Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর (মাঘ ১৪২৫)

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।

 

মো. সিরাজুল ইসলাম
গ্রাম: তাম্বুলখানা, উপজেলা: ফরিদপুর সদর, জেলা: ফরিদপুর
প্রশ্ন: সরিষার কাণ্ড পচা রোগ দমনে কি করণীয়?
উত্তর: সরিষার কাণ্ড পচা রোগটি বীজ ও মাটিবাহিত। সে কারণে জমিতে সরিষা বীজ বপনের আগে ভালো উৎস থেকে বীজ ক্রয় করা এবং জমির মাটি ভালোভাবে চাষ করা দরকার। যদি সরিষার আবাদকৃত জমিতে আগের বছরে এ রোগ হয়ে থাকে তবে জমি গভীরভাবে চাষ করা। তারপরও যদি জমিতে এ রোগ দেখা দেয় তবে ইপ্রোডিয়ন গ্রুপের যেমন: রোভরাল ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করা। স্প্রে করতে হবে সরিষা গাছের বাড়ন্ত পর্যায়, ফুল ও পড ধরার পর্যায়ে তাহলে সরিষার কাণ্ড পচা রোগটি হবে না। আপনি লাভবান হবেন।  

 

আব্দুল আহাদ
গ্রাম: খাটুরিয়া, উপজেলা: গোবিন্দগঞ্জ, জেলা: গাইবান্ধা
প্রশ্ন: চীনাবাদাম গাছের পাতায় লোহার মরিচার মতো দাগ পড়া  রোগের প্রতিকার করব কিভাবে?  
উত্তর:  চীনাবাদামের এ রোগটিকে চীনাবাদামের মরিচা রোগ বলে। এ রোগটি পাকসিনিয়া এরাচিডিস নামক ছত্রাকের কারণে হয়ে থাকে। সাধারণত বয়স্ক বাদাম গাছে এ রোগটি বেশি হয়ে থাকে। আর এতে বাদামের ফলন প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ কমে যায়। এ রোগ দমনে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হয় সেগুলো হলো-পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জমিতে চাষাবাদ ও রোগ প্রতিরোধী বাদামের জাত যেমন: ঝিঙা বাদাম চাষ করা। তারপরও যদি এ রোগের আক্রমণ দেখা যায় তবে প্রপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক টিল্ট/কন্টাফ/ক্রিজল ০.৫ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করতে হবে। ১৫ দিন পরপর কমপক্ষে তিন বার ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে এ রোগের প্রকোপ কমে যাবে। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখা দরকার সেটি হলো স্প্রের কাজটি অবশ্যই বিকেল বেলা করতে হবে নাহলে উপকারী পোকা মৌমাছি মারা যাবে এবং ফসলের পরাগায়ন ব্যাহত হবে।     

 

মো. আসাদুজ্জামান
গ্রাম: লাউযুতি, উপজেলা: ঠাকুরগাঁও সদর, জেলা: ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন:  মিষ্টিআলুর পাতায় এক ধরনের দাগ পড়ে গাছের আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে। কী করব?
উত্তর: মিষ্টিআলুর পাতার এ রোগকে ফিদারি মোটল রোগ বলে। এ রোগটি ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। জাবপোকার মাধ্যমে এ ভাইরাসটি ছড়ায়। সে কারণে বাহক পোকা অর্থাৎ জাবপোকা দমন করতে ইমিডাক্লোরপ্রিড গ্রুপের যেমন এডমায়ার, ইমিটাফ প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি মিশিয়ে সঠিক নিয়মে বিকেলের দিকে প্রতি ১৫ দিন পর পর  তিন বার স্প্রে করতে হবে। তাহলে এ  রোগ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে। এ রোগ হলে মিষ্টিআলুর ফলন মারাত্মকভাবে কমে যায়।    

 

ইছাহাক আলী
গ্রাম: সাকোয়া  উপজেলা: বোদা, জেলা: পঞ্চগড়
প্রশ্ন: পটোল গাছ থেকে কিভাবে শাখা কলম তৈরি করা যায়? জানাবেন।
উত্তর:  এক বছর বয়সী ভালো পটোল গাছের যেকোনো শাখার মাঝামাঝি অংশ থেকে শাখা কলম তৈরি করা যায়। সে ক্ষেত্রে এক মিটার বা দুইহাত লম্বা পরিমাণ শাখা পটোল গাছ থেকে সংগ্রহ করে রিং বা চুড়ি আকার তৈরি করে পিট বা মাদায় লাগানো হয়। পটোলের শাখা কলম ৫০ পিপিএম ইনডোল বিউটারিক এসিড বা আইবিএ দ্রবণে ৫ মিনিট ডুবিয়ে রেখে মাদায় বা পিটে লাগালে তাড়াতাড়ি বা বেশি সংখ্যক মূল গজায়। আর এভাবে পটলের উন্নতমানের শাখা কলম তৈরি করে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

 

মো. রুবেল ইসলাম
গ্রাম: খাটুরিয়া, উপজেলা: ডোমার, জেলা: নীলফামারী
প্রশ্ন:  চন্দ্রমল্লিকা ফুলে সাধারণত কি কি ধরনের রোগ হয়ে থাকে? প্রতিকার কী?
উত্তর: চন্দ্রমল্লিকা ফুলে সাধারণত পাউডারি মিলডিউ ও পাতায় দাগ পড়া রোগ হয়ে থাকে। পাউডারি মিলডিউ রোগ হলে চন্দ্রমল্লিকার পাতার ওপরে সাদা থেকে ধূসর গুঁড়ার মতো আবরণ পড়ে। পাতা আস্তে আস্তে কুঁকড়িয়ে বিকৃত হয়ে যায়। আর বেশি আক্রমণ হলে গাছ শুকিয়ে মারা যায়। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এ রোগ বেশি হয়। সে জন্য সঠিক রোপণ দূরত্ব অনুসরণ করা দরকার এছাড়া রোগের আক্রমণ বেশি হলে কার্বেনডাজিম গ্রুপের ব্যভিস্টিন বা সালটাফ ১/২ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পরপর ২ থেকে ৩ বার সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়। চন্দ্রমল্লিকা ফুল গাছের পাতায় দাগ পড়া  রোগের ক্ষেত্রে  নিচের পাতায় প্রথমে হলদে দাগ পড়ে। রোগের আক্রমণ বেশি হলে পাতার দাগগুলো বাদামি থেকে কালো দাগে পরিণত হয়। এ রোগ দমনেও কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন ব্যাভিস্টিন ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করা যায়।     

 

সুমন মজুমদার
গ্রাম: নারায়ণপুর, উপজেলা:  কেশবপুর, জেলা: যশোর
প্রশ্ন: লিচু গাছের পাতায় মাকড়ের আক্রমণ হলে কী করণীয়।
উত্তর: লিচু গাছের পাতা, ফুল ও ফলে মাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়। মাকড় আক্রমণ করলে পাতা কুঁকড়িয়ে যায় এবং পাতার নিচের দিক লাল মখমলের মতো হয়ে যায়। পাতা দুর্বল হয়ে মারা যায়। আক্রান্ত ডালে ফুল, ফল ও পাতা হয় না। এমনকি আক্রান্ত ফুলে ফল হয় না। রোগ দমনে ফল সংগ্রহের সময় মাকড় আক্রান্ত পাতা ডালসহ ভেঙে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। মাকড় দমনে মাকড়নাশক এবামেকটিন গ্রুপের যেমন ভার্মিটেক/এবাটিন/এ্যামবুশ প্রতি লিটার পানিতে ১-২ মিলি মিশিয়ে সঠিক নিয়মে নতুন পাতায় ১৫ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

 

মৎস্য বিষয়ক
ইমতিয়াজ আহমেদ

গ্রাম: ধল্লাপাড়া, উপজেলা: ঘাটাইল, জেলা: টাঙ্গাইল
প্রশ্ন: চিংড়ি মাছের মাথা হলুদ হয়ে গেছে কি করব?  
উত্তর: ভাইরাসের আক্রমণে এ রোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ রোগে চিংড়ির মাথা হলুদ বর্ণ ধারণ করে। চিংড়ির দেহ, ফুলকা, যকৃতও হলুদ হয়ে যায়। এ রোগের প্রকৃত কোনো চিকিৎসা নেই। এজন্য রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভালোভাবে মেনে চললে এ সমস্যার অনেকটুকু দূর করা যায়।

 

মো: সবুর আলী, গ্রাম: মাছহাড়ি, উপজেলা: কাউনিয়া, জেলা: রংপুর
প্রশ্ন: মাছের সেপরোলে গনিয়াসিস রোগ দেখা যাচ্ছে। এর প্রতিকার কী?
উত্তর: এটি ছত্রাকজনিত রোগ। সেপ্রোলেগনিয়া প্রজাতি এ রোগের কারণ। কার্পজাতীয় মাছে এ রোগটি বেশি হয়ে থাকে। আক্রান্ত মাছের ক্ষতস্থানে তুলার মতো ছত্রাক দেখা দেয় এবং পানির স্রোত যখন স্থির হয়ে যায় কিংবা বদ্ধ জলায় অথবা হ্যাচারি ট্যাংকে যেখানে অনিষিক্ত ডিমের ব্যাপক সমাগম ঘটে তাতে ছত্রাক রোগ দ্রুত বিস্তৃতি লাভ করে। হ্যাচারিতে লালনকৃত ডিমগুলোকে ২৫০ পিপিএম ফরমালিন দিয়ে ধৌত করতে হবে। খাঁচা ও আক্রান্ত মাছগুলোকে শতকরা ৫ ভাগ লবণ পানিতে ১ মিনিট গোসল করাতে হবে।

 

প্রাণিসম্পদ বিষয়ক
সুব্রত কুমার সরকার
গ্রাম: কেওয়াপূর্বখ-, উপজেলা: উল্লাপাড়া, জেলা: সিরাজগঞ্জ
প্রশ্ন: আমার ছাগলের বয়স আড়াই বছর। বিভিন্ন জায়গার মাংস শক্ত হয়ে গেছে। দাঁতে কপাট লাগে এবং খিচুনি দেখা দেয়। কোনো শব্দ শুনলে চমকে উঠে। এমতাবস্থায় কী করণীয়?
উত্তর: সাধারণত এ রোগের চিকিৎসায় তেমন ফল হয় না। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করতে পারলে ক্ষতস্থান অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে এবং মাংসে এটিএম ইনজেকশন দিতে হবে। এ ছাড়া উচ্চমাত্রায় পেনিসিলিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে। মাংসপেশি শিথিল করার জন্য ক্লোরাল হাইড্রেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ইনজেকশন দিতে হবে। খাসি করানো বা অন্য কোনো অস্ত্রোপচারের আগে ধনুষ্টংকার রোগের টিকা দিতে হবে। তাছাড়া যে কোনো অস্ত্রোপচার স্বাস্থ্যসম্মতভাবে করতে হবে।    

 

সহিদুল ইসলাম
গ্রাম: আলালিতাড়ি, উপজেলা: গাইবান্ধা সদর, জেলা: গাইবান্ধা
প্রশ্ন: আমার হাঁসের বাচ্চার বয়স ৮ সপ্তাহ। ডায়রিয়া হচ্ছে, শ্বসনতন্ত্রে গোলযোগ দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় কি করণীয়?
উত্তর: আপনার হাঁসের যে সমস্যার কথা লিখেছেন তার সমাধানের জন্য কট্টাভেট সাসপেনশন দিতে হবে সাথে ইলেকট্রোলাইট পাউডার অথবা স্যালাইন দিতে হবে।
(মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশ্ন কৃষি কল সেন্টার হতে প্রাপ্ত)

 

কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন

উপপ্রধান তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫, মোবাইল নং ০১৭১১১১৬০৩২,taufiquedae25@gmail.com