Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কবিতা মাঘ-১৪২১

ম্যাজিক বুলেট গুটি ইউরিয়া
কৃষিবিদ এ এইচ ইকবাল আহমেদ*
 
ম্যাজিক বুলেট করলোরে মাত কৃষির দুনিয়া
গুঁড়া ইউরিয়ার বিকল্প এলো গুটি ইউরিয়া॥
গুঁড়া লাগে দশ যেখানে গুটি লাগে ছয়
বারে বারে না একবারে মৌসুমে দিতে হয়।
জমির নিচে দিলে তা যে যায় না উড়িয়া॥
পৌনে দুই গ্রাম ওজন হারে আউশ আমনে
দুই দশমিক সাত গ্রামের গুটি বোরোয় তেমনে
গর্তে পুঁতে দিয়ে তারে হাতড়ে দিবে মুদিয়া॥
লাইনে রোপা ধান ক্ষেতের চার গোছারই মাঝে
পরে, একটি লাইন বাদে বা এক হাত মুঠ ভাজে
ধানের জমির গুটি দিও ভাইরে মর্ম বুঝিয়া॥
কেহ যদি প্রশ্ন করে রোপার কয়দিন পরে
সপ্তাহ’র মাঝে পুঁতবে গুটি জবাব তারই তরে
জমির কাদা থাকতে নরম না যায় শুকাইয়া॥
রাখতে হবে জমি ভিজা; নয় বেশি বা কমে
গুটি দিয়ে নামলে মাঠে পিছু নিবে যে যমে
প্রয়োজনে নামলে নেমো; গুটি ছাড়া লাইন দিয়া॥
কেউ ব্যবহার করেন গুটি ধানের জমি ছাড়াও
ভালোই বাড়ে সবজি, ভুট্টা, আখ ও কচুর চারাও
ফলের গাছের চারিপাশে গুটি দেয় কেহ খুঁড়িয়া।
জমির ভিতর গুটি দেয়ায় আগাছা রয় উপাস
রোগ ও পোকার একই দশা তারাও হয় যে হতাশ
আগাছা বালাই না থাকাতে বাড়ে ফসল হাসিয়া॥
ধানের ভিতর, খরের ভিতর, আমিষ বাড়ে যেমনি
যায় না উড়ে, জলে না মিশে অপচয় কমে তেমনি
তাই, গুঁড়া থুইয়া গুটি কিনিও হাট-বাজারে যাইয়া॥
গুটি পুঁতে টাটানো ব্যথায় কোমরে আর নখে
ভাটাপরে কিষান-কিষাণীর গুটি পোঁতার ঝোঁকে
দূর হয়েছে এসব এখন গুটি পোঁতাযন্ত্র আসিয়া॥
মাঠের ফসল, ফলের গাছ পার হয়ে তা এবারে
মাছের চাষেও গুটি ইউরিয়া দিতেছে চাষি দেদারে
লাগছে কম, ব্যয়েও কম, আয় যা যে বাড়িয়া॥
গ্রিন হাউজ গ্যাস কমিয়ে পরিবেশ ভালো রাখে
কম লাগাতে প্রাকৃতিক গ্যাস বেশি জমা থাকে
পরিবেশবান্ধব এ প্রযুক্তি তাই যায় আগাইয়া॥
এখন দেশে নাইরে অভাব ভরা গোলা ধানে
অল্প হলেও মানতে হবে গুটির অবদানে
গুটির খবর ছড়িয়ে গেছে বাংলাদেশকে ছাড়িয়া॥
 
সঠিক নিয়মে কৃষি
মো. জুন্নুন আলী প্রামানিক**
 
আগ্রহী মন যথেষ্ট পুঁজি চাষের নিয়ম মেনে,
মাধ্যম মাটি উন্নত বীজ অধিক ফলন দানে।
সঠিক শ্রম উত্তম সার সেচের জোয়ারে কৃষি,
সজাগ দৃষ্টি সেবার হাত নয়ন জুড়ায় বেশি।
ফসল বিজে ঘুমন্ত কলি সেবায় বেড়িয়ে আসে,
বয়স কম যত্নের ফলে শিশুর মতন হাসে।
কৌশল জেনে সময় মতো ফসল চাষের খেলা,
বিভিন্ন দিকে কাজের চাপে যান্ত্রিক সুবিধা মেলা।
দুইটি পাতা চারটি পাতা শোভায় মাঠটি ভরে,
শৈশব কাল কৈশর কাল যৌবন বার্ধক্য ঘিরে।
মাটির সাথে বাড়ন্ত গতি নিখুঁত নিয়মে চলে,
যেমন মাটি তেমন বৃদ্ধি আলোয় বাতাসে দুলে।
বিপদ আছে আগাছা আছে সুযোগে লাগায় ভাব,
নিয়ম মতো সঠিক ভাবে নির্মূল করলে লাভ।
পোকার জন্য ঔষধ আছে বিপদ আপদ কাটে,
ভেষজ মতে শান্তির পথ পাখিরা খেলেও মেটে।
শৈশব কালে খাদ্যের মাত্রা বয়সমাফিক পেলে,
গ্রহণ শক্তি বর্জন শক্তি মিলবে বাড়ার তালে।
কৈশরে ক্ষুধা অনেক বেশি দুরন্ত গতির শ্রোতে,
আদর করে আহার দিলে সহায় সম্বল তাতে।
যৌবনে ফলে দেহের বলে ফলন দুয়ার খোলা,
প্রয়োগ নীতি মানলে ভালো নইলে ক্ষতির পালা।
সবুজসার জৈবিকসার লাগলে কৃত্রিমসার,
গাছের বৃদ্ধি সাধনে সঙ্গি আধিক্যে পোকার ঘর।
যৌবনকাল পেরিয়ে গেলে ফসল পাকার মেলা,
সুযোগ বুঝে ইদুঁরগুলো বানায় জমিতে গোলা।
ইঁদুর মারা জরুরি তাই ঔষধ প্রয়োগ করে,
অথবা তারা পালায় দূরে বিড়াল ঘুরলে ধারে।
যখন যাহা লাগলে তাহা ফসল সেবার সাথে,
দূষণমুক্ত ফসল জোটে নিয়ম মানার পথে।
 
* পরিচালক (অব.), বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, গাজীপুর  ** গ্রাম : বিদ্যাবাগীশ, ডাক ও উপ: ফুলবাড়ী, জেলা-কুড়িগ্রাম