Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কবিতা (অগ্রহায়ণ- ১৪২৭)

ভাসমান কৃষি কৌশল        

ড. মোঃ আলতাফ হোসেন১

পানির উপরে ভাসমান কৃষি দেখতেই লাগে বেশ
আর সেই কৌশলটিই এখন জানিয়ে দিব সমগ্র দেশ।

দেশের অনেক এলাকাই দীর্ঘ সময় থাকে পানিতে নিমজ্জিত
তাই জন্য সেখানে মাটিতে কৃষি উৎপাদন করা যায় না ঠিকমতো।

ভাসমান কৃষি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় হাওড় ও উপক‚লবর্তী এলাকায়
বরিশাল, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলায়।

দৃষ্টিনন্দন এই কৃষি কাজ কিভাবে সেখানে করে
এই লেখায় সেই কৌশলটিই- ধরছি আমি  তুলে।

সাধারণত কচুরীপানা দিয়ে তৈরি করা হয়- “ভাসমান প্লাটফর্ম”
এর উপরে ছড়িয়ে দেয়া হয়, টোপাপানাসহ বিভিন্ন ঘাসের আবরণ।

বাঁশের ব্যবহারে প্লাটফর্ম হয় শক্ত, বৃদ্ধি পায় এর স্থায়িত্ব
অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সুবিধাসহ টেকসইও হয় এর অস্তিত্ব।

ভাসমান এই প্লাটফর্মকে বলা হয়- বাইরা গেটো, ধাপ ও বেড
কখনো এটি ব্যবহার হয় সীডবেড অথবা কৃষির ভাসমান ক্ষেত।

জলজ আগাছা ও খুদিপানা দিয়ে তৈরি করা হয়, ছোট বলাকৃতির মাদা
মাদার মধ্যে দেয়া হয় পচা টোপাপানা ও কাঠের গুঁড়া- যেন ভেজা কাদা।

অঙ্কুরিত সবজি বীজ মাদায় বপন করে বেডে তৈরি করা হয় চারা
আর চারা তৈরি করেই বেডের কাজটি হয়ে যায় না কখনোই সারা।

চারার মধ্যে অন্যতম কুমড়া জাতীয় সবজি, টমেটো, মরিচ, শিম, কপি ও বেগুন
আগাম চারা বিক্রয় করে কৃষক পেয়ে থাকেন স্বাভাবিকের চেয়ে দাম “কয়েক গুণ”।

চারা উৎপাদন ছাড়ার ও ভাসমান বেড ব্যবহৃত হয়, সবজি ও মসলা ফসল চাষে
হাওড় ও উপক‚লীয় এলাকায় বিভিন্ন সবজি ও মসলা ফসল এখান থেকেই আসে।

ভাসমান সবজি উৎপাদনে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন নাহি লাগে
তবুও সবজিগুলো বেড়ে উঠে  মাটিতে জন্মানো সবজির তুলনায় আগে।

প্রায় ১০ গুণ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় ভাসমান বেডে সবজির চাষে
মাটিতে চাষের তুলনায় শতকরা ৩৫-৫০ ভাগ উৎপাদন খরচও কমে আসে।

দীর্ঘ সময় যেখানে জলাবদ্ধ থাকে, করা যায় না কোন চাষাবাদ
ভাসমান কৃষি কৌশলের ব্যবহার সেখানে কৃষির জন্য হয় আশির্বাদ।

কচুরীপানা ভর্তি জলাবদ্ধ এলাকায় ভাসমান কৃষি কৌশল বাস্তবায়নে
বাড়তি লাভ হবে মাছ চাষে ও মশা নিধনে যা অবদান রাখবে দারিদ্র্য দূরীকরণে।

পরিবেশবান্ধব কৃষির অন্যতম প্রধান নাম “ভাসমান কৃষি”
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় যা ভূমিকা রাখছে দিবানিশি।

 

হেমন্তের নবান্ন পর্ব

মো: জুন্নুন আলী প্রামাণিক২

ঘাসের শেষে মাসের দেখা অগ্রহায়ণ যেমন,
ঋতুর পরে ঋতুর চক্র হেমন্তঋতু তেমন।

যুগের সেরা ধানের চাষে ফলনভারে ওজন,
চাষীর ঘরে, আনন্দ করে নিকটতম স্বজন।

নবান্ন পর্বে সুবাস উড়ে আয়োজনের সাজন,
আপন পর বিভেদ ভুলে আত্মীয়তার বাঁধন।

শুধুই দুধে খেজুর গুড় আতপচাল চিকন,
মিষ্টান্ন তৈরী মধুর স্বাদে খুশিমতন রাধন।

পিয়াজ কাটে মরিচ বাটে চঞ্চলতায় নয়ন,
ক্ষেতের শ্রেষ্ঠ সবজি শাক আশানুরূপ চয়ন।

গোশত মাছ বিশুদ্ধ পানি তালিকাভুক্ত রাখেন,
বিচিত্র পাকে গৃহিনী নিজে ব্যস্তমুখর থাকেন।

দিনের সূর্য বিদায় নিলে তাঁরকাভরা গগন,
নতুন খাদ্যে ভরিয়ে যায় তরুলতার ভুবন।

হরেক পিঠা বানায় যতেœ মন ভোলানো গঠন,
ঐতিহ্যে শ্রদ্ধা স্বাগত জানে নতুনত্বের বরণ।

আনন্দ ফোটে নির্মল মনে শুভেচ্ছাবাণী জ্ঞাপন,
বিভেদ ভুলে সবাই মিলে পাড়াপড়শি আপন।

গর্বের প্রথা ফিরিয়ে হাসে শুকতাঁরার মতন,
সবার মুখে খাবার তালে প্রশংসার বচন।

নিয়মে আসে বছর ঘুরে বাংলামাস অঘ্রান,
চাষীর বাড়ী ঐশ্বর্যে ভরে রান্নাবান্নার সুঘ্রাণ।

শ্রমের কষ্ট ভুলিয়ে দেয় সার্থকতায় জীবন,
ঘুমের ঘোরে কৃষক দেখে কৃষিকাজের স্বপন।

বনের পাখি সকালে ডাকে নিত্যনতুন কুজন,
তাদের কণ্ঠে ফুটিয়ে উঠে কৃষকবৃন্দ সুজন।


১প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, কীটতত্ত¡ বিভাগ, ডাল গবেষণা কেন্দ্র, বারি, ঈশ্বরদী, পাবনা, মোবাইল : ০১৭২৫-০৩৪৫৯৫ ই-মেইল :  hossain.draltaf @gmail.com, ২গ্রাম: বিদ্যাবাগীশ, ডাকঘর ও উপজেলা : ফুলবাড়ী, জেলা : কুড়িগ্রাম, মোবাইল : ০১৭৩৫২০২৭৯৮