পুষ্টি নিরাপত্তায় এবং শিল্প
সম্ভাবনায় ভুট্টা ফসল
কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ মোবারক হোসেন
ভুট্টা ভারি মজার ফসল, সারা বছর ফলে;
নিজের খাবার, প্রাণীর খাবার, জ¦ালানিও মেলে।
ধানের পরে ভুট্টা বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও পুষ্টিকর খাদ্যশস্য। প্রতি ১০০ গ্রাম পরিপক্ব ভুট্টার বীজে ৯.৪ গ্রাম প্রোটিন, ৭৪.৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ০.৬৫ গ্রাম চিনি, ৭.৩ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার ও ৩৬৫ কিলোক্যালরি শক্তি রয়েছে। ভুট্টা এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় এবং উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন, এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া ভুট্টা কিডনির কার্যকারিতা এবং হাড়ের স্বাস্থ্য বাড়াতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে । এসব স্বাস্থ্য উপকারিতা দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। বর্তমানে বাংলাদেশে ভুট্টার বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭০ লাখ টন, কিন্তু উৎপাদন মাত্র ১২ লাখ। যা চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে একটি বড় ব্যবধান। প্রতি বছর দেশে ৮ থেকে ১০ লাখ টন হারে ভুট্টার চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা মেটাতে ভুট্টার বীজ এবং মানব ও প্রাণী খাদ্যসামগ্রীসহ শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হচ্ছে।
ভুট্টা চাষের মোট আয় বোরো ধানের চেয়ে আড়াই থেকে তিন গুণ বেশি । তাছাড়া গম ও অন্যান্য শীতকালীন ফসলের তুলনায় এর চাষে কম পানির প্রয়োজন, পরিবেশবান্ধব, উচ্চ পুষ্টিমান, বৈচিত্র্যময় ব্যবহার ইত্যাদি সুবিধা আছে। উপরন্তু বাংলাদেশের আবহাওয়া ভুট্টা উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ভুট্টার ব্যাপক জিনগত পরিবর্তনশীলতার জন্য বাংলাদেশের যেকোনো পরিবেশে সফলভাবে ফলানো যায় । এটি রবি, খরিফ উভয় মৌসুমে চাষ করে বেশ ভালো ফলন পাওয়া যায়। এই বিবেচনায় ভুট্টা বাংলাদেশের শস্য বৈচিত্র্যের জন্য সর্বোত্তম বিকল্প হবে।
বাংলাদেশে ভুট্টা চাষের সম্ভাবনা
বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভুট্টা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল এবং ভুট্টা চাষের এক অসাধারণ সম্ভাবনা রয়েছে। ভুট্টা উৎপাদনের যুক্তিসঙ্গত কারণগুলো হলো :
া সম্প্রতি দেশে পোলট্রি, মৎস্য ও গবাদি পশু শিল্পের সংখ্যা বার্ষিক ২০% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে যার প্রধান কাঁচামাল হলো ভুট্টা। ফলে দিন দিন ভুট্টার চাহিদা বাড়ছে।
া শীতকালীন ভুট্টা চাষের মোট আয় বোরো ধানের চেয়ে আড়াই থেকে তিন গুণ বেশি । আবার গ্রীষ্মকালীন ভুট্টার আর্থিক আয় আউশ ধানের তুলনায় দশ গুণ বেশি লাভজনক। দেশে ভুট্টা উৎপাদনে গড় নিট আয় ৩২,৩৯৯ টাকা/ একর এবং লাভ-ব্যয়ের অনুপাত দুই শতাংশের বেশি। ভুট্টার নিট আয় মুগডাল ও সূর্যমুখীর তুলনায়ও অনেক বেশি।
া দেশের জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ ভালোভাবে নিষ্কাশিত, গভীর মাটি ভুট্টা চাষের জন্য ভালো। বিস্তৃত পতিত জমিতে এমনকি মাঝারি অ্যাসিডযুক্ত মাটিতেও সফলভাবে জন্মায়। উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকা, চর এলাকা, পার্বত্য এলাকাতেও এটি চাষ করা যায়। ভুট্টা চাষের জন্য ন্যূনতম দৈনিক তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস যথেষ্ট। তাই শীত ও গ্রীষ্ম উভয় মৌসুমেই ভুট্টা চাষ করা যেতে পারে ।
া দেশীয় উপকরণ ব্যবহার করে সহজেই ভুট্টা চাষ করা যায় বিধায় উৎপাদন খরচ কম হয়। তাই ভুট্টা উৎপাদন আমদানির তুলনায় তুলনামূলক লাভজনক।
া উচ্চ চাহিদা, উচ্চফলন, উচ্চ মুনাফা, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপখাইয়ে নেওয়ার সুবিধা রয়েছে ভুট্টা চাষে। এছাড়াও বপন থেকে শুরু করে ফসল তোলা পর্যন্ত সমস্ত কার্যক্রম যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে করা যায় বলে প্রতিকূল জলবায়ুর সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকি এড়ানো যায়, শ্রম এবং চাষের ব্যয় সাশ্রয় করে।
া ভুট্টাকে সহজেই তিন বা চার ফসলি শস্যবিন্যাসে ফিট করা যায় বিধায় শস্য বৈচিত্র্যতা বৃদ্ধিতে এক অনন্য ফসল।
া শূন্য চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে চাষ করলেও ভ্ট্টুা বেশ ভালো ফলন দিতে সক্ষম। এই ব্যবস্থায় বপনের সময়কে এগিয়ে আনা যায়, সেচ, জ্বালানি সাশ্রয় করে, চাষের ব্যয় হ্রাস করে লাভ বাড়ায়, মাটির স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং মাটির ক্ষয় হ্রাস করে।
ভুট্টা উৎপাদনের বর্তমান পরিস্থিতি
১৯৭০-৮০-এর দশকে বাংলাদেশে ভুট্টার স্থানীয় বিপণন এবং ব্যবহার খুবই কম থাকায় মাত্র কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হত। ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে মধ্য, উত্তর এবং দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের কয়েকটি নির্বাচিত অঞ্চলে হাইব্রিড ভুট্টা প্রবর্তনের পরেই এর আবাদ বাড়তে থাকে। ২০০৪ সালে বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৫ জাতের মুক্তির পর, উৎপাদন এবং ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ২০১০ সালে মোট ২.২৭ লাখ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছিল। উৎপাদন এবং ব্যবহার ছিল যথাক্রমে ১৫.৫ এবং ২৩.০ লাখ টন। চাহিদা মেটাতে অতিরিক্ত ৭.৫১ লাখ টন ভুট্টা আমদানি করা হয়েছিল। ২০২৩ সালে ব্যবহার ২১৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে যার পরিমাণ ৭২.৫ লাখ টন । একই সময়ে আয়তন এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭০ ভাগ যা যথাক্রমে ৫.৭০ লাখ হেক্টর এবং ৪৯.৫ লাখ টন এবং আমদানি হয়েছে ২৩.০ লাখ টন যা ২০১০ সালের তুলনায় ২০৭ ভাগ বেশি। দেশের পোলট্রি, মৎস্য ও গবাদি পশু শিল্পগুলোতে ভ্ট্টুাজাত খাদ্য চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালে ব্যবহৃত ভুট্টাজাত খাদ্য ব্যবহারের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ লাখ টনে, যা ২০১০ সালের তুলনায় ২৪০ ভাগ বেশি যা তখন ছিল ১৬ লাখ টন (চিত্র ১ ও চিত্র ২ দৃষ্টব্য)।
ভুট্টা চাষের বেশির ভাগ উৎপাদন দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, রংপুর ও বগুড়ায় সম্প্রসারিত হয়েছে। এক্ষেত্রে ডিএই, সিমিট ও অন্যান্য এনজিও, বেসরকারি উদ্যোক্তা এবং বীজ কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যদিও গত কয়েক বছর ধরে ভুট্টার চাষ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু প্রতি একক জমিতে ভুট্টার ফলন সামান্তরালে আছে এবং ভবিষ্যতে তা হ্রাস পেতে পারে। দেশের আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ প্রতি বছর ১% হারে কমছে। অন্যদিকে খাদ্যের চাহিদা প্রতি বছর প্রায় ১৫% বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই চাহিদা মেটাতে উচ্চফলনশীল শস্য উৎপাদন এবং উচ্চফলন অর্জন ও অব্যাহত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মানসম্মত ও উপযুক্ত বীজের অভাব, মাটির উর্বরতা হ্রাস, সারের ভারসাম্যহীন ব্যবহার, কম সেচ দেয়া এবং শীতের মৌসুমে দেরিতে লাগানো ফলন কমার কারণ। ভুট্টার উচ্চফলন অব্যাহত রাখতে এবং বাড়াতে এই সমস্যাগুলোর যথাযথ সমাধান করতে হবে।
ভুট্টা চাষের প্রধান সমস্যাসমুহ
া বাংলাদেশের ভুট্টা উৎপাদনে বীজের উচ্চমূল্য সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা। ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রতি টন ভুট্টা বীজের বর্তমান দাম ২৪৮.৭ ডলার থেকে বেড়ে ২৬৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের জন্য দেশে ভুট্টার বীজের দাম বেড়েছে। দেশের অধিকাংশ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক প্রাথমিক পর্যায়ে বেশি বিনিয়োগ করতে চান না। উপরন্তু চাহিদা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। বাংলাদেশে ভুট্টার উৎপাদন সম্প্রসারণের জন্য যখন প্রয়োজন তখন ন্যায্যমূল্যে বীজ সরবরাহ অপরিহার্য।
া স্বল্পমেয়াদী উচ্চফলনশীল খাটো জাতের ভুট্টার বিপুল চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এজাতগুলো অপ্রতুল। উচ্চতায় খাট জাতগুলো শক্তিশালী বলে প্রবল বাতাস সহ্য করতে পারে যার ফলে ঢলে পড়েনা। এছাড়াও, উচ্চফলনশীল খাটো জাতগুলো পরিপক্ব হতে কম সময় নেয়, সহজেই মোচা সংগ্রহ করা যায় ফলে সময় ও শ্রমিক সাশ্রয় করে। তাছাড়া ভুট্টা একটি দীর্ঘমেয়াদি (প্রায় ১৫০ দিন) ফসল। ধান ছাড়া অন্য কোন দীর্ঘমেয়াদি ফসলের আন্তপরিচর্যা করতে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
া সাম্প্রতিককালে ভুট্টার ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকা এবং ফিউজারিয়াম স্টক রট রোগ আরেকটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যেগুলো কিনা ভুট্টার ফলনকে ১০০% ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
া বাংলাদেশে খুব অস্থিতিশীল বৃষ্টিপাত এবং তাপমাত্রা দেখা দেয় যা ভুট্টা উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। দেশে আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়ে খুবই অনিশ্চয়তা রয়েছে। ফলে কৃষকরা ফসল চাষের যেকোন সময় অত্যন্ত অনুপযুক্ত আবহাওয়ার সম্মুখীন হন। রবি মৌসুমে অত্যাধিক ঠা-া আর খরিফ মৌসুমে ঝড়ো আবহাওয়া ও বন্যা ভুট্টা উৎপাদনে একটি বড় বাধা।
া সঠিক কারিগরি জ্ঞানের অভাবে ভুট্টা চাষিরা চাষের উপযুক্ত মৌসুম, সঠিক জাত নির্বাচন, বীজের হার, বীজ বপনের পদ্ধতি, যথাযথ কীটনাশক ও সার, ফসল সংগ্রহ ও সংগ্রহোত্তর কার্যক্রম এবং বিপণন ব্যবস্থাসহ বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।
া বাংলাদেশে অধিকাংশ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক নগদ অর্থের অভাবে নিম্নমানের ইনপুট ক্রয় এবং ফসল কাটার পর অনুপযুক্ত ব্যবস্থাপনার ফলে ফলন অনেক কমে যায়। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার আর্থিক সহায়তার অভাবে ভুট্টা উৎপাদন ও সম্প্রসারণ অনেকাংশে ব্যাহত হচ্ছে ।
া ফসল উৎপাদনে সার ও বালাইনাশক অপরিহার্য। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী ফসল উৎপাদনের সময় সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। তাছাড়া লাইসেন্সবিহীন ভেজাল সার, বালাইনাশক বিক্রি করে। এসব ভেজাল ইনপুট ব্যবহার করার ফলে ভুট্টা উৎপাদন অনেকাংশে ব্যর্থ হতে পারে।
া শক্তিশালী বাজার নেটওয়ার্ক তৈরি হয়নি বলে ভুট্টার বাম্পার উৎপাদন সত্ত্বেও বিক্রির জন্য ফরিয়া/ মধ্যস্থতাকারীদের উপর নির্ভর করতে হয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃষকরা বাজারের প্রকৃত পরিস্থিতি নিয়ে অন্ধকারে রয়েছে বলা যায়। তাছাড়া সরকারিভাবে ভুট্টা ক্রয়ের কোন পরিকল্পনা/উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দেখা যায় নি। ফলে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য থেকে প্রতিনিয়তই বঞ্চিত হচ্ছে
ভুট্টার উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভবিষ্যৎ করণীয়
বাংলাদেশে ভুট্টার উৎপাদন ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য নিচের বিষয়গুলো গুরুত্বে সাথে বিবেচনা করা যেতে পারে :
া তাপ, খরা ও লবণাক্ত প্রতিরোধী খাটো জাত, অপ্রচলিত এলাকায় (চরাঞ্চল, হাওর অঞ্চল ও পার্বত্য অঞ্চল) এবং লবণাক্ত অঞ্চলের (দেশের দক্ষিণাঞ্চল) উপযোগী জাতের দ্রুত উদ্ভাবন করা ।
া উপযোগিতা যাচাইপূর্বক নিবিড় উৎপাদন, এলাকাভিত্তিক প্রদর্শন, সম্প্রসারণ, মানসম্মত বীজ উৎপাদন ও যন্ত্রপাতির ব্যবহার নিশ্চিত করা। এ সম্পর্কিত গবেষণাগুলোর ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখা।
া অনাকাক্সিক্ষত ও আচমকা রোগবালাই, কীটপতঙ্গের আক্রমণ দেখা দিলে আবশ্যিকভাবে তার প্রতিকার উদ্ভাবনের জন্য উপযুক্ত ও কার্যকর জাত এবং দমন ব্যবস্থার উদ্ভাবন করতে হবে। যেমন- সাম্প্রতিককালে ভুট্টার ফল আর্মি ওয়ার্ম এবং ফিউজারিয়াম স্টক রট দমন ব্যবস্থাপনা নির্দেশিত হয়েছে।
া দেশের দক্ষিণাঞ্চল, চরাঞ্চল, সিলেট ও ময়মনসিংহের হাওর অঞ্চলসহ রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবনের পার্বত্য অঞ্চলের অপ্রচলিত ও নতুন জমি ভুট্টা চাষের আওতায় আনার জন্য উপযুক্ত জাত চিহ্নিত করে বীজ সরবরাহ করা, সঠিক প্রায়োগিক ফসল বিন্যাস বাস্তবায়ন করা, টেকসই সমন্বিত প্রযুক্তি ব্যবহার ও সাংগঠনিক প্রচেষ্টা জোরালো করা।
া ভুট্টার উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোক্তা, পোলট্রি, মৎস্য এবং ভুট্টাভিত্তিক নতুন শিল্পের যেমন কর্ন ফ্লেক্স, কর্ন স্টার্চ, কর্ন অয়েল প্রভৃতি ধরনের শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা করা। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠায় সরকারি সহযোগিতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
া চাষিদের ভুট্টা উৎপাদন কলাকৌশলসহ যাবতীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি ভুট্টার মানসম্পন্ন বীজ চাষিদের কাছে সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং ভুট্টাভিত্তিক টেকসই ও লাভজনক ফসলবিন্যাস চিহ্নিত করা।
া ভ্ট্টুার মূল্য নির্ধারণ করে চুক্তিভিত্তিক চাষির মাধ্যমে দেশে ভুট্টা চাষের এলাকা ও উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। বিপণন ব্যাবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে কৃষকদের উৎপাদিত বীজ/পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে।
া ভুট্টা উৎপাদনের কারিগরি বিষয়গুলোর নজরদারি বাড়ানোসহ আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় অধিকতর জোরালো করা। সরকারি ভর্তুকি ও প্রণোদনা, ফসল ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ সঠিক সময়ে কৃষকের কাছে পৌঁছানো।
উল্লিখিত প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে কৃষকপর্যায়ে ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব হবে। অন্যদিকে দেশে ভুট্টাভিত্তিক খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন এবং এদের শিল্পভিত্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। এতে প্রয়োজনীয় ভুট্টা আমদানি হ্রাস পাবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে কৃষকের আয় বৃদ্ধিসহ জাতীয় প্রবৃদ্ধি এবং জীবনমান উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখবে।
রব।ে
লেখক : ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ গম ও ভ্ট্টুা গবেষণা ইনস্টিটিউট, নশিপুর, দিনাজপুর-৫২০০, মোবাইল : ০১৭১৪-৭৮২৭০৪, ইমেইল :mobarak.hossain@bwmri.gov.bd