শ্রাবণ মাস। ঋতু পরিক্রমায় বর্ষাকাল হিসেবে বিবেচিত। তবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত কারণে ঋতুচক্রে কখনও কখনও কিছুটা তারতম্য ঘটে থাকে। যেমন-আগাম বন্যা, নাবি বন্যা, খরাসহ নানা-রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ অপ্রত্যাশিতভাবে আবির্ভূত হয় আমাদের কৃষি ভুবনে। নানা অভিযোজন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে এসব মোকাবিলা করে কৃষি কর্মকাণ্ডের গতিধারা অব্যাহত রেখে আমাদের কৃষক-কৃষাণিরা কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এজন্য তাদের সাধুবাদ না জানিয়ে পারা যায় না। এক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সময়োপযোগী দিকনির্দেশনামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি তথ্য সার্ভিসের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণে সহযোগিতা প্রদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কৃষক, কৃষিবিদ, কৃষি গবেষক, সম্প্রসারণবিদ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাবে’। আমরাও চাই কৃষির সার্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মাধ্যমে দেশ আরও এগিয়ে যাক।
শ্রাবণের বাদল দিনে আউশের সুঘ্রাণ, নতুন পানিতে প্লাবিত মাঠ-ঘাটে মাছ ধরার আনন্দ, আমনের সবুজ পাতায় দখিনা বাতাসের মর্মর ধ্বনি, পাটের আঁশ ছাড়ানো আর শুকানোর আনন্দে কৃষকের ঘরে ঘরে বয়ে যায় খুশির জোয়ার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর গ্রামীণ জনমানুষের সুখ-সমৃদ্ধিতে এভাবেই ভরে থাকুক আমাদের এ সোনার বাংলাদেশ- এটাই আমাদের একান্ত কামনা।
চাষি ভাইয়েরা, আপনারা জানেন, এ বছর আষাঢ়ের মাঝামাঝি প্রবল বর্ষণের কারণে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা আকস্মিকভাবে প্লাবিত হওয়া এবং নদীভাঙনে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসেও এ ধরনের আকস্মিক দুর্যোগ আবির্ভূত হতে পারে। প্রাকৃতিক কারণেই আমাদের দেশে খরিফ-১ ও খরিফ-২ অর্থাৎ চৈত্র থেকে আশ্বিন এ সাত মাস কৃষির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্য এ সময় আমাদের সতর্কতার সঙ্গে যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। আমরা আশা করি এ ব্যাপারে কৃষক ভাইয়েরা সচেতন থেকে দেশের কৃষির উন্নয়ন, অগ্রগতি অব্যাহত রাখবেন।