Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর (পৌষ ১৪২৪)

মো. আবদুল ওয়াহাব, গ্রাম : যাদবপুর, উপজেলা : আলমডাঙ্গা, জেলা : চুয়াডাঙ্গা
প্রশ্ন : বাড়িতে একটি কাঁঠালগাছ আছে। কিন্তু কাঁঠাল পাকার আগে ফেটে যায়, কোষগুলোর গোড়ার দিকে শলার মতো হয় এবং রস কম হয়। এ অবস্থায় করণীয় কী?

উত্তর : কাঁঠাল পাকার আগে ফেটে যায় শারীরবৃত্তীয় কারণে। আর বেশির ভাগ সময়েই এটি ঘটে থাকে সেচের অভাবে। সেজন্য ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত শুকনো মৌসুমে  ১৫ দিন অন্তর পানি সেচ দিলে কচি ফল ঝরা, ফলন ও ফলের গুণগতমান বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ফলের ফেটে যাওয়াও রোধ হয়। তবে আরেকটি কথা মনে রাখা দরকার, কাঁঠাল গাছের জাতভেদে কাঁঠাল ফল অনেক সময়ই ফেটে যায়। সেজন্য কাঁঠাল গাছের নিয়মিত পরিচর্যা ও বর্ষার আগে ও পরে সুষম সার প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।


মো. আল মামুন, গ্রাম : খঙ্গাপাড়া, উপজেলা : পঞ্চগড় সদর, জেলা : পঞ্চগড়
প্রশ্ন : বাঁধাকপির গোড়া পচে যায়, এর প্রতিকার কী?

উত্তর : বাঁধাকপির গোড়া পচে যায় ছত্রাকের আক্রমণের কারণে। রোগাক্রান্ত বাঁধাকপির গোড়ায় কার্বেনডাজিম গ্রুপের যেমন অটিস্টিন ১ গ্রাম এবং থিরাম ও কার্বক্সিল গ্রুপের যেমন প্রোভ্যাক্স ১ গ্রাম উভয়ই একসাথে ১ লিটার  পানিতে মিশিয়ে বিকাল বেলায় বাঁধাকপির গোড়ায় স্প্রে করতে হবে। এভাবে ৭ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করলেই আপনি সুফল পাবেন।  

 

মো. রুবেল হোসেন, গ্রাম : বেদেরপুকুর, উপজেলা : কাহারোল, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : কৃষি জমিতে ডলোচুন ব্যবহারের নিয়ম কী?

উত্তর : জমির পুষ্টি উপাদানের সহজলভ্যতা বাড়ানোর জন্য বিশেষ কিছু ধরনের মাটিতে ডলোচুন প্রয়োগ করতে হয়। সেক্ষেত্রে মাটির পিএইচ মান জানা খুব জরুরি। পিএইচ মানের ওপর ভিত্তি করে ডলোচুনের মাত্রা নির্ধারণ করতে হয়। মাটির পিএইচ মান ৪.৫ থেকে ৫.৫ হলে প্রতি শতক জমিতে ৬ কেজি ডলোচুন প্রয়োগ করতে হয়। আর যদি মাটির পিএইচ মান ৫.৬ থেকে ৬.৫ হয় তবে প্রতি শতকে ডলোচুন লাগে ৪ কেজি। এছাড়া মাটির পিএইচ মান যদি ৫.৬ থেকে ৬.৫ হয় প্রতি শতক জমিতে ২ কেজি হারে ডলোচুন ব্যবহার করতে হয়। মাটির পিএইচ মান ৭ বা ৭ এর ওপরে গেলে ডলোচুন প্রয়োগ করতে হয় না।


মো. রবিউল ইসলাম, গ্রাম : তাহেরপুর, উপজেলা : বাগমারা, জেলা : রাজশাহী
প্রশ্ন : লাউ গাছের কাণ্ড ফেটে আঠা বের হচ্ছে, কী   করব?

উত্তর : লাউ গাছের কা- ফেটে গিয়ে আঠা বের হওয়া এ রোগকে গ্যামোসিস বা আঠা ঝরা রোগ বলে। এ রোগ দমনে বোর্দোমিকশ্চার ব্যবহার করলে সুফল মিলে। এটি তৈরির জন্য ১০ গ্রাম তুঁতে, ১০ গ্রাম চুন ও ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে তৈরি করতে হয়। এ মিকশ্চারটি তৈরির পদ্ধতিটি হচ্ছে। প্রথমে মাটি বা প্লাস্টিকের একটি পাত্রে ১০ গ্রাম চুন ভালোভাবে গুঁড়া করে নিতে হবে। এরপর আরেকটি পাত্রে ১০ গ্রাম তুঁতে ভালোভাবে গুঁড়া করে নিতে হবে। তারপর প্রত্যেকটি পাত্রে ৫০০ মিলি পানি মিশিয়ে ভালো করে দ্রবণ তৈরি করতে হবে। তারপর দুইটি পাত্রের দ্রবণটিকে আরেকটি পাত্রে ঢেলে একটা কাঠের কাঠি দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করে বিকাল বেলায় নিয়মমাফিক স্প্রে করতে হয়। বোর্দোমিকশ্চার তৈরির ১২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবহার করতে হয়। নাহলে ভালো ফল পাওয়া যায় না। বোর্দোমিকশ্চার ব্যবহার করা ছাড়াও আপনি সানভিট/ব্লিটক্স প্রতি লিটার পানিতে ৪ গ্রাম ভালোভাবে মিশিয়ে রোগাক্রান্ত লাউ গাছে সঠিক নিয়মে স্প্রে করতে পারেন। তবেই আপনি কাক্সিক্ষত পানের ফলন পাবেন।


মো. রাশেদুল হাসান, গ্রাম : পাঠানতলা, উপজেলা : সিলেট সদর, জেলা : সিলেট
প্রশ্ন : শিম গাছের পাতাগুলো কোঁকড়া হচ্ছে এবং পাতায় হলুদ রঙের ছোপ ছোপ দাগ হচ্ছে, কীভাবে প্রতিকার করব?

উত্তর : শিম গাছে জাব পোকার আক্রমণ হলে পাতা কোঁকড়ে যায়। সেজন্য জাব পোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপিড গ্রুপের  যেমন এডমায়ার  প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি মিশিয়ে বিকাল বেলায় স্প্রে করলে জাব পোকার আক্রমণ রোধ হবে। আর পাতায় হলুদ রঙের ছোপ ছোপ দাগের কারণটি হচ্ছে হলুদ মোজাইক ভাইরাসের আক্রমণ। সেক্ষেত্রে আক্রান্ত গাছ নষ্ট করে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ। এছাড়া ভবিষ্যতে ভালো শিমের ফলনের জন্য রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করলে কিংবা ভালো উৎস হতে প্যাকেটজাত ভালোমানের বীজ ব্যবহার করলে অবশ্যই ভালো ফলন পাবেন।


লাল মিয়া, গ্রাম : দড়িচর, উপজেলা : হোমনা, জেলা : কুমিল্লা
প্রশ্ন : হাঁস দাঁড়াতে পারছে না। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। পালকগুলো এলোমেলো হয়ে আছে এবং ঝিমাচ্ছে। কী করব? পরামর্শ চাই।  

উত্তর : হাঁসের প্লেগ রোগ হয়েছে। এ রোগ প্রতিরোধে ৩ সপ্তাহ বা তার বেশি বয়সের সুস্থ হাঁসকে ডাকপ্লেগের ভ্যাকসিন দিতে হয়। তাহলে আপনি এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরামর্শ পাওয়ার জন্য সম্ভব হলে আপনার কাছের উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে  যোগাযোগ করতে পারেন।


হুমায়ুন কবির, গ্রাম : পূর্বভীষণদই, উপজেলা : হাতিবান্ধা, জেলা : লালমনিরহাট
প্রশ্ন : গরুর জ্বর ১০৬ ডিগ্রি। পায়ের ওপর ফুলে গেছে। খোঁড়াচ্ছে, পেট ফুলে গেছে। এর প্রতিকার কী?

উত্তর : গরুর বাদলা রোগ হয়েছে। পেনিসিলিন বা এমপিসিলিন ইনজেকশন দিতে হবে। সাথে অ্যান্টিহিস্টামিনিক ইনজেকশন প্রয়োগ করতে হবে। স্টোমাপ্লেক্স ভেট পাউডার খাওয়াতে হবে। এ রোগ প্রতিরোধে ৩ মাস থেকে ৩ বছর বয়স্ক পশুকে চামড়ার নিচে বাদলা রোগের টিকা প্রয়োগ করতে হবে।


আল্লামা ইকবাল, গ্রাম : সামাইর, উপজেলা : সাভার, জেলা : ঢাকা
প্রশ্ন : পুকুরে বেশি পরিমাণে গ্যাস ট্যাবলেট ব্যবহার করার কারণে মাছ মারা যাচ্ছে, কী করব?
উত্তর : সাধারণত রাক্ষুসে বা অচাষকৃত মাছ মারার জন্য ফসটক্সিন বা গ্যাস ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়। পুকুরের পানিতে এ গ্যাস ট্যাবলেট দেয়ার কারণে মরা মাছগুলো জাল টেনে উঠিয়ে ফেলতে হবে। না হলে এসব মরা মাছ পুুকুরের তলদেশে পচে গ্যাসের সৃষ্টি করবে। আপনার সমস্যাটি থেকে মুক্তি পেতে পুকুরে নতুন পানি ঢুকাতে হবে। পুকুরে শতকপ্রতি ৫০০ গ্রাম করে চুন প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া, টিএসপি, পটাশ ও কম্পোস্ট সার দিয়ে পুকুরের পানির রঙ সবুজ করতে হবে। তারপর পুকুরে পোনা মজুদ করতে হবে ।


মো.  বোরহান উদ্দিন, গ্রাম : মল্লিকপাড়া  উপজেলা : শিবগঞ্জ, জেলা : বগুড়া
প্রশ্ন : পানির ওপর লাল স্তর পড়েছে, কীভাবে দূর    করব?

উত্তর : এগুলো এক ধরনের প্ল্যাংটন। এগুলোকে কাপড় দিয়ে টেনে অথবা ধানের খড় বা কলার পাতা দিয়ে দড়ি তৈরি করে টানা দিয়ে লাল স্তরটি তুলে ফেলতে হবে। এ সময় খাবার এবং রাসায়নিক সার বন্ধ রাখতে হবে। এছাড়া পুকুরের পানিতে পর্যাপ্ত সূর্যালোক যেন পৌঁছাতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য পুকুর পাড়ে যদি বড় বড় গাছ থাকে সেগুলোর ডালপালা কেটে দিতে হবে।


কৃষির যে কোনো প্রশ্নের উত্তর বা সমাধান পেতে বাংলাদেশের যে কোনো জায়গা থেকে যে কোনো মোবাইল থেকে কল করতে পারেন আমাদের কল সেন্টারের ১৬১২৩ এ নাম্বারে। শুক্রবার ও সরকারি ছুটি ব্যতীত যে কোনো দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ সময়ের মধ্যে। তাছাড়া কৃষিকথার গ্রাহক হতে বার্ষিক ডাক মাশুলসহ ৫০ টাকা মানি অর্ডারের মাধ্যমে পরিচালক, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫ এ ঠিকানায় পাঠিয়ে ১ বছরের জন্য গ্রাহক হতে পারেন। প্রতি বাংলা মাসের প্রথম দিকে কৃষিকথা পৌঁছে যাবে আপনার ঠিকানায়।

 

কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন*
*উপজেলা কৃষি অফিসার এলআর, সংযুক্ত কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা