Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কার্তিক মাসের কৃষি তথ্য ও প্রযুক্তি

কার্তিক মাসের কৃষি তথ্য ও প্রযুক্তি
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন
আমন ধান
   আমন ধান পেকে গেলে রোদেলা দিন দেখে রিপার/কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে কম খরচে, স্বল্প সময়ে ধান সংগ্রহ করুন।
    বীজ ধানের জন্য সুস্থ সবল ভালো ফলন দেখে ফসল নির্বাচন করুন। এরপর কেটে, মাড়াই-ঝাড়াই করার পর রোদে ভালোমতো শুকিয়ে ছায়ায় রেখে ঠা-া করে বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করুন।
    বীজ রাখার পাত্রটিকে মাটি বা মেঝের উপর না রেখে পাটাতনের উপর রাখুন।
    পোকার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে ধানের সাথে নিম, নিসিন্দা, ল্যান্টানার পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে মিশিয়ে দিন।
গম
    কার্তিক মাসের দ্বিতীয় পক্ষ থেকে গম বীজ বপনের প্রস্তুতি নিন।
    অধিক ফলনের জন্য গমের আধুনিত জাত যেমন- বারি গম-২৪, বারি গম-২৫, বারি গম-২৮, বারি গম-৩০, বারি গম-৩২, বারি গম-৩৩ অথবা ডব্লিউএমআরআই গম-১, ডব্লিউএমআরআই গম-২, ডব্লিউএমআরআই গম-৩ আবাদ করুন।
    খরচ ও সময় কমাতে বেড প্লান্টারের মাধ্যমে বীজ বপন করুন।
    বীজ বপনের আগে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নিন।
    বীজ বপনের ১৩-২১ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ প্রয়োজন এবং এরপর প্রতি ৩০-৩৫ দিন পর ২ বার সেচ দিলে খুব ভাল ফলন পাওয়া যায়।
আখ
    আখ রোপণের জন্য সারি থেকে সারির দূরত্ব ৯০ সেমি. থেকে ১২০ সেমি. এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৬০ সে.মি রাখুন। এতে বিঘাপ্রতি ২২০০-২৫০০টি চারার প্রয়োজন হয়।
ভুট্টা
    অধিক ফলনের জন্য বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪, হাইব্রিড ভুট্টা-১৫, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৬ ও বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৭ আবাদ করুন। বীজ বপনে বেড প্লান্টার ব্যবহার করুন।
সরিষা ও অন্যান্য তেল ফসল
    সরিষার প্রচলিত জাতগুলোর মধ্যে বারি সরিষা-১১, বারি সরিষা-১৩, বারি সরিষা-১৬, বারি সরিষা-১৭, বারি সরিষা-১৮, বারি সরিষা-১৯, বিনাসরিষা-৪. বিনাসরিষা-৭, বিনাসরিষা-৯, বিনাসরিষা-১০ ও বিনাসরিষা-১১ উল্লেখযোগ্য।
    বিঘাপ্রতি ৩৩-৩৭ কেজি ইউরিয়া, ২২-২৪ কেজি টিএসপি, ১১-১৩ কেজি এমওপি, ২০-২৪ কেজি জিপসার ও ১ কেজি দস্তা সারের প্রয়োজন হয়।
    সরিষা ছাড়াও অন্যান্য তেল ফসল যেমন- তিল, তিসি, চীনাবাদাম, সূর্যমুখী এ সময় চাষ করা যায়।
আলু
    রপ্তানি উপযোগী আলু যেমন সানসাইন, প্রাডো, সান্তানা, কুইন এ্যানি, কুম্বিকা, ডোনাটা, ডায়ামন্ট, প্রানোলা, বারিআলু-৬২, মিউজিকা, বারি আলু-৯০ এসব আবাদ করুন, অধিক লাভবান হোন।
    এক একর জমিতে আলু আবদ করতে ১৩০ কেজি ইউরিয়া, ৯০ কেজি টিএসপি, ১০০ কেজি এমওপি, ৬০ কেজি জিপসাম এবং ৬ কেজি দস্তা সার প্রয়োজন হয়। তবে এ সারের পরিমাণ জমির অবস্থাভেদে কমবেশি হতে পারে। তাছাড়া একরপ্রতি ৪-৫ টন জৈবসার ব্যবহার করলে ফলন অনেক বেশি পাওয়া যায়।
    আলু উৎপাদনে আগাছা পরিষ্কার, সেচ, সারের উপরি প্রয়োগ, মাটি অলগাকরণ বা কেলিতে মাটি তুলে দেয়া, বালাই দমন, মালচিং করা আবশ্যকীয় কাজ। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে বিনা চাষে মালচিং দিয়ে আলু আবাদ করা যায়।
মিষ্টিআলু
    নদীর ধারে পলি মাটিযুক্ত জমি এবং বেলে দো-আঁশ প্রকৃতির মাটিতে মিষ্টিআলু ভাল ফলন দেয়।
    বারি মিষ্টিআলু-৮, বারি মিষ্টি আলু-১২, বারি মিষ্টি আলু-১৩, বারি মিষ্টিআলু-১৪, বারি মিষ্টিআলু-১৫, বারি মিষ্টি আলু-১৬, বারি মিষ্টি আলু-১৭ আধুনিক মিষ্টিআলুর জাত।
    প্রতি বিঘা জমির জন্য তিন গিটযুক্ত ২২৫০-২৫০০ খ- লতা পর্যাপ্ত।
    বিঘাপ্রতি ৪-৫টন গোবর/জৈবসার, ১৬ কেজি ইউরিয়া, ৪০ কেজি টিএসপি, ৬০ কেজি এমওপি সার দিতে হবে।
ডাল ফসল
    মুসুর, মুগ, মাষকলাই, খেসারি, ফেলন, অড়হর, সয়াবিন, ছোলাসহ অন্যান্য ডাল এসময় চাষ করতে পারেন। এজন্য উপযুক্ত জাত নির্বাচন, সময়মতো বীজ বপন, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ, পরিচর্যা, সেচ, বালাই ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করতে হবে।
শাকসবজি
    বীজতলায় উন্নতজাতের দেশী-বিদেশী ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, শালগম, বাটিশাক, টমাটো, বেগুন, গাজর, মটরশুঁটির এসবের চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলায় বীজ বপন করুন।
    গত মাসে চারা উৎপাদন করে থাকলে মাটিতে জোঁ আসার সাথে সাথে মূল জমিতে চারা রোপণ করুন। এ মাসে হঠাৎ বৃষ্টিতে রোপণকৃত শাকসবজির চারা নষ্ট হতে পারে। এ জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখুন। রোপণের পর আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ, সেচ নিকাশসহ প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করুন।
    স্বল্প সময়ে ফলন পেতে লালশাক, মুলাশাক, পালংশাক, লেটুস, ধনিয়া এসবের বীজ বপন করুন।
 বিবিধ
    অধিক লাভবান হতে উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন ।
    স্বল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন অধিক ফসল ঘরে তুলুন।
    শ্রম, সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।

লেখক : তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১০১৯৬১০, ই-মেইল : manzur_1980@yahoo.com