রাম: সরফরাজপুর, উপজেলা:  চৌগাছা, জেলা: যশোর
প্রশ্ন: আখের উঁইপোকা দমনে কী করণীয়? জানাবেন।
উত্তর:  আখের জমিতে উইপোকা দমনের জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। সেগুলো হলো-মুড়ি আখ চাষ না করা, আক্রান্ত জমি পানিতে ডুবিয়ে রাখা, জমির মাঝে মাঝে উঁইপোকা ধরার ফাঁদ তৈরি করে রেখে পোকা ধ্বংস করা। উঁইপোকার আক্রমণ যদি বছর বছর হয়ে থাকে তবে হেক্টরপ্রতি ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের যেমন ডার্সবান ১১.২৫ লিটার ব্যবহার করা। এ ধরনের পদক্ষেপ নিলে আখের উঁইপোকার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
মো. জহুরুল ইসলাম, গ্রাম: তৈলটুপি, উপজেলা: হরিণাকু-ু, জেলা: ঝিনাইদহ
প্রশ্ন: তুলা গাছের তুলার বোল বা গুটি ছিদ্র করে এক ধরনের পোকার আক্রমণ হয়েছে। এ সমস্যার সমাধান জানাবেন।  
উত্তর: তুলার বোলে এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে তুলার গোলাপি গুটি পোকা। এ পোকার আক্রমণ কম থাকলে আক্রান্ত জমির তুলা সংগ্রহের পর তুলাগাছ গোড়াসহ উঠিয়ে পুড়ে ফেলতে হবে। কিন্তু পোকার আক্রমণ যদি বেশি হয়ে থাকে তবে সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের যে কোন কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।    
মো: আসগর আলী, গ্রাম: বামনডাঙ্গা, উপজেলা: আশাশুনি, জেলা: সাতক্ষীরা
প্রশ্ন: বেগুনের ঢলে পড়া রোগ দমনের পরামর্শ চাই।
উত্তর:  বেগুনের ঢলে পড়া রোগ হলে আক্রান্ত গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। এ রোগে বেগুন গাছের এক প্রান্ত ঢলে পড়ে এবং পরবর্তীতে সম্পূর্ণ গাছটি ঢলে পড়ে ও মারা যায়। এ সমস্যা রোধে বেগুন গাছের জমিতে শস্য পর্যায় অবলম্বন করা দরকার। দুই একটি গাছ এ অবস্থায় দেখা দিলে তা তুলে ফেলে গর্তে পুঁতে রাখা দরকার। পরবর্তীতে কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন নোইন দ্বারা বীজ শোধন করলে এ রোগ কম হবে। এছাড়া জমি চাষের আগে প্রতি শতক জমিতে ১ থেকে ২ কেজি ডলোচুন ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। আর যদি রাসায়নিকভাবে দমনের প্রয়োজন হয় তবে আক্রান্ত গাছে কপারহাইড্রক্সাইড গ্রুপের যেমন চ্যাম্পিয়ন ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যাবে।   
মো.  রবিন মিয়া, গ্রাম: পিরোজপুর, উপজেলা: মেহেরপুর সদর, জেলা: মেহেরপুর
প্রশ্ন:  পান গাছে এক ধরনের কালো মাছি পোকা আক্রমণ করেছে। এ অবস্থায় কী করণীয়?
উত্তর: পান গাছের কালো মাছি পোকা পূর্ণ বয়স্ক ও কীড়া উভয় অবস্থায় ক্ষতি করে থাকে। পান পাতার রস চুষে খায় এবং পাতা হালকা বাদমি রঙের হয়। সেজন্য পোকার আক্রমণ হলে আক্রান্ত পাতা ধ্বংস করা দরকার। পানের বরজ ও আশপাশ পরিষ্কার রাখাও জরুরি। কিন্তু পোকার আক্রমণ বেশি হলে টলস্টার ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিকভাবে স্প্রে করলে এ পোকা দমন করা সহজ হবে।  
মো. খাইরুল আলম, গ্রাম: এলাইগা,  উপজেলা: পীরগঞ্জ, জেলা: ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন: আমার নারকেল গাছের নারকেলের ভেতরে পানি বা শাঁস থাকে না। কখনও পানি থাকে কিন্তু শাঁস থাকে না। কী করব জানাবেন।  
উত্তর:  নারকেলের এ সমস্যাটিকে বন্ধ্যা বা চিটা নারকেল বলে। এ সমস্যার প্রতিকারে প্রতি গাছে ৫০ গ্রাম বরিক এসিড ও এমোনিয়াম মলিবডেট গাছে প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যায়। তাছাড়া সুষম সার ব্যবহার করাও দরকার। এসব ব্যবস্থা নিলে অবশ্যই আপনি উপকার পাবেন।
মো: মাহবুব আলী, গ্রাম : সাকোয়া, উপজেলা : বোদা, জেলা : পঞ্চগড়
প্রশ্ন : আমার কচুক্ষেতে কুচ গাছের পাতায় শুকনো দাগ পড়ে এবং ফসলের ফলন কমে যায়। কি করবো জানাবেন।
উত্তর : কচুর পাতার এ সমস্যাকে পাতায় দাগপড়া বা লিফস্পট রোগ বলে। এটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগের আক্রমণে কচু পাতায় শুকনো ছোট ও মাঝারি আকারের দাগ দেখা যায়। রোগের আক্রমণ বেশি হলে পুরো গাছটাই পুড়ে যায়। ফলে ফসলের ফলন কমে যায়। এ রোগ দমনের জন্য রোগমুক্ত স্থান হতে সুস্থ-সবল চারা বা করম সংগ্রহ করা দরকার। এছাড়া জমিতে রোগ বেশি দেখা দিলে প্রপিকানাজল গ্রুপের যেমন টিল্ট ০.৫ মিলি প্রতিলিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা সম্ভব হবে। পরিষ্কার চাষাবাদ ও শস্য পর্যায় অবলম্বন করেও এ রোগ কমানো সম্ভব।
মৎস্য বিষয়ক
(মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশ্ন কৃষি কল সেন্টার হতে প্রাপ্ত)
মো: আমিনুল ইসলাম, গ্রাম: শরীফ সুন্দর, উপজেলা: পীরগাছা, জেলা: রংপুর
প্রশ্ন: অতি গরমে মাছ মারা যাচ্ছে কী করব?
উত্তর:  পানি কম হওয়াতে এ সমস্যা হয়। কারণ তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় মাছ দুর্বল হয়ে মারা যায়। এজন্য পানির পরমিাণ বাড়াতে হবে অর্থাৎ সেচে মাধ্যমে দিনে পানি ২ থেকে ৩ বার ঢুকাতে হবে। এ ব্যবস্থা নিলে উপকার পাবেন।   
মো: ওয়াহিদুর রহমান, গ্রাম: সুরগ্রাম উপজেলা: গোপালগঞ্জ সদর, জেলা: গোপালগঞ্জ
প্রশ্ন: চিংড়ির ফুলকা পচা রোগ হয়েছে। কী করব?  
উত্তর: চিংড়ি ঘেরের তলার পচা কাদা মাটি উঠিয়ে ফেলতে হবে। জিওলাইট ব্যবহার করতে হবে। প্রতি ২ মাস অন্তর অক্সিফ্লো ৫০ গ্রাম প্রতি বিঘা প্রয়োগ করতে হবে। এসব ব্যবস্থা নিলে আপনি উপকৃত হবেন।   
প্রাণিসম্পদ বিষয়ক
মিজানুর রহমান, গ্রাম: ফুলগাছ, উপজেলা: লালমনিরহাট সদর, জেলা: লালমনিরহাট
প্রশ্ন: আমার টার্কির বয়স ৪ সপ্তাহ। অতিরিক্ত জ্বর, সাদাটে চুনের মতো ডায়রিয়া হচ্ছে। ঝিমাচ্ছে। কী করব?
উত্তর: এ রোগের নাম গামবোরো। এটি ভাইরাসজনিত রোগ যার নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই। তবে যেহেতু গামবোরো রোগের ফলে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং অন্যান্য রোগের সংক্রমণ খুব সহজেই হয়, তাই নি¤œলিখিত ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। সিপ্রোফ্লক্সাসিন ১ মিলি প্রতি লিটার খাবার পানিতে বা এমাক্সিলিন ১ গ্রাম ২ লিটার খাবার পানিতে এবং ভিটামিন সি ১ গ্রাম ৩ লিটার খাবার পানিতে মিশিয়ে খাওয়ালে সুফল পাবেন।       
রাজু রায়হান, গ্রাম: বাঘাবাড়ি, উপজেলা: শাহজাদপুর, জেলা: সিরাজগঞ্জ
প্রশ্ন: আমার ভেড়া দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। ভেড়ার পেট বড় হয়ে যাচ্ছে। চোয়ালের নিচে থলের মতো তরল পদার্থ জমে আছে। এমতাবস্থায় কী করণীয় ?
উত্তর: আপনার এ সমস্যা রোধে ফেসিমেক্স বা ফেসিনিল বা ফ্লুকোনিল যে কোন একটি ট্যাবলেটের অর্ধেক ১ দিন খাওয়াতে হবে। তাহলেই আপনি উপকৃত হবেন।

কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন

উপপ্রধান তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫, মোবাইল ০১৭১১১১৬০৩২, ই-মেইল :taufiquedae25@gmail.com