Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর (মাঘ)

প্রশ্নোত্তর
কৃষিবিদ ড. মো. তৌফিক আরেফীন

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের  জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুণ।
আরিফ মণ্ডল, গ্রাম: কালিগঞ্জ, উপজেলা: জলঢাকা, জেলা: নীলফামারী
প্রশ্ন: আলুর কাটুই পোকা দমন সম্পর্কে জানাবেন।  
উত্তর:  এই পোকার কীড়া দিনে মাটির নিচে লুকিয়ে থাকে এবং রাতে চারা গাছ কেটে দেয়। এ ছাড়া আলুতে ছিদ্র করে আলু ফসলের ক্ষতি করে। আক্রান্ত কাটা আলু গাছ দেখে তার কাছাকাছি মাটি উল্টে-পাল্টে কীড়া খুঁজে সংগ্রহ করে মেরে ফেলা দরকার। কাটুই পোকার উপদ্রব কমানোর জন্য কার্বোফুরান গ্রুপের যেমন ফুরাডান ৫জি প্রতি হেক্টরে ২০ কেজি জমি তৈরির সময় এবং শেষ সেচের পূর্বে প্রয়োগ করলে এই পোকার আক্রমণ কমে যায়। এ ছাড়া প্রতি লিটার পানির সাথে ক্লোরোপাইরফস ২০ ইসি জাতীয় কীটনাশক ৫ মিলি হারে মিশিয়ে গাছের গোড়া ও মাটিতে স্প্রে করে ভিজিয়ে দিতে হবে। আর এ কাজটি আলু লাগানোর ৩০-৪০ দিন পর করতে হবে। আশা করি এসব ব্যবস্থা নিলে আপনি উপকার পাবেন।  

 

মো. সিরাজুল ইসলাম, গ্রাম: তাম্বুলখানা, উপজেলা: ফরিদপুর সদর, জেলা: ফরিদপুর
প্রশ্ন: সরিষার কাণ্ডপচা রোগ দমনে কী করণীয় ?
উত্তর: সরিষার কাণ্ডপচা রোগটি বীজ ও মাটিবাহিত। সে কারণে জমিতে সরিষা বীজ বপনের আগে ভালো উৎস থেকে বীজ ক্রয় করা এবং সরিষা চাষের জমির মাটি ভালোভাবে চাষ করা দরকার। এ ছাড়া যদি সরিষার আবাদকৃত জমিতে আগের বছরে এ রোগ হয়ে থাকে তবে জমি গভীরভাবে চাষ করা। তারপরও যদি জমিতে এ রোগ দেখা দেয় তবে ইপ্রোডিয়ন গ্রুপের যেমন: রোভরাল ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করা। আর এ স্প্রে করতে সরিষা গাছের বাড়ন্ত পর্যায়, ফুল ও পড ধরার পর্যায়ে তাহলে সরিষার কাণ্ডপচা রোগটি হবে না। আপনি লাভবান হবেন।  

 

হামিদ হোসেন, গ্রাম: পাটগা মুন্সিপাড়া, উপজেলা: রানীশংকৈল, জেলা: ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন:  জমিতে পেঁয়াজ পচা রোধে কী করব?
উত্তর: সুস্থ ও রোগমুক্ত বীজ ও চারা রোপণ করতে হবে। এ ছাড়া আক্রান্ত গাছগুলো তুলে ধ্বংস করতে হবে। পানি নিকাশের জন্য ড্রেন রাখার পাশাপাশি রোগের লক্ষণ দেখা দিলে কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন- প্রোভ্যাক্স-২০০, নোইন বা ব্যাভিস্টিন প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম করে মিশিয়ে পেঁয়াজ গাছের গোড়াতে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। প্রতি ৭ থেকে ১০ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার সঠিক নিয়মে আপনি ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে উপকার পাবেন।    


ইছাহাক আলী, গ্রাম: সাকোয়া  উপজেলা: বোদা, জেলা: পঞ্চগড়
প্রশ্ন: লেটুস চাষাবাদে সারের প্রয়োগ মাত্রা সম্পর্কে জানাবেন।
উত্তর:  লেটুস চাষাবাদের জন্য হেক্টরপ্রতি ১০ টন গোবর, ২০০ কেজি ইউরিয়া, ৭৫ কেজি এমওপি ও টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হয়। লেটুস স্বল্পমেয়াদি ফসল বিধায় সব সার ফসল লাগানোর আগে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতিভেদে ইউরিয়ার এক অংশ উপরিপ্রয়োগ করতে হয় এবং ফসলে নিয়মিত সেচ দিতে হয়। এভাবে সার প্রয়োগ করলে আপনি সুফল পাবেন।

 

সুমন মজুমদার, গ্রাম: নারায়ণপুর, উপজেলা:  কেশবপুর, জেলা: যশোর
প্রশ্ন: লিচু গাছের পাতায় মাকড়ের আক্রমণ হলে কী করণীয়?
উত্তর: লিচু গাছের পাতা, ফুল ও ফলে মাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়। মাকড় আক্রমণ করলে পাতা কুঁকড়িয়ে যায় এবং পাতার নিচের দিক লাল মখমলের মতো হয়ে যায়। পাতা দুর্বল হয়ে মারা যায়। আক্রান্ত ডালে ফুল, ফল ও পাতা হয় না। এমনকি আক্রান্ত ফুলে ফল হয় না। রোগ দমনে ফল সংগ্রহের সময় মাকড় আক্রান্ত পাতা ডালসহ ভেঙে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। মাকড় দমনে মাকড়নাশক
এবামেকটিন গ্রুপের যেমন ভার্টিমেক/এবাটিন প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি মিশিয়ে সঠিক নিয়মে নতুন পাতায় ১৫ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
 

মো. রুবেল ইসলাম, গ্রাম: খাটুরিয়া, উপজেলা: ডোমার, জেলা: নীলফামারী
প্রশ্ন:  চন্দ্রমল্লিকা ফুলে সাধারণত কী কী ধরনের রোগ হয়ে থাকে? প্রতিকার কী?
উত্তর: চন্দ্রমল্লিকা ফুলে সাধারণত পাউডারি মিলডিউ ও পাতায় দাগ পড়া রোগ হয়ে থাকে। পাউডারি মিলডিউ রোগ হলে চন্দ্রমল্লিকার পাতার উপরে সাদা থেকে ধুসর গুঁড়ার মতো আবরণ পড়ে। পাতা আস্তে আস্তে কুঁকড়িয়ে বিকৃত হয়ে যায়। আর বেশি আক্রমণ হলে গাছ শুকিয়ে মারা যায়। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এ রোগ বেশি হয়। সেজন্য সঠিক রোপণ দূরত্ব অনুসরণ করা দরকার এ ছাড়া রোগের আক্রমণ বেশি হলে কার্বেনডাজিম গ্রুপের ব্যাভিস্টিন বা সালটাফ ১/২ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পরপর ২ থেকে ৩ বার সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়। চন্দ্রমল্লিকা ফুল গাছের পাতায় দাগ পড়া  রোগের ক্ষেত্রে  নিচের পাতায় প্রথমে হলদে দাগ পড়ে। রোগের আক্রমণ বেশি হলে পাতার দাগগুলো বাদামি থেকে কালো দাগে পরিণত হয়। এ রোগ দমনেও কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন ব্যাভিস্টিন ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে এ রোগ সহজে দমন করা যায়।   

 
মৎস্যসম্পদ

মো. আলমগীর কবির, গ্রাম: নকিপুর, উপজেলা: শ্যামনগর, জেলা: সাতক্ষীরা
প্রশ্ন: মাছের পেট ফুলে গিয়েছে কী করব?
উত্তর : নিম্নমানের খাবারের উপাদান বা খাবারের ব্যবহার, খাবারের ডাইজেশন কম হওয়া এবং  ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এই রোগ হয়। মাছের  খাবার গ্রহণের অনীহা, পানির  উপরে ভাসতে থাকা ও মাছের পেট অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যাওয়া। মাছকে পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবার  সরবরাহ করতে হবে, পুকুরে প্রতি শতাংশে ২০ গ্রাম টিমসেন ব্যবহার  করতে হবে, খাবারের সাথে অক্সিটেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে ও পুকুরে গ্যাস নিয়ন্ত্রণের জন্য মেট্রিক্স ব্যবহার করতে হবে।

 

মো. জিয়াউর রহমান, গ্রাম: টেপিবাড়ি, উপজেলা: ভুয়াপুর, জেলা: টাঙ্গাইল
প্রশ্ন: মাছের  দেহে সাদা দাগ বা ফুটকি রোগ দেখা যাচ্ছে। এর প্রতিকার কী?
উত্তর: মাছের মাথা, পৃষ্ঠদেশ ও পাখনায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোলাকার সাদা দাগ বা ফুটকি দেখা দিলে মাছের দেহে অতিরিক্ত পিচ্ছিল পদার্থ জমা হয়। মাছ অলসভাবে চলাফেরা করে এবং মাছ খাদ্য গ্রহণ করে না। বেশি আক্রান্ত হলে মাছগুলো দ্রুত মারা যায়। এ জন্য আক্রান্ত মাছকে ২ থেকে ৩% লবণ পানিতে ৩০ মিনিট বা ৫% অ্যামোনিয়াম সালফেট দ্রবণে ১ মিনিট ডুবিয়ে রেখে পুকুরে ছাড়তে হবে। এছাড়া এ সমস্যা রোধে পুকুর প্রস্তুতির সময় পরিমিত পরিমাণ চুন প্রয়োগ করতে হবে। আর নিরাময় পুকুরের প্রতি শতকে ১ মিটার গভীরতার জন্য ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম পটাশিয়াম প্যারম্যাঙ্গানেট পানিতে গুলে পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। তবে আপনি ভবিষ্যতে এ  রোগ থেকে রেহাই পাবেন।

 

প্রাণিসম্পদ
জাহাঙ্গীর আলম গ্রাম : খালিশপুর, উপজেলা:  পাবনা সদর, জেলা: পাবনা
প্রশ্ন: আমার গাভীর গর্ভধারণের ৫ মাস পর গর্ভপাত হয়ে যায়। এভাবে ২ বার হয়েছে। এমতাবস্থায় কী করণীয় ?
উত্তর: আক্রান্ত গাভীকে জেন্টামাইসিন অথবা অক্সিটেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ইনজেকশন দিতে হবে সাথে এন্টিহিস্টামিনিক গ্রুপের ইনজেকশন দিতে হবে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে খামারের বা বাড়িতে নতুন পশু আমদানির ক্ষেত্রে প্রথমে আলাদা স্থানে রেখে রোগ নির্ণয় করে জীবাণুর উপস্থিতি নিশ্চিত হলে পশুকে মেরে ফেলে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। ব্রসেলা আক্রান্ত পশু পরীক্ষা করতে হলে পরীক্ষার আগে ও পরে হাত জীবাণুনাশক দ্বারা ধৌত করতে হবে। ব্রুসেলা আক্রান্ত পশুর চারপাশের পরিবেশ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে।     

 

রাজন রয়, গ্রাম: নিন্দুয়ার, উপজেলা: বালিয়াডাঙ্গি, জেলা: ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন: আমার টার্কির বয়স ৩ মাস। সবুজ রঙের পায়খানা হচ্ছে। মুখ দিয়ে লালা ঝরছে। কী করব?
উত্তর: সিফ্লোফ্লক্সাসিন অথবা ডেন্টামাইসন গ্রুপের ওষুধ খাওয়াতে হবে। সাথে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। টার্কিকে ফাউল কলেরার ভ্যাকসিন দিতে হবে।
(মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশ্ন কৃষি কল সেন্টার হতে প্রাপ্ত)
কৃষির যে কোন প্রশ্নের উত্তর বা সমাধান পেতে বাংলাদেশের যে  কোন জায়গা থেকে যে কোনো মোবাইল থেকে কল করতে পারেন আমাদের কৃষি কল সেন্টারের ১৬১২৩ নাম্বারে।
 
*উপপরিচালক (হর্টিকালচার), জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা), কৃষি মন্ত্রণালয়, মোবাইল : ০১৭১১১১৬০৩২, ই-মেইল :  taufiquedae25@gmail.com