রাসায়নিক পদ্ধতিতে ইঁদুর দমন
প্রফেসর ড. মো. আদনান আল বাচ্চু১
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ভূঞা২
ইদুর মানুষের আশে পাশে থেকেই মাঠে, গুদামে, বাসা বাড়িতে, অফিস আদালতে প্রতিনিয়ত ক্ষতি করে চলেছে। পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই যেখানে ইঁদুরের সমস্যা নেই। বিশ্বে প্রতি বছর যে পরিমাণ খাদ্য ইঁদুর দ্বারা নষ্ট হয় তা দিয়ে প্রায় ২৫-৩০টি দরিদ্র্য দেশের মানুষ এক বছর বাঁচতে পারে। এ ছাড়াও ইঁদুর ৬০টিরও বেশি রোগের জীবাণু বহন এবং বিস্তার করে থাকে। তাই এদের দমন করা অতীব জরুরি। ইঁদুর দমন পদ্ধতিকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়: (১) অরাসায়নিক বা পরিবেশসম্মতভাবে ইঁদুর দমন (২) রাসায়নিক বা বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে ইঁদুর দমন।
রাসায়নিক বা বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে ইঁদুর দমন
রাসায়নিক পদ্ধতিতে ইঁদুর দমন পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই বহুযুগ ধরে চলে আসছে। রাসায়নিক পদ্ধতিকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : তীব্র বা তাৎক্ষণিক বিষ, দীর্ঘমেয়াদি বিষ, ট্র্যাকিং পাউডার, ধূম্রবিষ/গ্যাস বডি, বিকর্ষক বা বিতাড়ক দ্রব্যের ব্যবহার, রাসায়নিক বন্ধ্যাকারক বা প্রজনন নিবারকের ব্যবহার।
তীব্র বা তাৎক্ষণিক বিষ : যেসব বিষ ইঁদুর খাওয়ার পর পরই দেহে তাৎক্ষণিক বিষক্রিয়া দেখা দেয় এবং মৃত্যু ঘটায় তাদের তীব্র বিষ বলা হয়। যেমন- জিংক ফসফাইড, বেরিয়াম কার্বনেট, আর্সেনিক ট্রাইঅক্সাইড, ব্রমেথিলিন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। অন্যান্যের মধ্যে আনটু (অঘঞট- আলফা ন্যাফথাইল থায়োইউরিয়া), সোডিয়াম ফ্লরোঅ্যাসিটেট এবং থেলিয়াম সালফেট ইঁদুর দমনে অধিক কার্যকরী রাসায়নিক পদার্থ হলেও এটি মানুষ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক বিপদজনক। যেহেতু এ বিষ একবার খেলেই ইঁদুর মারা যায় তাই এই বিষকে একমাত্রা বিষও বলা হয়। তবে একমাত্র সরকার অনুমোদিত তাৎক্ষণিক বা তীব্র বিষ হলো জিংক ফসফাইড। ১৯১১ সালে প্রথমে ইঁদুরনাশক (জড়ফবহঃরপরফব) হিসেবে এটি ইতালিতে ব্যবহৃত হয় এবং এন্টিকুয়াগুলেন্ট (১৯৪০–১৯৫০) আবিষ্কৃত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এটি বহুল ব্যবহৃত একমাত্রা ব্রড স্পেকট্রাম ইঁদুরনাশক হিসেবে বিশ্বে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সাধারণত ২৫-৪০ মিলিগ্রাম/কেজি বডির ওজন হারে (LD50) বিভিন্ন ইঁদুরে এটি কার্যকরী। তীব্র বা তাৎক্ষণিক বিষের বিষক্রিয়ার ধরন হলো এ বিষটোপ খাওয়ার পর এদের পাকস্থলীর পাচক রসের সংস্পর্শে আসার পর এক প্রকার বিষাক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হয়। এ বিষাক্ত গ্যাস আক্রান্ত ইঁদুরের লিভার ও কিডনিকে অকেজো করে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ করে ইঁদুরের মৃত্যু ঘটায়। এ বিষটোপ খেয়ে ইঁদুর ১-২ ঘণ্টার মধ্যেই মারা য়ায় এবং মরা অবস্থায় ইঁদুরকে বিষটোপ পাত্রের আশে পাশেই পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু এ বিষটোপের বেশ কিছু অসুবিধা আছে। যেমন- বিষটোপ লাজুকতা বা বিষটোপ বিমুখতা, সেকেন্ডারি পয়জনিং এবং তা মানুষ ও পরিবেশের জন্য অতিমাত্রায় ক্ষতিকর। বিষটোপ পাত্রের আশে পাশে মরা ইঁদুর পড়ে থাকতে দেখে অন্য ইঁদুর আর বিষটোপ খেতে চায় না। একেই বিষটোপ লাজুকতা বলা হয়। এই বিষটোপ লাজুকতা কাটাতে বিষটোপ ব্যবহারের আগে প্রথম ২-৩ দিন বিষহীন টোপ (শুধুমাত্র গম) ব্যবহার করে ইঁদুরকে টোপ খেতে অভ্যস্ত করে নিলে ইঁদুরের মৃত্যু হার অনেক বেড়ে যায়। তবে একই স্থানে একাধিক্রমে দুই রাত্রের বেশি এ বিষটোপ ব্যবহার করা ঠিক না এবং অন্তত ২-৩ মাস বিরতি দিয়ে পুনর্বার ব্যবহার করতে হবে। এ বিষের সুনির্দিষ্ট কোন প্রতিষেধক নেই।
জিংক ফসফাইড (২%) প্রস্তুত প্রণালী : বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীগণ কর্তৃক উদ্ভাবিত গমে মিশ্রিত ২% জিংক ফসফাইড আবরণ যুক্ত বিষটোপ যা ইঁদুর দমনে খুবই কার্যকরী এবং এটি কৃষক ভাইয়েরা সহজে তৈরি করতে পারেন (সারণি দ্রষ্টব্য)।
সারণি : এক কেজি বিষটোপ তৈরির উপাদানসমূহ
প্রস্তুত প্রণালী : একটি অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে প্রথমে ১০০ মিলি লিটার পানি নিয়ে তাতে ১০ গ্রাম বার্লি বা সাগু মিশিয়ে জাল (তাপ) দিতে হবে এবং যখন এই মিশ্রনটি ঘন হয়ে আসবে তখন পাত্রটি নামিয়ে ভালোভাবে ঠান্ডা করে তাতে ২৫ গ্রাম ধুসর কালো রঙের জিংক ফসফাইড (সক্রিয় উপাদান ৮০%) ভালোভাবে মিশাতে হবে। এরপর ৯৬৫ গ্রাম গম ওই মিশ্রণের মধ্যে ঢেলে আবার সমস্ত মিশ্রণটিকে একটি কাঠি বা চামুচ দিয়ে এমনভাবে নাড়াতে হবে যেন সমস্ত গমের চারিপাশে জিংক ফসফাইডের কালো আবরন পড়ে। এরপর এই মিশ্রণকে ১-২ ঘণ্টা রোদে শুকিয়ে নিয়ে ঠা-া করে তার সাথে ভালোভাবে তেল দিয়ে মেখে বায়ু নিরোধক পাত্রে বা পলিব্যাগে সংরক্ষণ করতে হবে। এভাবে তৈরিকৃত বিষটোপ ২-৩ বছর পর্যন্ত কৃষক ব্যবহার করতে পারেন।
ব্যবহার বিধি : ইঁদুরের চলাচলের রাস্তা যেমন ঘরের দেয়ালের পাশ ঘেসে, সিলিং এর উপর, গর্তের মুখে ও জমির আইলের পাশে এ বিষটোপ কোন পাত্রে রেখে দিতে হবে। তাছাড়াও ইঁদুরের সতেজ গর্তের মুখ পরিষ্কার করে একটি কাগজের মধ্যে ৫ গ্রাম (আনুমানিক) বিষটোপ রেখে তা মুড়িয়ে গর্তের ভেতর দিতে হবে। গর্তের ভেতর পুঁটলির বিষটোপ খেয়ে ইঁদুর মারা যাবে। যদি গর্তের বাইরে বিষটোপ রাখা হয় তাহলে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে ইঁদুর খেয়েছে কি না।
সতর্কতা : জিংক ফসফাইড বিষটোপ তৈরির সময় পরিষ্কার কাপড় দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখতে হবে। বিষটোপ তৈরির ও ব্যবহারের পর সাবান অথবা হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। মৃত ইঁদুরগুলো একত্র করে গর্তে পুঁতে ফেলতে হবে। শিশু ও গৃহপালিত পশুপাখি যেন কোনোক্রমেই এই বিষটোপের সংস্পর্শে না আসে সে ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিষটোপ প্রস্তুত ও প্রয়োগের সময় তাৎক্ষণিক কোন প্রকার অসুস্থতা অনুভব করলে রেজিষ্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদি বিষ : যে সমস্ত বিষ খেলে ইঁদুর তাৎক্ষণিকভাবে বিষক্রিয়ায় মারা না যেয়ে ধীরে ধীরে অসুস্থ বা দুর্বল হয়ে ১-২ সপ্তাহের মধ্যে মারা যায় তাদের দীর্ঘমেয়াদি বিষ বলা হয়। এই জাতীয় সব বিষই রক্ত পানিকারক বা এন্টিকুয়াগুলেন্ট হিসাবে পরিচিত। দীর্ঘমেয়াদি বিষকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা :
একমাত্রা বিষ : একমাত্রা বিষ যেমন ব্রডিফেকাম একবার খেলেই ইঁদুর ৩-৪ দিনের মধ্যে মারা যায়। ক্লের্যাট , স্টর্ম ইত্যাদি সরকার অনুমোদিত একমাত্রা দীর্ঘমেয়াদি বিষ যা বাণিজ্যিকভাবে ইঁদুর দমনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
বহুমাত্রা বিষ : বহুমাত্রা বিষ যেমন ব্রমাডিয়োলোন, ওয়ারফারিন, কৌমাট্রেট্রালিন ইত্যাদি ইঁদুর মরার জন্য ২-৩ বার খেতে হয় এবং ১-২ সপ্তাহের মধ্যে ইঁদুর মারা যায়। বাংলাদেশে বহুমাত্রা বিষের মধ্যে ল্যানির্যাট, ব্রমাপয়েন্ট, রেটোক্স, রোমা, র্যাটোনিল ইত্যাদি বাণিজ্যিক ভাবে পাওয়া যায়। সকল দীর্ঘমেয়াদি বিষই ইঁদুরের শরীরের রক্ত জমাট বাধার ক্ষমতাকে ব্যহত করে। ফলে ইঁদুরের নাক, মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণের মাধ্যমে ইঁদুর দুর্বল হয়ে মারা যায়। এই ধরনের বিষ যকৃতে ভিটামিন কে-১ তৈরিতে বাধাগ্রস্থ করে। ভিটামিন কে-১ হলো রক্ত জমাট বাধার উপাদান (যা সম্মিলিতভাবে প্রোথম্বিন নামে পরিচিত) সৃষ্টিতে অপরিহার্য। দীর্ঘমেয়াদি বিষ ভিটামিন কে-১ সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে রক্তের প্রোথম্বিন ধীরে ধীরে কমিয়ে রক্ত জমাট বাধার প্রক্রিয়াকে নষ্ট করে ফেলে। ফলশ্রুতিতে অনবরত রক্তক্ষরণ হতে থাকে। ইঁদুর এ ধরনের বিষ খেয়ে আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে গর্তের মধ্যে মারা যায় যার জন্য মৃত ইঁদুর সচরাচর দেখা যায় না। আবার এ ধরনের বিষ খেলে সহসা কোন আক্রান্ত লক্ষণ ধরা পড়ে না বলে অন্যান্য ইঁদুরও এ বিষ খেতে কুণ্ঠাবোধ করে না। ফলে ইঁদুরের বিষটোপ লাজুকতাও দেখা যায় না। তবে এ বিষটোপের খরচ একটু বেশি এবং কৃষকের শ্রম ও সময় বেশি লাগে।
দীর্ঘমেয়াদি বিষটোপ প্রয়োগ পদ্ধতি : এ বিষটোপ উপর্যুপরি বেশ কয়েকদিন ব্যবহার করতে হয়। এ ধরনের বিষটোপ যেন বৃষ্টিতে বা মাটির আর্দ্রতায় কার্যক্ষমতা হারিয়ে না ফেলে সে জন্য সাধারণত কোনো পাত্রে রেখে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পাত্রে সাধারণত ২০০-৩০০ গ্রাম বিষটোপ নিয়ে ঘরে বা মাঠে ইঁদুরের গর্তে অথবা চলাচলের রাস্তায় রেখে দিতে হবে এবং প্রতিদিনই পর্যবেক্ষণ করতে হবে যেন বিষটোপ ইঁদুর খেল কি না । যদি খেয়ে থাকে তবে আবারও বিষটোপ ঐ পাত্রে দিতে হবে যেন ইঁদুর তা প্রয়োজন মতো খেতে পারে। বাড়িঘরে সাধারণত সন্ধ্যার পর বিষটোপ প্রয়োগ করা হয় ও পরের দিন সকালে তুলে নিতে হয়। তা না হলে গৃহপালিত প্রাণী এ বিষটোপ খেয়ে মারা যেতে পারে। ফসলের জমিতে পানি থাকলে কলার ভেলা তৈরি করে সেখানে বিষটোপ রাখতে হবে।
টেবিল -১ : সরকার অনুমোদিত কতিপয় ইঁদুরনাশকের তালিকা
ট্র্যাকিং পাউডার : ট্র্যাকিং পাউডার সাধারণত ইঁদুরের চলাচলের রাস্তায়, গর্তের মুখে ও ভেতরে ছিটিয়ে দিতে হয়। ইঁদুর যখন তার রাস্তা দিয়ে চলাচল করবে তখন তার পায়ে এবং গায়ে পাউডার লেগে যাবে। ইঁদুরের একটা বড় স্বভাব হলো তাদের দেহ জিহবা দিয়ে পরিষ্কার করা। যখন ইঁদুর দেহ পরিষ্কার করে তখন তার পা এবং শরীর হতে মুখের মধ্য দিয়ে পাউডার পেটের ভেতর যায় এবং এ বিষক্রিয়ায় ইঁদুর মারা যায়। মাঠের কালো ইঁদুরের চেয়ে বাদামি ইঁদুর দমনে এবং ঘরের নেংটি ইঁদুর দমনে এ বিষ বেশ কার্যকরী। সোডিয়াম ফলুরোসিলিকেট, ভ্যালোন, ক্লোরোফ্যাকিনোন (০.২%) বা কৌমাফেন (০.৫%) ট্র্যাকিং পাউডার হিসেবে কার্যকর। দীর্ঘস্থায়ী এ বিষ ব্যবহারে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত কেননা এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
ধূম্রবিষ/বিষ বাস্প/গ্যাস বডি : যে সমস্ত ইঁদুর বিশেষত মাটিতে গর্ত করে, তাদের দমন ব্যবস্থা হিসেবে গ্যাস বড়ি বেশ কার্যকর। সক্রিয় গর্তের মধ্যে ১টি গ্যাস বড়ি দিয়ে গর্তের সকল মুখ ভালোভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। গর্তের আর্দ্র বাতাসের সাথে এই ট্যাবলেট মিশে ফসফাইন (PH3) নামক এক প্রকার বিষাক্ত গ্যাস সৃষ্টি করে ফলে ইঁদুর মারা যায়। ধুম্রবিষ যেমন- মিথাইল ব্রোমাইড, কার্বন টেট্রাক্লোরাইড, ইথিলিন ডাই ব্রোমাইড এবং অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট (ফসটক্সিন, কুইকফিউম, সেলফস , কুইকফস) ইত্যাদি ফিউমিগ্যান্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের গ্যাস জনস্বাস্থ্যের জন্য প্রাণঘাতী বিধায় ব্যবহারের পূর্বে স্বাস্থ্য সুরক্ষা পোশাক, বিশেষ প্রয়োগ যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক নিশ্চিত করা উচিত।
বিকর্ষক বা বিতাড়ক দ্রব্যের ব্যবহার : যে সব রাসায়নিক দ্রব্যাদি ইঁদুরের অপছন্দ এবং সব সময় ইঁদুর এড়িয়ে চলতে চায় সে সব পদার্থ বিশেষত্ব বিভিন্ন ধরনের বাক্সে, খাদ্য দ্রব্যের পাত্র (ছালার বস্তা, কাপড়ের বস্তা ইত্যাদি) এবং অন্যান্য জিনিসে বিতাড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও উদ্ভিদ জাত পাউডার বা নির্যাস যেমন- নিম পাতার পাউডার, নিমতেল ইত্যাদি বিকর্ষক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। লরোনিট্রাইট, ডেনাটোনিয়াম বেনজয়েট ইত্যাদিও ইঁদুর বিতাড়ক হিসেবে স্বীকৃত।
রাসায়নিক বন্ধ্যাকারক বা প্রজনন নিবারকের ব্যবহার : আমরা জানি যে, ইঁদুর দ্রুত প্রজননশীল প্রাণী তাই তার দমন ব্যবস্থা খুবই দুঃসাধ্য। ফিউরাড্যান্টিন (০.০২ গ্রাম) এবং কলচিচিন (০.১৪ গ্রাম) পুরুষ ও স্ত্রী ইঁদুরের বন্ধ্যাত্ব তৈরি করে। অন্যান্য রাসায়নিক বন্ধ্যাত্বের মধ্যে গসিপল, মেটাপা, টেপা, থায়োটেপা, অ্যাকোলেট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ইঁদুর দমনের জন্য বিশেষ কোনো একক পদ্ধতি খুব বেশি কার্যকরী নয়। যেহেতু ইঁদুর একটি সামাজিক সমস্যা তাই এই সমস্যা আমাদের সামাজিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে এবং বাসাবাড়ি, ফসলের মাঠ, বেড়িবাঁধ, রাস্তাঘাট, খালের পাড়, অফিস আদালতে ইঁদুর সকলে দলগতভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।
লেখক : ১চেয়ারম্যান, কীটতত্ত্ব বিভাগ, কৃষি অনুষদ, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর- ৫২০০; মোবাইল : ০১৭১৩-১৬৩৩৪২;
২প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ভূঞা, কীটতত্ত্ব বিভাগ, কৃষি অনুষদ, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর- ৫২০০; মোবাইল: ০১৭০৬৩০৪০৭০;