কবিতা
ক্ষতিকর ইঁদুর
মোঃ মাজেদুল ইসলাম (মিন্টু)
ইঁদুরের বংশ বৃদ্ধি দ্রুত বাড়ে
যেকোন পরিবেশে খাপখাওয়াতে পারে।
জন্ম থেকে যৌবন পায় তিন মাস পর,
তারপর জোড়ায় জোড়ায় বাঁধে তারা ঘর।
গর্ভধারণ হয় প্রসবের পর দুই দিন,
প্রতিবারে বাচ্চা দেয় কমপক্ষে তিন।
ইঁদুরের শ্রবণশক্তি প্রখর যেমন,
ঘ্রাণশক্তি আছে তার প্রকট তেমন।
ইঁদুরের সামনের দাঁত জন্ম থেকে বাড়ে,
কাটাকাটি ছেড়ে তাই থাকতে না পারে।
ইঁদুর ফসল খেয়ে করে দেয় নষ্ট,
তাই তারা প্রাণীকুলে সবচেয়ে দুষ্ট।
খায় যত, নষ্ট করে দশগুণ তার,
প্রাণীকূলে নেই তার কোন উপকার।
ইঁদুর খুব চালাক, নিশাচর সৃষ্টি,
দিনের বেলায় তাদের ক্ষীণ দৃষ্টি।
সব জাতের ইঁদুর সাঁতরাতে পারে,
নেংটি ইঁদুর ঘরের মাঝে ছোটাছুটি করে।
বিদ্যুতের তার কাটে বাঁধ ভেঙে দেয়,
দুরারোগ্য রোগব্যাধি সমাজে ছড়ায়।
গম কাটে, পাট কাটে, কাটে গোলার ধান,
ক্ষেতে কাটে লাউ, কুমড়া দিয়া মন প্রাণ।
রাতে বসে গর্ত করে পানি সেচের খাল,
দিনদুপুরে ঘরে বসে কাটে জেলের জাল।
গ্রাম শহর সবখানে তার সমান বিচরণ,
সর্বলোকে জানে তার কেমন আচরণ।
ইঁদুর মারার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল,
যখন ডুবে যায় মাঠ, ঘাট আর খাল।
ইঁদুর ক্ষতি করে সর্ব অবস্থায়,
এদের নিধন করি এসো সবাই।
ক্ষতিকর ইঁদুর মেরে করবো শেষ,
সুন্দরভাবে গড়বো সোনার বাংলাদেশ।
লেখকঃউপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার়।উপজেলা কৃষি অফিসারের কাযালয়।ভাঙ্গুড়া পাবনা।মোবাইলঃ০১৭১৭৪৬৬৯৯৮
আমার দেশের চাষি
আবুল হোসেন আজাদ*
কার সে কায়িক পরিশ্রমে
ফুল ফসল আজ মাঠে,
কার উৎপন্ন কৃষি পণ্যে
ভরা বাজার হাটে।
রোদে পুড়ে বৃষ্টি ভিজে
সারা বেলা খেটে,
সুখে দুখে বারোটা মাস
কার বলো যায় কেটে।
ধান আলু পাট গম সরিষা
আধুনিক প্রযুক্তিতে,
ফলায় ফসল চাষিরা যে
গ্রীষ্ম বর্ষা শীতে।
ষোলো কোটি বাংলাদেশের
জনগণের জন্য,
জোগায় তারা কঠিন শ্রমে
সবার মুখে অন্ন।
ওরা হলো সহজ সরল
আমার দেশের চাষি,
সে অনন্য দেশের গর্ব
তাকে ভালোবাসি।
কৃষিবিষয়ক গান
অপু বড়ুয়া**
সবজি খেলে কব্জি বাড়ে
স্বাস্থ্য ভালো হয়
কাজে কামে মন খুশি রয়
জানিবে নিশ্চয়
তা বিজ্ঞজনে কয়।
আমড়া আম পেয়ারা কুলে
সি ভিটামিন আছে
এসব খেলে স্কার্ভি রোগ
আসে না আর কাছে।
কচুশাকে চোখের আলো
দূর করে দেয় নিকশ কালো
সুন্দর মন সুস্থ দেহ
জীবন আলোকময়।
মুরুং চলে থুরুং নিয়ে
পাহাড়ে জুম চাষে
ক্ষেত খামারে ধান সবজি
ফলায় বারো মাসে।
বাগান বাড়ি পুকুর পাড়ে
থর থরিয়ে সবজি বাড়ে
সংসারে হয় বাড়তি আয়
থাকে না আর ভয়
জয়তো জগৎময়।
নিউ রাইস ফর আফ্রিকা (নেরিকা)
মোহাম্মদ নূর আলম গন্দী***
নেরিকার জন্মস্থান যদিও আফ্রিকায়
থিতু হতে যাচ্ছে এবার বাংলার সীমানায়।
নেরিকার জীবনকাল সবার চেয়ে অল্প
আমনে মাত্র ১০০-১১০ দিন
এ নয় কোনো গল্প।
২০ দিনের চারা যদি করা যায় রোপণ
শতকে ফলন পাবে এক মণ।
নেরিকার রয়েছে প্রচ- জীবনীশক্তি
খরা রোগ পোকা তারে
সদা করে ভক্তি।
নেরিকা খায় সুষম সার
বাংলার মাঠে ফলে
বছরে তিন বার।
নেরিকার চালে আছে অধিক পুষ্টি
প্রাণিকুল খেয়ে পাবে
দেহ মনে তুষ্টি।
তোমার কল্যাণে বেঁচে গেছে যত
কালো নাঙ্গা আর ভুখা
সত্যিই তুমি নিউ রাইস ফর আফ্রিকা।
* কবি ও শিশু সাহিত্যিক, গ্রাম- বৈচনা ডাকঘর- শাঁখরা কোমরপুর, উপজেলা ও জেলা- সাতক্ষীরা। ** প্রকৌশলী, (গীতিকার-বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন) বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ, বান্দরবান। *** উপসহকারী কৃষি অফিসার, ব্লক চরপুক্ষিয়া, উপজেলা কৃষি অফিস, কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ।