Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

অগ্রহায়ণ মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা

অগ্রহায়ণ মাসের তথ্য ও প্রযুক্তি পাতা
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
আমন ধান
    আমন ধান পেকে গেলে রোদেলা দিন দেখে রিপার/কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে কম খরচে, স্বল্প সময়ে ধান সংগ্রহ করুন।
    ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকায় আমন ধান শতকরা ৮০ ভাগ পাকলে দ্রুত সংগ্রহ করুন।
    আমন ধান কাটার পরপরই জমি চাষ দিয়ে রাখুন, এতে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে মাটির রস কম শুকাবে।
    উপকূলীয় এলাকায় রোপা আমন কাটার আগে রিলে ফসল হিসেবে খেসারি আবাদ করুন।
বোরো ধান
    বোরো ধানের বীজতলা তৈরির জন্য রোদ পড়ে এমন উর্বর ও সেচ সুবিধাযুক্ত জমি নির্বাচন করে চাষের আগে প্রতি বর্গমিটার জায়গার জন্য ২-৩ কেজি জৈবসার দিয়ে ভালোভাবে জমি তৈরি করুন।
    পানি দিয়ে জমি থকথকে কাদা করে এক মিটার চওড়া এবং জমির দৈর্ঘ্য অনুসারে লম্বা করে ভেজা বীজতলা তৈরি করুন।
    যেখানে ঠা-ার প্রকোপ বেশি সেখানে শুকনো বীজতলা তৈরি করুন। এক্ষেত্রে প্রতি দুই প্লটের মাঝে ২৫-৩০ সেমি. নালা রাখুন।
    রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চাষের জন্য ট্রেতে চারা তৈরি করুন।
    সেচের পানির ঘাটতি থাকে এমন এলাকায় আগাম জাত হিসেবে ব্রি ধান৬৭ এবং ব্রি ধান৬৮, ব্রি ধান৭৪, ব্রি ধান৮১, ব্রি ধান ৮৪ ও ব্রি ধান৮৬, ব্রি ধান৮৮, বিনাধান২৪, এসএল৮এইচ প্রভৃতি চাষ করুন।
    উর্বর জমি ও পানি ঘাটতি নাই এমন এলাকায় ব্রি ধান২৯, ব্রি ধান৫০, ব্রি ধান৬০, ব্রি ধান৬৮, ব্রি ধান৭৪, ব্রি ধান৮৯, ব্রি ধান৯২, ব্রি ধান ৯৭, ব্রি ধান৯৯, বঙ্গবন্ধু ধান১০০, ব্রি ধান১০১, ব্রি ধান১০২, ব্রি হাইব্রিড ধান১, ব্রি হাইব্রিড ধান২ ও ব্রি হাইব্রিড ধান৩, ব্রি হাইব্রিড ধান৫ এসব চাষ করুন।
    হাওর অঞ্চলের নিচু এলাকায় ব্রি ধান৬৭ চাষ করুন।
    লবণাক্ত এলাকায় ব্রি ধান৬৭, ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৯, বিনাধান-১০ চাষ করুন।
গম
    অগ্রহায়ণের শুরু থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ পর্যন্ত গম বোনার উপযুক্ত সময়। এরপর গম যত দেরিতে বপন করা হবে ফলনও সে হারে কমে যাবে।  
    অধিক ফলনের জন্য গমের আধুনিক জাত যেমন- বারি গম-২৪, বারি গম-২৫, বারি গম-২৮, বারি গম-৩০, বারি গম-৩২, বারি গম-৩৩ অথবা ডাব্লিউএমআরআই গম-১, ডাব্লিউএমআরআই গম-২, ডাব্লিউএমআরআই গম-৩ আবাদ করুন।  
    বীজ বপনের আগে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক দ্বারা বীজ শোধন করে নিন।
    গজানোর ক্ষমতা শতকরা ৮০ ভাগ বা তার বেশি হলে বিঘাপ্রতি ১৬ কেজি বীজ বপন করুন।
    সেচসহ চাষের ক্ষেত্রে শেষ চাষের সময় প্রতি শতক জমিতে ৩০-৪০ কেজি জৈবসার, ৬০০-৭০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫৫০-৬০০ গ্রাম টিএসপি, ৪০০-৪৫০ গ্রাম এমওপি, ৪৫০-৫০০ গ্রাম জিপসাম প্রয়োগ করুন।
    খরচ ও সময় কমাতে বেড প্লান্টারের মাধ্যমে বীজ বপন করুন।
    তিন পাতা বয়সে প্রথম সেচের পর দুপুর বেলা মাটি ভেজা থাকা অবস্থায় প্রতি শতাংশে ৩০০-৪০০ গ্রাম ইউরিয়া উপরিপ্রয়োগ করুন। উল্লেখ্য যে, সেচ ছাড়া চাষের ক্ষেত্রে সমস্ত ইউরিয়া শেষ চাষের সময় অন্যান্য সারের সাথে প্রয়োগ করতে হবে।
    গমে তিনবার সেচ দিলে ফলন বেশি পাওয়া যায়। বীজ বপনের ১৭-২১ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ, ৫০-৫৫ দিনে দ্বিতীয় সেচ এবং ৭৫-৮০ দিনে ৩য় সেচ দিন।
ভুট্টা
    ভুট্টা গত মাসে আবাদ না করে থাকলে এ মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জমি তৈরি করে বীজ বপন করুন।
    ভুট্টার উন্নত জাতগুলো হলো বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৭, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৯, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১০, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১১, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১২, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩ এসব।
    এক শতাংশ জমিতে হাইব্রিড বীজ বপনের জন্য ৮০-৯০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়।
    সাধারণভাবে হাইব্রিড ভুট্টা চাষের জন্য প্রতি শতাংশ জমিতে ইউরিয়া ২-২.২৫ কেজি, টিএসপি ৯৫০-১০০০ গ্রাম, এমওপি ৭০০-৯০০ গ্রাম, জিপসাম ৯৫০-১০০০ গ্রাম, দস্তা ৪০-৬০ গ্রাম, বরিক এসিড ২০-৩০ গ্রাম এবং ১৬-২০ কেজি জৈবসার প্রয়োগ করুন।
সরিষা ও অন্যান্য তেল ফসল
    সরিষা গাছে ফুল আসার সময় শতাংশপ্রতি ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করুন। উপরি সার প্রয়োগের পর হালকা একটি সেচ দিন।
    মাটিতে রস কমে গেলে ২০-২৫ দিন পর আবারো একটি সেচ দিন।
আলু
    উপকূলীয় অঞ্চলে এ মাসেও আলু আবাদ শুরু করা যায়।
    অন্যান্য স্থানে রোপণকৃত জমিতে মাটির কেইল বেঁধে দিন এবং কেইলে মাটি তুলে দিন।
    সারের উপরিপ্রয়োগসহ প্রয়োজনীয় সেচ দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করুন।
শাকসবজি
    ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, শালগম, মুলা এসব বড় হওয়ার সাথে সাথে চারার গোড়ায় মাটি তুলে দিতে হবে। চারার বয়স ২-৩ সপ্তাহ হলে সারের উপরিপ্রয়োগ করুন।
    সবজি ক্ষেতের আগাছা, রোগ ও পোকা-মাকড় নিয়ন্ত্রণ করুন। এক্ষেত্রে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করতে পারেন। এতে পোকা দমনের সাথে সাথে পরিবেশও ভালো থাকবে।
    জমিতে প্রয়োজনে সেচ প্রদান করুন।
    টমেটো গাছের অতিরিক্ত ডাল ভেঙে দিয়ে খুটির সাথে বেঁধে দিন।
    ঘেরের বেড়িবাঁধে টমেটো, মিষ্টিকুমড়া, শিম চাষ করুন।
বিবিধ
    অধিক লাভবান হতে উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন ।
    স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
    শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।

লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল :manzur_1980@yahoo.com