Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর কৃষিবিদ ড. মো. তৌফিক আরেফীন

প্রশ্নোত্তর
কৃষিবিদ ড. মো. তৌফিক আরেফীন

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো. করিম মিয়া, গ্রাম: বাকতা, উপজেলা: ফুলবাড়িয়া, জেলা: ময়মনসিংহ।
প্রশ্ন : এক ধরনের পোকার আক্রমণে নারকেলের খোসাতে বেশ শক্ত দাগ এবং ফাটাফাটা দাগ দেখা যায়। কী করণীয়?
উত্তর : এ সমস্যাটি মাকড়ের আক্রমণে হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে নারকেল বাগান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি গাছে সুষম সার প্রয়োগ করা দরকার। এসবের পাশাপাশি এবামেকটিন গ্রুপের ১.২৫ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করলে এ ধরনের মাকড়ের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
মোঃ মতিন তালুকদার, গ্রাম: যাদবপুর, উপজেলা: আলমডাঙ্গা, জেলা: চুয়াডাঙ্গা।
প্রশ্ন: বাড়িতে একটা কাঁঠালগাছ আছে। কিন্তু কাঁঠাল পাকার আগে ফেটে যায়, কোষগুলোর গোড়ার দিকে শলার মতো হয় এবং রস কম হয়। এ অবস্থায় করণীয় কী ?
উত্তর: কাঁঠাল পাকার আগে ফেটে যায় শরীরবৃত্তীয় কারণে। আর বেশির ভাগ সময়েই এটি ঘটে থাকে সেচের অভাবে। সেজন্য ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত শুকনো মৌসুমে  ১৫ দিন অন্তর পানি সেচ দিলে কচি ফল ঝরা, ফলন ও ফলের গুণগত মান বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ফল ফেটে যাওয়াও রোধ হয়। তবে আরেকটি কথা মনে রাখা দরকার, কাঁঠাল গাছের জাতভেদে ফল অনেক সময়ই ফেটে যায়। সেজন্য গাছের নিয়মিত পরিচর্যা ও বর্ষার আগে ও পরে সুষম সার প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
মো. মতিউর রহমান, গ্রাম: লাউযুতি, উপজেলা: ঠাকুরগাঁও সদর, জেলা: ঠাকুরগাঁও।
প্রশ্ন:  মিষ্টি আলুর পাতায় এক ধরনের দাগ পড়ে গাছের আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে। কী করবো?
উত্তর: মিষ্টি আলুর পাতার এ রোগকে ফিদারি মোটল রোগ বলে। এ রোগটি ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। জাবপোকার মাধ্যমে এ ভাইরাসটি ছড়ায়। সে কারণে বাহক পোকা অর্থাৎ জাবপোকা দমন করতে ইমিডাক্লোরপ্রিড গ্রুপের, যেমন এডমায়ার প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি মিশিয়ে সঠিক নিয়মে বিকেলের দিকে প্রতি ১৫ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করতে হবে। তাহলে এ  রোগ দমন করা সম্ভব হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে এ রোগ হলে মিষ্টি আলুর ফলন মারাত্মকভাবে কমে যায়।    
মোঃ রহমত আলী, গ্রাম: সাকোয়া  উপজেলা: বোদা, জেলা: পঞ্চগড়।
প্রশ্ন: পটোল গাছ থেকে কিভাবে শাখা কলম তৈরি করা যায়? জানাবেন।
উত্তর:  এক বছর বয়সী ভালো পটোল গাছের যে কোন শাখার মাঝামাঝি অংশ থেকে শাখা কলম তৈরি করা যায়। সেক্ষেত্রে এক মিটার বা দু’হাত লম্বা পরিমাণ শাখা পটোল গাছ থেকে সংগ্রহ করে রিং বা চুড়ি আকার তৈরি করে পিট বা মাদায় লাগানো হয়। পটোলের শাখা কলম ৫০ পিপিএম ইনডোল বিউটারিক এসিড বা আইবিএ দ্রবণে ৫ মিনিট ডুবিয়ে রেখে মাদায় বা পিটে লাগালে তাড়াতাড়ি বা বেশি সংখ্যক মূল গজায়। আর এভাবে পটোলের উন্নতমানের শাখা কলম তৈরি করে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
প্রশ্ন: গাজরের পাতায় দাগ রোগ দমনে করণীয় কী ?
উত্তর: গাজরের পাতায় দাগ রোগ দমনে সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে। সেজন্য গাজরের বীজ শোধন করা দরকার। আর বীজ শোধনের জন্য কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন অটোস্টিন ৫০ ডব্লিউজি অথবা কার্বোক্সিন ও থিরাম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। শস্যপর্যায় অবলম্বনের পাশাপাশি সুষম সার প্রয়োগ করা দরকার। এছাড়া পাতায় দাগ দেখার সাথে সাথে ইপ্রোডিয়ন গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন রোভরাল ২ গ্রাম অথবা ডাইফেনোকোনাজল ও এ্যাজোক্সিস্ট্রবিন গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন এমিস্টার টপ ৩২৫ এসসি ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার সঠিক নিয়মে স্প্রে করতে হবে। আশাকরি আপনি উপকার পাবেন।
প্রশ্ন: মুলা গাছের পাতায় সাদা মরিচার মতো দাগ পড়ে কি করবো? জানাবেন।
উত্তর : এ ধরনের রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত পাতার নিচের দিকে সাদা ছত্রাকের দানা দেখা যায়। রোগের মাত্রা বেশি হলে পাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে। এ সমস্যারোধে আক্রান্ত পাতা ও গাছ সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে। পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি সুষম সার ও সময়মতো সেচ সুবিধা রাখা দরকার। জমিতে রোগ দেখা দিলে মেটালেক্সিল ও মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন রিডোমিল গোল্ড ২ গ্রাম অথবা প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলিলিটার ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পর পর মুলা গাছে ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে। তাহলেই আপনি সুফল পাবেন।
মৎস্য বিষয়ক
মো: খয়বর আলী, গ্রাম: মাছহাড়ি, উপজেলা: কাউনিয়া, জেলা: রংপুর।
প্রশ্ন: মাছের সেপরোলে গনিয়াসিস রোগ দেখা যাচ্ছে। এর প্রতিকার কি?
উত্তর: এটি ছত্রাকজনিত রোগ। সেপরোলেগনিয়া প্রজাতি এ রোগের কারণ। কার্পজাতীয় মাছে এ রোগটি বেশি হয়ে থাকে। আক্রান্ত মাছের ক্ষতস্থানে তুলার ন্যায় ছত্রাক দেখা দেয় এবং পানির স্রোত যখন স্থির হয়ে যায় কিংবা বদ্ধ জলায় অথবা হ্যাচারি ট্যাংকে যেখানে অনিষিক্ত ডিমের ব্যাপক সমাগম ঘটে তাতে ছত্রাক রোগ দ্রুত বিস্তৃতি লাভ করে। হ্যাচারিতে লালনকৃত ডিমগুলোকে ২৫০ পিপিএম ফরমালিন দিয়ে ধৌত করতে হবে। খাঁচা ও আক্রান্ত মাছগুলোকে শতকরা ৫ ভাগ লবণ পানিতে ১ মিনিট গোসল করাতে হবে।
শেফালী খাতুন, গ্রাম: সারানপুর, উপজেলা:  গোদাগাড়ী, জেলা: রাজশাহী।
প্রশ্ন: রুই মাছে সাদা দাগ রোগ হয়েছে। কী করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবো?
উত্তর : এ রোগে মাছের পাখনা, কানকো ও দেহের উপর সাদা দাগ দেখা যায়। মাছের ক্ষুধামন্দা এবং দেহের স্বাভাবিক পিচ্ছিলতা লোপ পেয়ে খসখসে হয়ে যায়। ইকথায়োপথেরিয়াস প্রজাতি এ রোগের কারণ। এ রোগ প্রতিকারে ১ পিপিএম তুঁতে পানিতে গোসল দেয়া কিংবা শতকরা ২.৫ ভাগ লবণ পানিতে কয়েক মিনিটের জন্য রাখা যতক্ষণ পর্যন্ত মাছ লাফিয়ে না পড়ে। এছাড়া এ ধরনের রোগ যাতে না হয় সেজন্য শামুকজাতীয় প্রাণী পুকুর থেকে সরিয়ে ফেলা। শতকরা ২.৫ ভাগ লবণ পানিতে ৫-৭ মিনিট গোসল দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে পোনা মজুদ করতে হয়। তাছাড়া রোদে শুকনা জাল পুকুরে ব্যবহার করাও দরকার। আরেকটি বিষয় অনুসরণীয় সেটি হলো মাছের স্বাভাবিক সংখ্যা বজায় রেখে অতিরিক্ত মাছ সরিয়ে নেয়া।
প্রাণিসম্পদ বিষয়ক
মো. কালাম, গ্রাম: কালের কাঠি, উপজেলা: বাকেরগঞ্জ, জেলা: বরিশাল।
প্রশ্ন: আমার কোয়েল পাখি আছে। পাখি খুঁড়িয়ে হাঁটছে এবং এ সময় নখ বাঁকা দেখা যাচ্ছে। কী করবো ?
উত্তর: ভিটামিন বি-২ যুক্ত প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন- প্রাণীর যকৃত, সবুজ কচিঘাস, প্রাণীর কিডনি বা মাছের গুঁড়া ইত্যাদি অথবা ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স খাওয়াতে হবে। তাহলে আপনার কোয়েল পাখির উল্লিখিত সমস্যা দূর হয়ে যাবে।  
মো: ফারুক হোসেন, গ্রাম: রনসিয়া, উপজেলা: পীরগঞ্জ, জেলা: ঠাকুরগাঁও।
প্রশ্ন: গরুর গা খসখসে এবং ঘা হচ্ছে। এ অবস্থায় কি করণীয়?
উত্তর: ইনজেকশন ভারমিক প্রতি ২৫ কেজি গরুর দেহের ওজনের জন্য ১সিসি ১বার চামড়ার নিচে পুশ করতে হবে। যদি সমস্যাটি বেশি হয় তবে ৭ দিন পর বুস্টার ডোজ আবারও ১ বার দিতে হবে। এ ছাড়া ইনজেকশন অ্যাসটাভেট ১০০ কেজি গরুর দেহের ওজনের জন্য ৫সিসি. করে দৈনিক ১ বার ৩ থেকে ৫ দিন মাংসে পুশ করতে হবে এবং ইনজেকশন অ্যামক্সিভেট ১ ভায়েল করে রোজ ১বার ৩দিন মাংসে পুশ করতে হবে। এসব ব্যবস্থা নিলে আপনার গরুর সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
(মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশ্ন কৃষি কল সেন্টার হতে প্রাপ্ত)
কৃষির যে কোনো প্রশ্নের উত্তর বা সমাধান পেতে বাংলাদেশের যে কোনো জায়গা থেকে যে কোনো মোবাইল থেকে কল করতে পারেন আমাদের কৃষি কল সেন্টারের ১৬১২৩ এ নাম্বারে।

লেখক : উপপরিচালক (হর্টিকালচার), জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা), কৃষি মন্ত্রণালয়। মোবাইল : ০১৭১১১১৬০৩২, মেইল: taufiquedae25@gmail.com

প্রশ্নোত্তর কৃষিবিদ ড. মো. তৌফিক আরেফীন

প্রশ্নোত্তর
কৃষিবিদ ড. মো. তৌফিক আরেফীন

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো. জাহাঙ্গীর আলম, গ্রাম : এলাইগা, উপজেলা : পীরগঞ্জ, জেলা : ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন : লেবু গাছে এক ধরনের পোকা পাতায় আঁকাবাঁকা সুরঙ্গ তৈরি করে। এ পোকা দমনে কী করণীয় ?
উত্তর : এ পোকাকে লিফ মাইনর পোকা বলে। লেবুজাতীয় ফসলের জন্য এ পোকা মারাত্মক। এ পোকার আক্রমণ বেশি হলে পাতা কুঁকড়ে যায় ও বিবর্ণ হয়ে ঝরে পড়ে। এমনকি আক্রান্ত পাতায় ক্যাংকার হয়ে গাছ দুর্বল হয় এবং গাছের বাড়বাড়তি কমে যায়। এ পোকা দমনে পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করা দরকার। আর প্রাথমিক অবস্থায় লার্ভাসহ আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হয়। তারপরও যদি পোকার আক্রমণ বেশি হয় তবে ১ লিটার পানিতে ০.২৫ মিলি এমিয়ার বা ২ মিলি কিনালাক্স ২৫ ইসি মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর ৩ থেকে ৪ বার কচি পাতায় স্প্রে করতে হবে। তবেই আপনি উপকার পাবেন।  
মোঃ অমির অলী, গ্রাম: করোলিয়া, উপজেলা: তেরখাঁদা, জেলা: খুলনা
প্রশ্ন : করলা গাছের কচি পাতায় এক ধরনের পোকা পাতার রস চুষে খায়। ফলে গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। কী করব?  
উত্তর :  সাধারণত করলার জাব/জ্যাসিড পোকার আক্রমণ হলে এ সমস্যা হয়ে থাকে। এ পোকা দমনের জন্য জৈব বালাইনাশক যেমন : বাইকাও ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া পোকার আক্রমণ বেশি হলে ইমিডাক্লোরপ্রিড গ্রুপের এমিটাফ/টিডো/ এডমায়ার ০.৫ মিলি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে উপকার পাবেন।  
মো: রহমত হোসেন, গ্রাম : কেরাদারি, উপজেলা : রাজারহাট, জেলা : কুড়িগ্রাম
প্রশ্ন : এক প্রকার রোগের কারণে মরিচ গাছ এক পাশে বা সম্পূর্ণ গাছ ঢলে পড়ে। এমনকি গাছও মারা যাচ্ছে। এ সমস্যার সমাধান জানাবেন।   
উত্তর :  এ রোগে আক্রান্ত মরিচ গাছ সম্পূর্ণ তুলে ফেলে নষ্ট করতে হবে। তবে সুস্থ গাছ হতে বীজ সংগ্রহ করলে এ সমস্যা কমে যায়। আর মরিচ গাছ লাগানোর আগে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ব্যাভিস্টিন/নোইন বা প্রোভেক্স ২০০ মিশিয়ে চারা শোধন করা যায়। তাহলে এ ধরনের সমস্যা দূর হবে।       
মো: ইছাহাক হোসেন, গ্রাম : বামনডাঙ্গা, উপজেলা : আশাশুনি, জেলা : সাতক্ষীরা
প্রশ্ন : বেগুনের ঢলে পড়া রোগ দমনের পরামর্শ চাই।
উত্তর : বেগুনের ঢলে পড়া রোগ হলে আক্রান্ত গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। এ রোগে বেগুন গাছের এক প্রান্ত ঢলে পড়ে এবং পরবর্তীতে সম্পূর্ণ গাছটি ঢলে পড়ে ও মারা যায়। এ সমস্যা রোধে বেগুন গাছের জমিতে শস্যপর্যায় অবলম্বন করা দরকার। দুই একটি গাছ এ অবস্থায় দেখা দিলে তা তুলে ফেলে গর্তে পুতে রাখা দরকার। পরবর্তীতে কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন নোইন দ্বারা বীজ শোধন করলে এ রোগ কম হবে। এ ছাড়া জমি চাষের আগে প্রতি শতক জমিতে ১ থেকে ২ কেজি ডলো চুন ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। আর যদি রাসায়নিকভাবে দমনের প্রয়োজন হয় তবে আক্রান্ত গাছে কপার হাইড্রোক্সাইড গ্রুপের যেমন চ্যাম্পিয়ন ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যাবে।   
মো.  পান্না মিয়া, গ্রাম : পিরোজপুর, উপজেলা : মেহেরপুর সদর, জেলা : মেহেরপুর
প্রশ্ন :  পান গাছে এক ধরনের কালো মাছি পোকা আক্রমণ করেছে। এ অবস্থায় কী করণীয় ?
উত্তর : পান গাছের কালো মাছি পোকা পূর্ণ বয়স্ক ও কীড়া উভয় অবস্থায় ক্ষতি করে থাকে। পান পাতার রস চুষে খায় এবং পাতা হালকা বাদমি রঙের হয়। সেজন্য পোকার আক্রমণ হলে আক্রান্ত পাতা ধ্বংস করা দরকার। পানের বরজ ও আশপাশ পরিষ্কার রাখাও জরুরি। কিন্তু পোকার আক্রমণ বেশি হলে টলস্টার মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিকভাবে স্প্রে করলে এ পোকা দমন করা সহজ হবে।  
মৌমিতা রায়, গ্রাম : মৌতলা, উপজেলা : কালিগঞ্জ, জেলা : সাতক্ষীরা
প্রশ্ন : মুগ ডালের পাতায় পাউডারের মতো দাগ দেখা যায় এবং পাতাগুলো কালোও দেখায়। এ অবস্থায় কী করণীয়?   
উত্তর : এ ধরনের রোগকে পাউডারি মিলডিউ বলে। আমাদের দেশে খরিফ-২ মৌসুমে এটি বেশি দেখা যায়। এ রোগে পুরো পাতা আক্রান্ত হয়। পরবর্তীতে পাতা, কাণ্ড ও ফুল-ফলে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। পাতার উপরে সাদা পাউডার ধীরে ধীরে ছাই রঙ ধারণ করে। এ রোগের কোনো প্রতিরোধী জাত নেই। তবে ভাদ্র মাসের শুরু থেকে আশি^ন মাসের ১ম সপ্তাহে বোনা ফসলে এ রোগের পরিমাণ কম হয়। এ রোগ দমনে প্রপিকোনাজল গ্রুপের যেমন টিল্ট/প্রাউড প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি মিশিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করলে উপকার পাওয়া যায়।
মৎস্য বিষয়ক
মো. লিটন মিয়া, গ্রাম : ফুলবাড়ি, উপজেলা : গোবিন্দগঞ্জ, জেলা : গাইবান্ধা
প্রশ্ন : কাতলা মাছের ফুলকার উপর বাদামি গুটি দেখা যাচ্ছে ও ফুলকা পচে যাচ্ছে। কিছু মাছ মারাও যাচ্ছে। কী করব?
উত্তর : এ রোগের নাম মিক্সোবলিয়াসিস। মিক্সোবলাস প্রজাতির এক ধরনের এককোষী প্রাণী রুইজাতীয় মাছের বিশেষ করে কাতলা মাছের ফুলকার উপর সাদা বাদামি গুটি তৈরি করে। এত করে ওই গুটির প্রভাবে ফুলকায় ঘা দেখা যায় ও ফুলকা খসে পড়ে। শ^াস প্রশ^াসের ব্যাঘাত ঘটার কারণে মাছ অস্থিরভাবে ঘোরাফেরা করে ও শেষ রাতের দিকে ব্যাপক মড়ক দেখা যায়। অদ্যাবধি এ রোগের কোনো চিকিৎসা সরাসরি আবিষ্কৃত হয় নি। তারপরও শতকপ্রতি ১ কেজি হারে চুন দিলে পানির অম্লত্ব দূর হয়ে পরজীবীগুলো অদৃশ্য হয়ে যায় ও মাছ নিষ্কৃতি লাভ করে।
মোঃ অনোয়ার হোসেন, গ্রাম : চরপাড়া, উপজেলা : নান্দাইল, জেলা : ময়মনসিংহ
প্রশ্ন : মাছ পেট ফুলে মারা যাচ্ছে। কী করব ?
উত্তর : অ্যারোমনাডস জাতীয় ব্যাকটেরিয়া এ রোগের কারণ। এ রোগে মাছের দেহের রঙ ফ্যাকাশে হয়ে পানি সঞ্চালনের মাধ্যমে মাছের পেট ফুলে উঠে। ফলে মাছ ভারসাম্যহীনভাবে চলাফেরা করে ও পানির উপর ভেসে থাকে। ফলে অচিরেই মাছ মারা যায়। আক্রান্ত মাছকে প্রতি কেজি খাবারের সাথে মেট্রোনিডাজল/অক্সিটেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ মিশিয়ে সাত দিন খাওয়াতে হবে। অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ২০ থেকে ১০০ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫দিন ব্যবহার করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।   
প্রাণিসম্পদ বিষয়ক
মোছাঃ শেফালী বেগম, গ্রাম : বাইয়ারা, উপজেলা : সোনাইমুড়ি, জেলা : নোয়াখালী
প্রশ্ন : আমার ছাগলের বয়স ২ বছর। ছাগল প্রথমে দাঁড়ানো অবস্থায় চতুর্দিকে ঘুরছিল। শরীর কাঁপছিল, পাতলা পায়খানা হচ্ছিল। পেট ব্যথার কারণে শুয়ে পা ছোড়াছোড়ি করছিল এবং কিছু সময় পরেই মারা গেল। এ অবস্থায় কী করণীয় ?
উত্তর : যেহেতু এ রোগ হলে হঠাৎ করে মারা যায়। সেজন্য সাধারণত কোনো চিকিৎসা করা যায় না। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগ শনাক্ত করা গেলে এট্টোফিন সালফেট ইনজেকশন ৩ মিলি ৬ ঘন্টা পর পর এবং শিরায় অ্যালাইল দিলে অনেক ক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া যায়। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অসুস্থ ছাগলকে সুস্থ ছাগল থেকে আলাদা করে রাখা এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত দানাদার খাদ্য সরবরাহ না করা।
মোঃ ফজলুল হক, গ্রাম : হজরতপুর, উপজেলা : ফুলবাড়ী, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : আমার লেয়ার মুরগিগুলো নিজেদের মধ্যে খুব ঠোকরাঠুকরি করছে এবং দেহের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় কী করণীয়?    
উত্তর : এদেরকে ঠোঁট কাটতে হবে অর্থাৎ ডিবিকিং। খামারে যথাযথ আলো ও প্রাকৃতিক বাতাস প্রবেশ করা নিশ্চিত করতে হবে। বাচ্চার ৬ থেকে ১০ দিন বয়সে ঠোঁট কাটা, ঘরে লাল আলো ব্যবহার, আলোর তীব্রতা কমানো ও প্রতিটি মুরগির জন্য পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। ইলেকট্রোলাইট ও মিনারেলের ঘাটতি দুর করার জন্য ইলেকট্রোমিন পাউডার ও ক্যালপি পাউডার খাওয়াতে হবে।
(মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশ্ন কৃষি কল সেন্টার হতে প্রাপ্ত এবং কৃষির যে কোনো প্রশ্নের উত্তর বা সমাধান পেতে বাংলাদেশের যে কোনো জায়গা থেকে যে কোনো মোবাইল থেকে কল করতে পারেন কৃষি তথ্যসার্ভিসের কৃষি কল সেন্টার ১৬১২৩ এ নাম্বারে)। য়

উপপ্রধান তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫,  ফোন নং: ০২-৫৫০২৮৪০০, ই মেইল :taufiquedae25@gmail.com