Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর (কৃষিকথা ১৪২৩)

মাসুম
ময়মনসিংহ
প্রশ্ন : ধান গাছের পাতায় ছোট ছোট দাগ হচ্ছে, পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। কী করণীয়?
উত্তর : এটি ধানের একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগের কারণে পাতায় তিলের মতো ছোট ছোট বাদামি দাগ হয়। সব পাতা দাগে পরিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে এবং গাছটি মরে যেতে পারে।
ব্যবস্থাপনার জন্য করণীয় -
* জমিতে জৈবসার প্রয়োগ করা,
* ইউরিয়া ও পটাশ এর উপরিপ্রয়োগ করা,
* পর্যায়ক্রমে জমিতে সেচ দেয়া ও শুকনো রাখা,
* রোগ বেশি মাত্রায় দেখা দিলে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন নোইন ৫০ ডব্লিউপি ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা,
* আক্রান্ত জমিতে শিষ বের হওয়ার পর ৬০ গ্রাম পটাশ ও ৬০ গ্রাম থিওভিট ২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করলে দাগ রোগ কমে,
* পরবর্তীতে ছত্রাকনাশক ব্যাভিস্টিন দিয়ে বীজ শোধন করে বপন করা।
শফিকুল
পিরোজপুর
প্রশ্ন : কচি নারিকেল/ডাব কালো হয়ে ঝরে যাচ্ছে। কী করণীয় ?
উত্তর : নারিকেল গাছের ছত্রাক রোগের জন্য নারিকেলের বাড রট রোগটি দেখা যায়। এর জন্য করণীয় Ñ
* গাছ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা,
* আক্রান্ত নারিকেল সংগ্রহ করে পুঁতে ফেলা,
* আক্রান্ত গাছে প্রতি লিটার পানিতে কুপ্রাভিট ৪ গ্রাম অথবা ডাইথেন এম-৪৫ ২ গ্রাম অথবা বর্দোমিক্সার (১%) মিশিয়ে স্প্রে করা।
আলমগির কবির
খুলনা
প্রশ্ন : বেগুন গাছের পাতা কোঁকড়ানো কী করলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে?
উত্তর : বেগুন গাছের পাতা কোঁকড়ানো ভাইরাসজনিত রোগের লক্ষণ। রোগের আক্রমণ শুরু হয় বীজতলায় সাদা মাছি আক্রমণ করলে। এজন্য বীজতলা ৫০ সেমি. ছিদ্রযুক্ত নেট অথবা সাধারণ মশারির নেট দিয়ে সাদা মাছি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বাড়ন্ত গাছে রোগ দমনের জন্য কেরোসিন মিশ্রিত পানি (প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি.) অথবা ১-২ গ্রাম গুঁড়া সাবান প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করলে এ রোগের বাহক পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ফলে রোগ ছড়াতে পারে না। রোগের আক্রমণ বেশি হলে রগর/টাফগর/পারফেকথিয়ন/রক্সিন নামক কীটনাশক ব্যবহার করে সাদা মাছি দমন করতে হবে। আক্রান্ত গাছ তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং আক্রান্ত জমিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি শোধন না করে অন্য জমিতে ব্যবহার করা যাবে না।
সাঈদ
মোক্তারপাড়া, নওগাঁ
প্রশ্ন : আমার বড় ভাই ৫ কাঠা জমিতে মিষ্টিকুমড়ার চাষ করেছেন। কিন্তু জালি অবস্থায় মাছি পোকার আক্রমণে ফল পচে যাচ্ছে। প্রতিকার জানাবেন।
উত্তর : আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। মিষ্টি কুমড়ার ক্ষতিকর পোকা দমনে প্রথমে হাত বাছাই বা ছাই ছিটিয়ে পোকা দমন করতে পারলে ভালো হয়। তা না হলে ফেরোমন ব্যবহার করতে পারেন। তারপরও শেষ পর্যন্ত প্রতিকার না হলে কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। যেহেতু মিষ্টিকুমড়ার ডগা সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাই কীটনাশক না দেয়াই ভালো। এরপরও যদি কাজ না হয় তাহলে ইমিটাফ/টাবগর/ক্লোরোপাইরিফস নামক কীটনাশক পরিমাণ মতো স্প্রে করতে পারেন বা ক্ষতির মাত্রা বেশি হলে ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করে বা নমুনা নিয়ে আপনার নিকটস্থ উপজেলা কৃষি অফিসে বা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সহায়তা নিয়ে আপনি সঠিকভাবে পোকা দমন করে উপকৃত হতে পারেন।   
মো. হায়দার আলী
দুরাকুটি, লালমনিরহাট
প্রশ্ন : আমার টমেটো গাছ ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে ঢলে পড়ে। প্রতিকার জানালে খুশি হবো।
উত্তর : আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। আক্রান্ত টমেটো গাছের কা- ২ ইঞ্চি আকারে টুকরো করে কেটে চিরে ২ ভাগ করে কাচের গ্লাসে পরিষ্কার পানিতে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। পানি সাদাটে ঘোলা রঙ ধারণ করলে বুঝতে হবে টমেটো গাছ ব্যাকটেরিয়াজনিত ঢলে পড়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। জমিতে পানি বা রসের আধিক্য রোধ করতে হবে। কোনো ছত্রাকনাশক স্প্রে করে সুফল পাওয়া যাবে না। আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। গ্লাসের পানির রঙ অপরিবর্তিত থাকলে বুঝতে হবে টমেটো গাছ ছত্রাকজনিত ঢলে পড়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে রিডোমিল গ্লোড এমজেড ৬৮ ডব্লিউজি অথবা থিয়োভিট ৮০ ডব্লিউজি মিশিয়ে ৭ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে।
মেহেদি হাসান
মিঠাপুকুর, রংপুর
প্রশ্ন : আমার ডালিম গাছে ফল আসছে কিন্তু বড় হচ্ছে না। আমি এখন কী করব জানালে উপকৃত হবো।
উত্তর : ডালিম গাছে যেসব ফুল আসছে সেগুলোতে  সঠিকভাবে পরাগায়ন হচ্ছে না বা একেবারেই পরাগায়ন হচ্ছে না। এজন্য সুষম সার প্রয়োগ এবং নিয়মিত সেচ না দিলে ফুল ফুটলেও তা ঝরে যায়। এছাড়া জোরে বাতাস বইলে পরাগায়ন ঠিকভাবে না হওয়ায়ও ফুল ঝরে যেতে পারে। গাছের বয়স ৫ বছরের বেশি হলে সুষম সার হিসেবে গোবর বা কম্পোস্ট সার ১০-১৫ কেজি, ইউরিয়া ২৫০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম এবং ১৫০ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হয়। সার প্রয়োগের পর ও ফুল আসার সময় গাছের গোড়ায় সেচ প্রদান করে মাটির রস যেন জো অবস্থায় থাকে সে ব্যবস্থা করতে হয়। সুষম সার ব্যবহারের পরও যদি ফুল ঝরা অব্যাহত থাকে, তাহলে ফুল ফোটার আগে প্রতি লিটার পানিতে সর্বোচ্চ ১ গ্রাম পরিমাণ বোরিক এসিড মিশিয়ে স্প্রে করে ফুল ঝরা কমানো যেতে পারে।
কার্নপ চন্দ্র
রংপুর
প্রশ্ন : পোনা উৎপাদন ও নার্সারির ব্যবস্থাপনা কিভাবে করব?
উত্তর : পুকুর উত্তমরূপে প্রস্তুত করে ৫-৭ দিন বয়সী রেণু পোনা প্রতি শতাংশে ১০ গ্রাম (৭-৮ হাজার) হারে মজুত করতে হবে। নার্সারি পুকুর ক্ষতিকর সাপ, ব্যাঙ ও অন্যান্য প্রাণী থেকে রক্ষা করার জন্য পুকুরের পাড় ১ মিটার উঁচু জাল দিয়ে ঘিরে দিতে হবে। রেণু মজুতের পর ৩৫-৪০% প্রোটিনযুক্ত কমার্শিয়াল ফিড, খামারে প্রস্তুতকৃত খাদ্য বা নার্সারি ফিড প্রথম ৫ দিন (১-৫ দিন) পোনার দেহ ওজনের ২ গুণ হারে, পরবর্তী ৫ দিন (৬-১০ দিন) ৩ গুণ হারে, এর পরবর্তী ৫ দিন (১১-১৫ দিন) ৪ গুণ হারে এবং এর পরবর্তী ৫ দিন (১৬-২০ দিন) ৫ গুণ হারে বরাদ্দকৃত খাদ্য প্রতিদিন তিনবারে দিতে হবে। খাদ্যের পাশাপাশি প্রতিদিন সার প্রয়োগ (প্রতি শতকে গোবর ২০০ গ্রাম, ইউরিয়া ৫ গ্রাম ও টিএসপি ৩ গ্রাম) করতে হবে। ২৫-৩০ দিন পরে পোনা চাষের পুকুরে ছাড়ার উপযোগী হবে।
হাসান উদ্দিন
জামালপুর
প্রশ্ন : মাছের সুষম খাবার তৈরি ও প্রয়োগ পদ্ধতি জানাবেন।
উত্তর : পুকুরের মাছের ওজনের ৩%-৫% হারে ভালো কোম্পানি ফিড প্রতিদিন প্রয়োগ অথবা খৈল, চালের কুঁড়া, গমের ভুষি ১০০ কেজি মাছের জন্য ৩ কেজি খাবার (১.৫ কেজি একদিন পূর্বে ভিজিয়ে রাখা খৈল ও ১.৫ কেজি গমের ভুষি বা চালের কুঁড়া) মিশিয়ে ছোট ছোট ম- তৈরি করে পুকুরে প্রয়োগ করা। খাবারগুলো মাটির পাত্রে অথবা প্লাস্টিকের চটের ওপর রাখলে ভালো হয় কারণ মাছ খাবার খেল কি না তা সঠিকভাবে জানতে পারা যাবে। যদি ২ দিন পরও খাবার দেখা যায় তাহলে মাছের খাবার কমিয়ে দিতে হবে। এক কেজি আদর্শ মাছের খাবার তৈরিতে গমের ভুষি ৩০০ গ্রাম, চালের কুঁড়া ২০০ গ্রাম, ফিসমিল ২০০ গ্রাম, আটা ১০০ গ্রাম, পূর্বে ভিজানো খৈল ২০০ গ্রাম সাথে ভিটামিন প্রিমিক্স ১ কেজি খাবারে ১ চা চামচ, লবণ ১ চা চামচ ও চিটাগুড় প্রয়োজন মতো (ম- প্রস্তুত করতে যতটুকু প্রয়োজন ১০০-২০০ গ্রাম) মিশাতে হবে।
সুমন
দিনাজপুর
প্রশ্ন : গরুকে পাগলা কুকুর কামড় দিয়েছে। কী করব?
উত্তর : কামড়ানো জায়গা পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। রেবিসিন ১০ সিসি ১০০ কেজি ওজনের জন্য ১ম দিন ৪ সিসি, ৭ম দিন ৩ সিসি এবং ২১তম দিন ৩ সিসি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হবে।
জান্নাত
নোয়াখালী
প্রশ্ন : আর্থ্রাইটিস/গিরা ফোলা রোগে কী করব?
উত্তর : লক্ষণ : পায়ের গিরা ফুলে যায়, পানি জমে থাকে, ব্যথা হয়, খুঁড়িয়ে হাঁটে।
* অ্যাসিটাইল স্যালিসাইলিক এসিড প্রতিবার ১ গ্রাম করে দিনে ২-৩ বার খাওয়ানো যেতে পারে।
* পর্যাপ্ত বিশ্রাম, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম, পর্যাপ্ত সুষম খাদ্য এবং ওষুধ প্রয়োগ করে এ রোগের চিকিৎসা করা যায়।
* অ্যাসিটাইল স্যালিসাইলিক এসিড প্রতিবার ১ গ্রাম করে দিনে ৩ বার খাওয়ার পর দেয়া যেতে পারে।
* ডিসপিরিন ট্যাবলেট ০.৩ গ্রাম হিসেবে দিনে ৩ বার খাওয়ার পর দেয়া যেতে পারে।
ইমরান
রংপুর
প্রশ্ন : গরুর চোখে পানি অথবা ছানি দেখা গেলে করণীয় কী?
উত্তর : সিলভার নাইট্রেট দানা ১-২টি ১০০সষ ঐ২০ তে মিশিয়ে সলিউশন করে দিনে ২ বার ৩-৪ দিন খাওয়াতে হবে। অথবা
* অটো থেরাপি (রস থেকে রক্ত সংগ্রহ করে মাংসে দেওয়া) দেয়া হয়। অথবা
*
Crystal Silvernitrate-0.1% Eye Drop চোখে ৩-৪ ফোঁটা ৫-৭ দিন প্রয়োগ করতে হবে। Auto hemotherap গরুর রক্ত নিয়ে আবার পুশ করে দেয়া ৩-৫ দিন পর পর ৩টা ডোজ।

কৃষিবিদ মোহাম্মদ মারুফ*
* সহকারী তথ্য অফিসার (শ. উ.), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫