Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর ১৪২৬

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।

 

নাজমুল সরকার, গ্রাম : মাধবপাশা, উপজেলা : বাবুগঞ্জ, জেলা : বরিশাল

প্রশ্ন :  আদা গাছের কা- হলুদ হয়ে যায় এবং আদা পচে যায়। এ অবস্থায় কী করণীয়?
উত্তর :  এ সমস্যা দূরীকরণে একই জমিতে বার বার আদা চাষ করা যাবে না। এ ছাড়া আদা পচে যাওয়া রোধ করতে জমিতে আদা লাগানোর আগে ধানের/কাঠের গুঁড়া ও খড় দিয়ে আগুন লাগিয়ে জমিকে শোধন করতে হবে এবং জমিতে নিমের খৈল ২ টন প্রতি হেক্টরে প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যাবে।

 

কমল সরকার, গ্রাম : সুরগ্রাম, উপজেলা : গোপালগঞ্জ সদর, জেলা : গোপালগঞ্জ

প্রশ্ন : জলপাই ফলে দাদের মতো খসখসে দাগ পড়ে। বাজারে কম দাম পাই। সমস্যার সমাধান জানাবেন?  
উত্তর :  জলপাই গাছের গোড়ার মাটিতে বোরন নামক পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হলে জলপাই ফলের গায়ে দাদের মতো খসখসে দাগ পড়ে। আর এতে করে ফলের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায় এবং বাজারে দামও কম পাওয়া যায়। এ সমস্যা প্রতিকারে বর্ষার শেষ দিকে গাছপ্রতি ৫০ গ্রাম হারে বরিক এসিড বা ১০০ গ্রাম হারে বোরাক্স প্রয়োগ করতে হবে। এসব ব্যবস্থা নিলে আপনি উপকার পাবেন।  

 

মো: রাকিব, গ্রাম : চানপুর, উপজেলা : জগনাথপুর, জেলা : সুনামগঞ্জ

প্রশ্ন :   কদবেল গাছের ছাঁটাইকরণ সম্পর্কে জানাবেন।  
উত্তর :  কদবেল গাছের ছাঁটাইকরণ সাধারণত কদবেলের চারা/কলমের ছোট অবস্থায় করা হয়।  কারণ চারা/ কলমের ছোট অবস্থায় কদবেল গাছ ঝোপালো হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। সে কারণে চারা রোপণের পর গোড়ার দিকে ১.০ থেকে ১.৫ মিটার পর্যন্ত সমস্ত ডাল ছাঁটাই করতে হবে। তারপর কদবেল গাছের উপর দিকের চারপাশে ৪ থেকে ৫টি ডাল রেখে দিতে হবে যাতে করে কদবেল গাছের সুন্দর কাঠামো তৈরি হয়। তাছাড়া ফল সংগ্রহ শেষে গাছের অপ্রয়োজনীয় মড়া ও রোগাক্রান্ত ডালপালা ছেঁটে দেয়া প্রয়োজন। এভাবে কদবেল গাছ ছাঁটাই করলে সুফল পাবেন।     

 

মো: জাহিদ হাসান, গ্রাম : ভানরদীঘিপাড়া, উপজেলা : বালিয়াডাঙ্গি, জেলা : ঠাকুরগাঁও

প্রশ্ন : রাম্বুতান ফল গাছের বংশবিস্তার সম্পর্কে জানাবেন।
উত্তর :   অঙ্গজ বা বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করা যায়। তবে গাছের মাতৃগুণ বজায় রাখতে অঙ্গজ উপায়ে বংশবিস্তার করা উত্তম। কুঁড়ি সংযোজন, বায়বীয় দাবা কলম ও সংযুক্ত দাবা কলম পদ্ধতিতে রাম্বুতানের বংশবিস্তার করা যায়। এক থেকে দুই বছর বয়সী শাখা থেকে সুপ্ত কুঁড়ি সংগ্রহ করে ৮ থেকে ১২ মাস বয়সের রুটস্টকে সংযোজন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে সংযুক্ত দাবা কলম পদ্ধতির সফলতার হার বেশি। এ ছাড়া ১০০০ থেকে ১৫০০ পিপিএম ঘনত্বের আইবিএ ব্যবহার করে বায়বীয় দাবা কলম পদ্ধতির সফলতা বৃদ্ধি করা যায়।   

 

বাদল সাহা, গ্রাম : প্যারাডাইসপাড়া, উপজেলা : টাঙ্গাইল সদর, জেলা : টাঙ্গাইল

প্রশ্ন :  কামরাঙা ফল পচে যায় এবং গাছের পাতা ঝরে পড়ে। কী করণীয়?
উত্তর : কামরাঙা গাছের পাতা ও ফলে অ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এ রোগটি ছত্রাকের আক্রমণে হয়। এ রোগ হলে পাতা, ফুল ও ফলে ছোট ছোট বাদামি দাগ পড়ে। দাগগুলো আস্তে আস্তে বড় হয়ে কালো রঙ ধারণ করে এবং আক্রান্ত স্থান পচে যায়। এ রোগ দমনে আক্রান্ত পাতা, ফুল ও ফল সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। আর রোগ দেখা দিলে কার্বেনডাজিম গ্রুপের নোইন ৫ ডব্লিউপি প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন অন্তর ২ বা ৩ বার সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যাবে।

 

সুনীল চন্দ্র রায়, গ্রাম : তালুকগোলনা, উপজেলা : জলঢাকা, জেলা : নীলফামারী

প্রশ্ন :  বেগুন গাছের জাবপোকা দমন সম্পর্কে জানাবেন।  
উত্তর :  বেগুন গাছের জাবপোকা দমনের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয় সেগুলো হলো- বেগুন সংগ্রহের পর ফসলের অবশিষ্টাংশ নষ্ট করে ফেলা। আঠালো হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করা। এ ছাড়া বায়োনিম প্লাস ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত পাতায় স্প্রে করা। এ ছাড়াও ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের যেমন এডমায়ার প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি ভালোভাবে মিশিয়ে স্প্রে করলে উপকার পাবেন।

 

মৎস্য বিষয়ক
মোস্তাফিজুর রহমান, গ্রাম: বালাগ্রাম, উপজেলা : জলঢাকা, জেলা : নীলফামারী

প্রশ্ন : প্রোবায়োটিক কী? কিভাবে কাজ করে জানতে চাই।
উত্তর : ‘প্রোবায়োটিক’ এর সহজ অর্থ জীবনের জন্য’। গ্রিক শব্দ ‘প্রো’ অর্থাৎ ‘ফর’ বা ‘জন্য’ এবং ‘বায়োস’ অর্থাৎ লাইফ বা জীবন হতে প্রোবায়োটিক শব্দটির উৎপত্তি।  প্রোবায়োটিক হচ্ছে জীবন্ত অণুজীবের সমষ্টি, যা পোষক যেমনÑমাছ, চিংড়ি ইত্যাদি দেহের অভ্যন্তরে অথবা বাইরের পরিবেশে অর্থাৎ মাটি ও পানি অবস্থিত অণুজীবসমূহকে অনুকূলে পরিবর্তন করে। তাছাড়া প্রোবায়োটিকসমূহ খাদ্যের পুষ্টিমান বৃদ্ধিসহ এর পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রাণীদেহে রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে এবং প্রাণীদেহে বাইরে অবস্থিত সামগ্রিক পরিবেশের উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে প্রাণীর উপর উপকারী প্রভাব ফেলে। প্রোবায়োটিকের কাজ: প্রোবায়োটিকসমূহ এমন কিছু পদার্থ নিঃসরণ করে যা রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংস করে বা এদের বংশবিস্তার রোধ করে। প্রোবায়োটিকসমূহ খাদ্য ও বাসস্থানের জন্য রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুসমূহের সাথে প্রতিযোগিতা করে তাদের বিস্তার রোধ করে। পোষক দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। জলাশয়ের মাটি ও পানির গুণাগুণ বৃদ্ধি করে। জলাশয়ে ফাইটোপ্লাংটনের স্বাভাবিক উৎপাদন বজায় রাখার পাশাপাশি গুণগত মানও বৃদ্ধি করে। পোষক দেহে এনজাইম উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য হজমে সহায়তা করার পাশাপাশি এর সর্Ÿোচ্চ ব্যবহারও নিশ্চিত করে।   

 

আকতার হোসেন, গ্রাম : বিষ্ণুগ্রাম উপজেলা :  পাইকগাছা, জেলা : খুলনা

প্রশ্ন : চিংড়ির খোলস নরম হয়ে গেছে। কী করব?  
উত্তর : পুষ্টিকর খাদ্য, খাবারে ক্যালসিয়ামের অভাব এবং  পুকুরে দূষিত গ্যাস সৃষ্টি হলে এ রকম হয়। সে কারণে এ সমস্যার সমাধানে পুকুরের পানি পরিবর্তন করতে হবে এবং একরপ্রতি ৫০ কেজি ডলোমাইট চুন প্রয়োগ করতে হবে। এভাবে পুকুরে ব্যবস্থাপনা করলে আপনি উপকৃত হবেন।

 

প্রাণিসম্পদ বিষয়ক
আনোয়ার হোসেন, গ্রাম : জলিশা, উপজেলা : দুমকি, জেলা : পটুয়াখালী
প্রশ্ন : আমার বাছুরের বয়স ১৫ দিন। নাভী ফুলে গেছে। জ্বর আছে, নাভীতে পুঁজ হয়েছে। এমতাবস্থায় কী করণীয়?

উত্তর : নাভীর ক্ষতস্থান টিংচার-আয়োডিন দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। নাভী পেকে গেলে একটু কেটে সম্পূর্ণ পুঁজ বের করে ফেলতে হবে। পরে জীবাণুনাশকযুক্ত পানি দ্বারা পরিষ্কার করে কাটা জায়গার মধ্যে টিংচার আয়োডিনযুক্ত গজ ঢুকাতে হবে। একদিন পরপর এভাবে পরিষ্কার করে গজ ঢুকাতে হবে। এছাড়া পেনিসিলিন অথবা স্ট্রেপটোমাইসিন ইনজেকশন দিতে হবে।     

 

নকিব হাসান, গ্রাম : বালাপাড়া, উপজেলা : কাউনিয়া, জেলা : রংপুর
প্রশ্ন : আমার মুরগির খুব ডায়রিয়া হচ্ছে। ডানা ঝুলে পড়েছে। একদম নিস্তেজ হয়ে গেছে। কী করব?

উত্তর : অ্যামক্সাসিলিন অথবা সিপ্রোক্লক্সাসিন গ্রুপের ওষুধ খাওয়াতে হবে এবং সাথে ইলেকট্রোমিন পাউডার খাওয়াতে হবে।
(মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশ্ন কৃষি কল সেন্টার হতে প্রাপ্ত)

 

কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন


উপপ্রধান তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫, মোবাইল নং ০১৭১১১১৬০৩২, ঃধঁভরয়ঁবফধব২৫@মসধরষ.পড়স