Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

নতুন-উদ্ভাবিত-উচ্চফলনশীল-জাতের-টমেটো-বারি-টমেটো-২২-এবং-বারি-টমেটো-২৩

নতুন উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাতের টমেটো বারি টমেটো-২২ এবং বারি টমেটো-২৩
ড. এ কে এম কামরুজ্জামান১ ড. লিমু আক্তার২
টমেটো একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। কাঁচা কিংবা পাকা দুইভাবে টমেটো খাওয়া যায়। খাবারের স্বাদ বাড়াতে টমেটোর জুড়ি মেলা ভার। অনেকে আবার সালাদে টমেটো খেয়ে থাকেন। টমেটো শুধু খাবারে স্বাদই বাড়ায় না, টমেটো থেকে তৈরি হয় নানা রকমের কেচাপ ও সস।  এতে আছে এনার্জি ১৮ কিলো ক্যালরি, শর্করা ৩.৯ গ্রাম, প্রোটিন ০.৯ গ্রাম চর্বি (ফ্যাট) ০.২ গ্রাম, ডায়েটারি ফাইবার ১.২ গ্রাম, ফ্লরেটস ১৫ মাইক্রো গ্রাম, নায়াসিন ০.৫৯ মিলি গ্রাম, থায়ামিন ০.০৩৭ মিলি গ্রাম,  ভিটামিন এ ৮৩৩ আই ইউ, ভিটামিন সি ১৩ মিলি গ্রাম, ভিটামিন ই ০.৫৪ মিলি গ্রাম, ভিটামিন কে ৭.৯ মাইক্রো গ্রাম, সোডিয়াম ৫ মিলি গ্রাম, পটাশিয়াম ২৩৭ মিলি গ্রাম,   ক্যালসিয়াম ১০ মিলি গ্রাম, আয়রন ০.৩ মিলি গ্রাম,   ম্যাগনেসিয়াম ১১ মিলি গ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ০.১৫ মিলি গ্রাম,   ফসফরাস ২৪ মিলি গ্রাম,   জিঙ্ক ০.১৭ মিলি গ্রাম, ক্যারোটিন-বিটা ৪৪৯ মাইক্রো গ্রাম, ক্যারোটিন-আলফা ১০১ মাইক্রো গ্রাম। তাছাড়া অনেকটা পানিও রয়েছে এর মধ্যে।
টমেটো ভক্ষণের উপকারিতা
টমেটোর লাইকোপিন একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট - ইহা ইমিউন সিস্টেমকে প্রভাবিত করে।  যেমন- ফুসফুস, পাকস্থলী বা প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে; ডায়বেটিকস ও রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে; কিডনি ভাল রাখে এবং অগ্ন্যাশয়, কোলন, গলা, মুখ, স্তন এবং জরায়ুতেও রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে; চর্মরোগের জন্য টমেটো অত্যন্ত কার্যকর উপাদান। যেমন মুখের সৌন্দর্য ধরে রাখতে এবং বয়সের ছাপ দূর করতে টমেটো বেশ কার্যকর; টমেটোর রস মুখের ত্বক মসৃণ ও কোমল করে।  
জলবায়ু ও মাটি 
টমেটোর শীতকালীন জাতগুলোর রাত্রির তাপমাত্রা ২৩০ সেন্টিগ্রেট এর নিচে থাকলে তা গাছে ফুল ও ফল ধারণের জন্য বেশি উপযোগী। গড় তাপমাত্রা ২০০-২৫০ সেন্টিগ্রেট টমেটোর ভাল ফলনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। উচ্চ তাপমাত্রা এবং বাতাসের আর্দ্রতা টমেটো গাছে রোগ বিস্তারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। আবার উচ্চ তাপমাত্রা ও শুষ্ক আবহাওয়ায় ফুল ঝরে পরে। তবে  বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গ্রীষ্মকালে উৎপাদন উপযোগী কয়েকটি টমেটো জাত উদ্ভাবিত করেছে যা গ্রীষ্মকালে কৃষকরা বাণিজ্যিকিভাবে চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছে।  
আমাদের দেশের সব রকমের উর্বর মাটিতে টমেটো চাষ করা যায় এবং ভাল ফলন দিয়ে থাকে। তবে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। আলো-বাতাসযুক্ত উর্বর দো-আঁশ মাটি টমেটো চাষের জন্য সবচেয়ে ভাল। তবে উপযুক্ত পরিচর্যায় বেলে দো-আঁশ থেকে এটেল দো-আঁশ সব মাটিতেই টমেটো ভাল জন্মে। বন্যার পানিতে ডুবে যায় এমন জমিতে এর ফলন সবচেয়ে ভাল হয়। মাটির অম্লতা ৬-৭ হলে ভাল হয়। মাটির অম্লতা বেশি হলে জমিতে ডলোচুন প্রয়োগ করা উচিত।
জাত
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সবজি বিভাগ সম্প্রতি ২টি উচ্চফলনশীল টমেটোর জাত ২০২৪ সালে উদ্ভাবন করেছে। জাত দু’টি জীবনকাল ১২০-১৫০ দিন।
বারি টমেটো-২২ (শীতকালে)
চারা রোপণের ৬০-৬৫ দিন পর প্রথম ফল সংগ্রহ করা যায়। ফল মাঝারি আকারের লম্বাটে-গোলাকৃতির হয়, ফলের ওজন ১১০-১১৫ গ্রাম এবং প্রতি গাছে ৩৫-৪০টি ফল ধরে। মিষ্টতা (টি এস এস): ৪.৫০% ও সংরক্ষণ কাল (শেলফ লাইফ) স্বাভাবিক ঘরের তাপমাত্রায়: ১০-১২ দিন; ফলন ৯০-১০০ টন/হে.।
বারি টমেটো-২৩ (শীতকাল ও গ্রীষ্মকালে)
উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল হওয়ায় সারা বছর চাষ করা যায়; চারা রোপণের ৬২-৬৫ দিন পর প্রথম ফল সংগ্রহ করা যায়; ফল মাঝারি আকারের চ্যাপ্টা-গোলাকৃতির; ফলের ওজন ১২০-১২৫ গ্রাম; প্রতি গাছে ৩৩-৩৬টি ফল ধরে; মিষ্টতা (টি এস এস) ৪.৬০%; সংরক্ষণ কাল (শেলফ লাইফ) স্বাভাবিক ঘরের তাপমাত্রায় ৮-১০ দিন; ফলন ৮৮-৯৫ টন/হে. (শীতকালে); ৪০-৪৫ টন/হে. (গ্রীষ্মকালে)।
বীজের মাত্রা 
প্রতি এক গ্রাম প্রায় ২৫০টি বীজ থাকে। অঙ্কুরোদগমের হার ৯০% এবং প্রতিষ্ঠার/বাঁচার হার ৮০% বিবেচনায় বীজের পরিমাণ হলো ২০০ গ্রাম (প্রতি হেক্টরে) এবং ১ গ্রাম (প্রতি শতাংশে)। রোপণ দূরত্ব ৬০ী৪৫ সেমি. হিসাবে এবং ১০ মিটার লম্বা, ১ মিটার প্রস্থ বেড এবং পার্শে ৩০ সেমি. নালা হিসাবে প্রতি বেড এ ৪৪টি চারার প্রয়োজন হয়। এই হিসাবে হেক্টরপ্রতি চারার প্রয়োজন হয় ৩২,২০০টি এবং শতাংশ প্রতি চারার প্রয়োজন হয় ১৩০টি।  
বীজ শোধন 
ছত্রাকবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য বীজ বপনের পূর্বে ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজকে শোধন করা উচিত। তাহলে বীজ ছত্রাকবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকে। বীজ থেকে উৎপাদিত চারাও ছত্রাকবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকে। চারা রোপণের পর আরও ১৫-২০ দিন চারা ছত্রাকবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকে। ছত্রাকনাশক প্রোভেক্স (মাত্রা হলো ২-৩ গ্রাম/ কেজি বীজ)। অথবা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশকও ব্যবহার করা যায়। 
চারা উৎপাদন 
বীজ বপনের সময় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর পর্যন্ত। চারা উৎপাদন ৩০-১০০ হোল বিশিষ্ট পটিং ট্রেতে চারা উৎপাদন করা অনেক সহজ; পটিং মিডিয়াতে ১:১ অনুপাতে যথাক্রমে মাটি এবং ভার্মিকম্পোস্ট মিশাতে হবে। আজকাল অবশ্য কোকোপিট নামক পটিং মিডিয়া কিনতে পাওয়া যায়, যা ব্যবহার করা চারার জন্য বেশ ভাল; পলিব্যাগ, পলিপট, পটিং ট্রেগুলোতে পানি, সূর্যালোক ও ছায়া প্রয়োজনমাফিক নিশ্চিত করতে হবে; সবসময় চারা সাদা ঘন নেট দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে যেন কোন ধরনের রোগের জীবাণু এবং ভাইরাস এর বাহক পোকা- সাদা মাছি প্রবেশ করতে না পারে; ছত্রাকনাশক (অটোস্টিন) ও কীটনাশক (ইমিটাফ) এর স্প্রে সিডিউল ৭-১০ দিন অন্তর অন্তর প্রয়োগ করতে হবে। 
চারার বয়স ও চারা রোপণ : চারার বয়স ২৫-৩০ দিন বা ৪-৬ পাতাবিশিষ্ট হলে জমিতে রোপণ করে গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে। 
জমি তৈরি
৪-৫ বার চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে যাতে জমিতে বড় বড় ঢিলা এবং আগাছা না থাকে; চারার রোপণ দূরত্ব জাতভেদে ভিন্ন হয়; প্রতিটি বেড প্রস্থে’ ১০০ সেমি. এবং লম্বায় দুটি সারিতে ৬০ী৪৫ সেমি. দূরত্বে রোপণ করলে ২২টি চারা সংকুলনের জন্য ১০ মিটার হতে হবে। 
আদর্শ বেডের মাপ
বেডের প্রস্থ ১.০ মি. ও বেডের দৈর্ঘ্য জমির দৈর্ঘের উপর নির্ভর করবে। নালার প্রস্থ  ৩০ সেমি.।
সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ (কেজি/হেক্টর) 
টমেটো এমন একটি ফসল সার প্রয়োগ ব্যতীত সন্তোষজনক উৎপাদন চিন্তা করা যায় না; বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে খাদ্যের অভাব হলে গাছ দ্রুত বাড়ে না এবং পরবর্তী পর্যায়ে খাদ্যের স্বল্পতা ফলনের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে (সারণি দ্রষ্টব্য)। 
সেচ 
চারা রোপণের ৩-৪ দিন পর পর্যন্ত হালকা সেচ ও পরবর্তীতে প্রতি কিস্তি সার প্রয়োগের পর জমিতে সেচ দিতে হয়; টমেটো গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। বেডের দুইপাশের নালা দিয়ে জমিতে সেচ দেয়া সুবিধাজনক; অতিরিক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য নালা পরিমিত চওড়া (৩০-৪০ সেমি.) এবং এক দিকে মৃদু ঢালু হওয়া বাঞ্ছনীয়; প্রতিটি সেচের পরে মাটির উপরিভাগের চটা ভেঙে দিতে হবে যাতে মাটিতে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে; ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে সেচ দিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না, তদুপরি পানির প্রয়োজন ও কম হয়।  অতিরিক্ত পানি বের হওয়ার জন্য সুষ্ঠু নিকাশব্যবস্থা করতে হবে। 
আন্তঃপরিচর্যা
খুঁটি : টমেটো গাছ এর ভাল ও গুণগত ফলন পাওয়ার জন্য খুঁটি দিতে হয় যাতে গাছ ফলের ভারে হেলে না পড়ে। 
মালচ পেপার ব্যবহার : গাছের সঠিক বৃদ্ধি ও মাটির পানির সঠিক ব্যবহার করার জন্য মালচ পেপার ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহার করলে আগাছা দমন হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়। বাজারে ১.২ মিটার ও ১ মিটার প্রস্থ এবং ৫০০-৬০০ মিটার লম্বার মালচ পেপার পাওয়া যায়।
আগাছা দমন : নিড়ানি বা কোদাল দিয়ে প্রয়োজনীয় আগাছা দমন করতে হয়, তবে মালচ পেপার ব্যবহার করে আগাছা দমন এ খরচ কম হয়।
পার্শ্ব কুশি ছাটাই : টমেটো গাছে ১ম ফুলের গোছার ঠিক নীচের কুশিটি ছাড়া সব পার্শ্ব কুশি ছাঁটাই করতে হবে। 
ফসল  সংগ্রহ  (পরিপক্বতা শনাক্তকরণ) ও ফলন
ফলের ঠিক নিচে ফুল ঝরে যাওয়ার পর যে দাগ থাকে ঐ স্থান থেকে লালচে ভাব শুরু হওয়া মাত্রই  ফল সংগ্রহ করলে  হবে বাজারজাতকরণের জন্য সুবধিা হয়; এতে ফল অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। 
জাত ভেদে ফলনের পার্থক্য হয়ে থাকে। যেমনঃ  ৯০-১০০ টন/হে. (বারি টমেটো-২২); ৮৮-৯৫ টন/হে. (বারি টমেটো-২৩)।
ফসল সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা 
স্তূপাকারে না রেখে পাতলা করে ঠা-া ছায়া স্থানে প্লাস্টিকের বাক্সে রাখতে হবে। সম্ভব হলে আর্দ্রতা সংরক্ষণের জন্য ভিজা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে; বাজারজাতকরণের পূর্বে বাছাই ও গ্রেডিং করে তার পর ধুয়ে নিতে হবে; রোগাক্রান্ত, পোকাক্রান্ত, আঘাতপ্রাপ্ত,  অতি কচি, বাত্তি ও ভিন্ন রং এর ফলকে বাছাই করতে হবে।
বীজ উৎপাদন
বীজ উৎপাদনের জন্য ফল পুরাপুরি লাল বর্ণ ধারণ করলে তুলতে হবে। সাধারণত ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা ও ৪২% বাতাসের আর্দ্র্রতা বিশিষ্ট ঘরের পরিবেশ বীজ সংরক্ষণের জন্য উত্তম; বীজ ফলন  ২০০-২৫০ কেজি/হেক্টর (১.০ কেজি /শতাংশ)। 
পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা
সাদা মাছি পোকা : আঠালো হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করা; স্থানীয়ভাবে সুপারিশকৃত জৈব বালাইনাশক বায়োমাক্স এম ১মিলি/ লিটার, ফাইটোক্লিন,  বায়োমক্সে এম, সাকসেস ২.৫ এস সি ১মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত পাতায় স্প্রে করা; আক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি হলে ইমিটাক্লোরেপিড গ্রুপ এর অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগ করে তা দমন করা। 
 টমেটোর ফলছিদ্রকারী পোকা : পোকাসহ আক্রান্ত ফল হাত বাছাই করে মেরে ফেলা; সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা; স্থানীয়ভাবে সুপারিশকৃত জৈব কীটনাশক (এন্টারিও, বায়োমক্স এম) ব্যবহার করা যেতে পারে। 
পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা 
আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা; আঠাল হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করে এদেরকে আকৃষ্ট করে মেরে ফেলা; স্থানীয়ভাবে সুপারিশকৃত জৈববালাই নাশক বায়োমাক্স এম ১ মিলি/লিটার, ফাইটোক্লিন, বায়োমক্সে এম ১মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত পাতায় স্প্রে করা; আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে সবশেষ ব্যবস্থা হিসেবে অনুমোদিত কীটনাশক একতারা প্রতি লিটার পানিতে ১.৫ মিলি স্প্রে করা।
রোগবালাই দমন ব্যবস্থাপনা
ড্যাম্পিং অফ : প্রতিষেধক হিসাবে মাটিতে ক্যাপটান, কপার অক্সিক্লোরাইড বা ডায়থেন এম-৪৫, ১-২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা; বপনের পূর্বে প্রোভাক্স বা ভিটাভেক্স (২.৫ গ্রাম/ কেজি বীজ) দ্বারা বীজ শোধন করা; সরিষার খৈল চারা রোপণের তিন সপ্তাহ পূর্বে  ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে; পরিবেশ বান্ধব জৈববালাইনাশক ফাইটোম্যাক্স (৫-৭ মিলি/ লিটার) বা লাইকোম্যাক্স (২-৩ গ্রাম/লিটার) পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা; আক্রান্ত জায়গায় রিডোমিল গোল্ড (০.২%) দিয়ে মাটি ভিজিয়ে দেওয়া।
ঢলেপড়া রোগ : আক্রান্ত গাছ দেখলেই প্রাথমিকভাবে তা তুলে ধ্বংস করা; রোগ প্রতিরোধী জাতের চাষ করা।
নাবিধসা/মড়ক : আকাশ মেঘাচ্ছন্ন অথবা ঘন কুয়াশা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ৩-৪ দিনের বেশি চলতে থাকলে দেরি না করে ম্যানকোজেব ছত্রাকনাশক  যেমন- রিডোমিল গোল্ড ব্যবহার করা। ২ গ্রাম/ লিটার হারে মিশিয়ে ১ম বার স্প্রে করার ৩ দিন পর ২য় বার স্প্রে করা; আক্রান্ত ফসল সম্পূর্ণ পুড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। 
হলুদ পাতা কোকড়ানো : চারা লাগানোর দুই সপ্তাহ পর থেকে ৭-১০ দিন পরপর ইন্টিপ্রিড ১০ এস সি অথবা ইমিটাফ ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত পাতায় স্প্রে করা। এর ফলে বাহক পোকা যেমন সাদা মাছি পোকা দমন হবে ও হলুদ পাতা কোঁকড়ানো ভাইরাস এর আক্রমণ ও কম হবে; ক্ষুদ্র ছিদ্রযুক্ত (প্রতি বর্গইঞ্চিতে ৫০টি ছিদ্র) সাদা নাইলনের নেট দিয়ে বীজতলা ঢেকে চারা উৎপাদন করতে হবে; ফল সংগ্রহের দুই সপ্তাহ আগেই স্প্রে বন্ধ করতে হবে।

লেখক : ১মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, সবজি বিভাগ, উগকে, বিএআরআই ২ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, সবজি বিভাগ, উগকে, বিএআরআই। মোবাইল : ০১৭৫৪১১২০৫০, ই-মেইল : akmqzs@gmail.com