Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা ২০২০

কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা ২০২০
মোঃ সায়েদুল ইসলাম
দেশের পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কৃষিখাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ১১.৫২ শতাংশ। দেশের মোট শ্রমশক্তির চল্লিশ শতাংশ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। ফলে কৃষিখাতকে দেশের অর্থনীতির মেরুদ- বললেও অত্যুক্তি হবে না।
স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫০ বছরে দেশের প্রধান প্রধান শস্য উৎপাদন কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের এ ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও গ্রামীণ উন্নয়নের মাধ্যমে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৩-৭৮) খাদ্যশস্য উৎপাদনের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, কৃষি ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদির উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
বঙ্গবন্ধুর কৃষিনীতির পথ ধরেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ খাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও পর্যাপ্ত আর্থিক বরাদ্দ প্রদানের মাধ্যমে খাতটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ আয়তনে ছোট এবং বেশ ঘনবসতিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও কৃষি উৎপাদনে বিশে^র দরবারে গৌরবোজ্জ্বল ও ঈর্ষণীয় অবস্থান তৈরি করেছে। শুধু উৎপাদনেই নয়, রপ্তানি ক্ষেত্রেও বর্তমান সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে বাংলাদেশ এরই মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলারেরও অধিক মূল্যের কৃষিপণ্য রফতানির মাইলফলক অতিক্রম করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই বিশে^ উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং ২০৩১ সালে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। আর সেজন্য প্রয়োজন যেকোনো মূল্যে আমাদের  কৃষিখাতের অগ্রগতি অব্যাহত রাখা।
কৃষিতে বিশে^ বাংলাদেশের এমন অবস্থান তৈরি করতে বর্তমান সরকারের নীতি-সিদ্ধান্তের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তির অবদানও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষিতে এই অবদানকে স্বীকৃতি দিতে কৃষি মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি)’ নির্বাচন করার। এজন্য কৃষি মন্ত্রণালয় ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নীতিমালা ২০১৯’ প্রণয়ন করেছে। কৃষির চারটি উপখাতে (ফসল, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও বন) গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতি বছর কৃষি বিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, উৎপাদনকারী, বাণিজ্যিক কৃষি খামার স্থাপনকারী, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী ও কৃষি সংগঠক বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্য হতে সর্বোচ্চ ৪৫ জন ব্যক্তিকে এক বছর মেয়াদের জন্য ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি)’ হিসেবে নির্বাচন করা হবে। ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নীতিমালা ২০১৯’ এ উল্লেখিত শর্তসমূহ পূরণ সাপেক্ষে চারটি পর্যায়ে নিবিড় যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। নির্বাচিত এআইপিগণের তালিকা প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সরকারি গেজেটে প্রকাশ করা হবে। নির্বাচিত এআইপিগণ
নীতিমালায় ঘোষিত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন।
এবারই প্রথমবারের মতো কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ২০২০ এর এআইপি কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত ১৩ জন ব্যক্তিকে এ বছর এআইপি কার্ড ২০২০ বিতরণ করা হচ্ছে। যাঁরা এ বছর এআইপি কার্ড ২০২০ এর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তাঁদের আমি আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের সম্মানিত করতে পেরে আমরা নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমি আশা করছি আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে। সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।

লেখক : সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা। www.moa.gov.bd