Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

ডাল-ফসলের-উৎপাদন-বৃদ্ধি-এবং-করণীয়

ডাল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং করণীয়
ড. মোঃ আলতাফ হোসেন
মানুষের দেহঘড়িকে চালু রাখার জন্য খাদ্য গ্রহণ একটি অত্যাবশ্যক প্রক্রিয়া। আর আমিষের উৎস হিসেবে উদ্ভিজ আমিষ (যেমন- বিভিন্ন ধরনের ডাল) খেয়ে থাকি। ডালের মধ্যে প্রকারভেদে ২২-২৮% আমিষ থাকে, উল্লেখ্য যে, ডালের আমিষের শতকরা ৭০-৯০ ভাগ দেহের পুষ্টি সাধনে ব্যবহৃত হতে পারে আর প্রাণিজ আমিষের ৪০-৫০% দেহের পুষ্টি সাধনে ব্যবহৃত হতে পারে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, দেহের জন্য ডালের আমিষ প্রাণিজ আমিষের চেয়ে ভালো এবং নিরাপদ। 
ঋঅঙ এর সুপারিশ মতে আমাদের সুষম খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন জনপ্রতি ৪৫ গ্রাম ডালের চাহিদা থাকলেও আমরা পেয়ে থাকি মাত্র ১৭-১৮ গ্রাম। গড়ে প্রতি বছর আমাদের প্রায় ২৬ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয় মাত্র ১০ লাখ মেট্রিক টন (কৃষি ডাইরি ২০২২) এবং আমদানী করা হয় ১০-১১ লাখ টন (ঋঅঙ ঝঃধঃ ২০২২) আর বাকী ৫-৬ লাখ টন ঘাটতিই রয়ে যায়। বিদেশ থেকে ডাল আমদানী করতে প্রতি বছর আমাদের প্রায় ৮-৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয় (ঋঅঙ ঝঃধঃ ২০২২)। অথচ আমরা যদি সচেতন হই এবং পরিকল্পিতভাবে ডাল ফসল চাষ করা হয় তাহলে ডালের আমদানী নির্ভরতা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস করা সম্ভব। 
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে অদ্যবধি বিভিন্ন ধরনের ডাল ফসলের যেমন- খেসারি, মসুর, ছোলা, মটর, মুগ, মাস, অড়হর, ফেলন ইত্যাদির ৯১টি উন্নত জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, যা ব্যবহার করে বর্তমান শস্য ধারাকে ঠিক রেখে বছরজুড়েই ডাল ফসল চাষ করা যায়। এসব উচ্চফলনশীল জাত ও আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফলন ১.৫-২.০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব। উচ্চফলনশীল আধুনিক জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হওয়ায় বিগত ১০ বছরে ডালের এলাকা, উৎপাদন ও ফলন অনেক বেড়েছে। প্রতি হেক্টরে ২০১২ সালে যেখানে ডালে গড় ফলন ছিল ৮০০ কেজি/হেক্টর, সেখানে ২০২৪ সালে সেটা হয়েছে ১২৭১ কেজি/হেক্টর (কৃষি ডাইরি ২০২৪)। ডালের উৎপাদন প্রতি বছর ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেলেও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদার তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। 
বাংলাদেশে তিন মৌসুমেই ডাল ফসলের চাষ করা যায়। দেশে প্রায় ১২ রকম ডাল ফসল চাষ হয়ে থাকে। যার ৯০ শতাংশ জুড়ে আছে খেসারি, মসুর, ছোলা, মুগ, মাষকলাই ও ফেলন। খেসারি, মসুর ও ছোলা রবি মৌসুমে এবং এলাকাভেদে মুগ, মাষকলাই ও ফেলন যথাক্রমে বিলম্ব-রবি, খরিফ-১ এবং খরিফ-২ মৌসুমে চাষ করা হয়। 
বর্তমান ফসল ধারাকে অপরিবর্তীত রেখে এসব উন্নত জাতগুলো চাষ করে কিভাবে ডাল ফসলের এলাকা ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় তার একটি দিকনির্দেশনা নি¤েœ উল্লেখ হলো- 
মসুর ঃ জনপ্রিয়তা ও চাহিদায় মসুর আমাদের দেশে প্রথম স্থান অধিকার করে আছে, যার কারণে কৃষকদের মাঝে মসুর চাষের আগ্রহই বেশি দেখা যায়। উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমিতে প্রচলিত শস্য ধারায় রবি মৌসুমে যেসব এলাকায় মসুর চাষ হয় সেখানে আধুনিক পদ্ধতিতে বারি ও বিনার উচ্চফলনশীল আধুনিক জাতসমূহ চাষ করে স্থানীয় জাতের তুলনায় ১.৫-২.০ গুণ পর্যন্ত ফলন বেশি পাওয়া সম্ভব। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় মসুরের জাতীয় গড় ফলন- ১৪০০ কেজি/হেক্টর, অথচ বারি মুসর-৮ এর স্থান ভেদে কৃষক মাঠে গড় ফলন- ২১০০-৩০০০ কেজি/হেক্টর। চাষ করে বপন ছাড়াও বিনা চাষে নিচু ও মাঝারি নিচু জমিতে রোপা আমন/বোনা আমন ধানের সাথে বিনা চাষেই সাথী ফসল হিসেবে সন্তোষজনকভাবে মসুর চাষ করা যায়। এক্ষেত্রে, চাষ করা মসুরের তুলনায় বীজের পরিমাণ ২৫-৩০% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে হয়, পক্ষান্তরে আবার বিনাচাষে উৎপাদনের কারণে উৎপাদন খরচ ৪০-৫০% পর্যন্ত কমে যায়। এছাড়াও সরিষা, গম, শীতকালীন ভুট্টা ও আখ চাষের ব্যাপক এলাকা জুড়ে মিশ্র বা আন্তঃফসল হিসেবে মসুরের চাষ করে এর উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা যায়। উদাহরণস্বরূপ- আখ রোপণের পর দুই সারি আখের মধ্যকার খালি জায়গায় মসুর চাষ করে গড়ে ৭০০-১০০০ কেজি/হেক্টর মসুর উৎপাদন করা সম্ভব। বাংলাদেশে প্রায় ১.৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়ে থাকে। সুতরাং আখ চাষের আওতাধীন জমিতে আখের সাথে আন্তঃফসল হিসেবে মসুর চাষ করে প্রায় ১.০-১.৫ লক্ষ মেট্রিক টন মসুর উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়াও পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীসহ অন্যান্য নদীর বিস্তীর্ণ চর এলাকায় সন্তোষজনকভাবে মসুরের চাষ করে উৎপাদন বাড়ানো যায়। আবার, ব্যাপক এলাকাজুড়ে বিভিন্ন ধরনের ফল বাগানে যেমন-নতুন স্থাপনকৃত কলা বাগান, আম বাগান, পেয়ারা বাগান, লিচু বাগান, কুল বাগান ইত্যাদির মধ্যেকার খালি জায়গায় অনায়াসেই মসুর চাষ করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মসুর উৎপাদন করা সম্ভব।  
খেসারি : বর্তমান পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এলাকা ও উৎপাদনের ভিত্তিতে খেসারি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে (কৃষি ডাইরি ২০২৪)। খেসারী সাধারণত মাঝারি নিচু থেকে নিচু এলাকায় আমন ধানের সাথে সাথী ফসল হিসেবে চাষ হয়ে থাকে। আর যেসব এলাকায় খেসারি চাষ হয় বিশেষ করে দেশের নিম্নাঞ্চলে সেখানে সাধারণত অধিকাংশ কৃষকই স্থানীয় জাত চাষ করে থাকেন। এসব এলাকায় সঠিক উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উচ্চফলনশীল বারি খেসারী-২, বারি খেসারি-৩, বারি খেসারি-৫, ও বারি খেসারি-৬ এবং বিনা খেসারি-১ চাষ করে ফলন প্রায় ১.৫-২.০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব। 
মটর : আধুনিকতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার ছোঁয়ায় বর্তমানে সবজি হিসেবে মটরশুঁটির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এ চাহিদাকে আমলে নিয়ে ক্রমান্বয়ে মটর চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। বর্তমানে বেশ কিছু স্বল্পমেয়াদি আমন ধানের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। স্বল্পমেয়াদি এসব আমন ধান যেমন- বিনাধান-১৭, ব্রিধান-৬২ বা অন্যান্য জাত চাষ করে সেই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে স্বল্পমেয়াদি বারি মটরশুঁটি-২ ও  বারি মটরশুঁটি-৩ অথবা বারি মটর-২ চাষ করে শুঁটি সংগ্রহ করার পর আনায়াসেই বোরো ধান চাষ করা যায়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিস্তÍীর্ণ এলাকা মটর চাষের আওতায় এনে মটরের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। এছাড়া মাঝারি নিচু অনেক জমি আমন ধান কাটার পর পতিত পড়ে থাকে। একটু সচেতনতা ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেসব জমিতে সাথী ফসল হিসেবে অনায়াসেই বারি মটর-৩ চাষ করে মটরের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ ছাড়া উপরে বর্ণিত নদীগুলোর বিশাল চরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে মটর চাষ করা যেতে পারে।
ছোলা : রবি মৌসুমে রোপা আমন ধান কাটার পর রাজশাহীর বরেন্দ্র এলাকা, সিলেট এবং বরিশালের ব্যাপক এলাকা পতিত পরে থাকে। এসব এলাকার মধ্যে বরেন্দ্র ও সিলেট এলাকায় আগাম আমন ধান কাটার পর পরই নভেম্বর মাসের মধ্যে উচ্চফলনশীল জাতের ছোলা চাষ করে চাষাবাদের এলাকা ও উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে, এক্ষেত্রে ফসলে সেচ প্রদান করতে হতে পারে। একইভাবে নভেম্বরের শেষ থেকে মধ্য-ডিসেম্বরের মধ্যে বরিশালের উত্তরাংশের উপজেলাগুলোতে ছোলা চাষ করা যেতে পারে। এছাড়া মসুরের মতোই আখের মধ্যে আন্তঃফসল হিসেবে ছোলা চাষ করে ৭৫০-১০০০ কেজি/হেক্টর ছোলা উৎপাদন সম্ভব। এমনকি চরাঞ্চলের উঁচু জমিগুলোতে অনায়াসে ছোলা চাষ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। 
বাংলাদেশ প্রায় ২.৩ মিলিয়ন হেক্টর জমি রোপা আমন ও বোরো ধান চাষের মাঝখানে প্রায় ৯০ দিন পতিত পরে থাকে এসব জায়গায় স্বল্পমেয়াদি শীতকালীন ডাল ফসল যেমন- স্বল্প মসুর, ছোলা, মটর ইত্যাদি চাষ করে ডাল ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। 
মুগ (খরিফ-১) : আধুনিক ও উচ্চফলনশীল মুগ ডাল হচ্ছে ডাল ফসলের মধ্যে সবচেয়ে স্বল্পকালীন ফসল অর্থাৎ ৫৫-৬৫ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করা যায়। বারি এবং বিনার উদ্ভাবিত মুগের জাতগুলো স্বল্পমেয়াদি ও উচ্চফলনশীল। রবি ফসল সংগ্রহের পর রোপা আমন ধান রোপণের পূর্ববর্তী ফাঁকা সময়ে খরিফ-১ মৌসুমে বৃহত্তর রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর ইত্যাদি জেলাগুলোতে সেচ সুবিধার আওতায় সকল রবিশস্যের জমিতে অনায়াসেই বারি মুগ ও বিনা মুগের উচ্চফলনশীল জাতসমূহ যেমন- বারি মুগ-৬, বারি মুগ-৭ ও বারি মুগ-৮ এবং বিনা মুগ-৫ ও বিনা মুগ-৮ চাষ করা যায়। আখের জমিতে মসুর/ছোলা সংগ্রহের পর সেখানেও স্বল্পমেয়াদি উচ্চফলনশীল মুগডাল চাষ করলে গড়ে ৫০০-৬০০ কেজি/হেক্টর মুগডাল উৎপাদন সম্ভব। সুতরাং দেখা যাচ্ছে আখের মধ্যে সাথী ফসল হিসাবে ডালফসল চাষ করলে সেখানে রবি ও খরিফ উভয় মৌসুম মিলে গড়ে ১২০০-১৬০০ কেজি/হেক্টর বাড়তি ডাল ফসল পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও ফসলের বাগানের মধ্যের ফাঁকা জায়গায় মুগডাল চাষ করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়তি ডাল ফসল পাওয়া যাবে। খরিফ-১ মৌসুমে মুগের মতো বারি মাস-৩, বারি মাস-৪ ইত্যাদি জাতের মাষকলাইও চাষ করা যায়। 
এ ছাড়াও, উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে যেমন- বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড়ে গম/আলু বা অন্যান্য রবিশস্য সংগ্রহের পর হেক্টরপ্রতি ১ টন ডলোচুন এবং ১.০-১.৫ কেজি বোরণ প্রয়োগ করে সন্তোষজনকভাবে মুগডাল চাষ করা যেতে পারে। 
মুগ ও মাস (খরিফ-২) : দেশের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে আউশ ধান/পাট-পতিত-রবি ফসল এই শস্য ধারায় প্রায়       ৮০-৯০ দিন জমি পতিত পড়ে থাকে। এই পতিত জমিগুলোতে বিদ্যমান শস্য ধারাকে কোন ব্যাঘাত না ঘটিয়ে মুগ ও মাষকলাইয়ের উচ্চফলনশীল জাত যেমন- বারি মুগ-৬, বারি মুগ-৭ ও বারি মুগ-৮ এবং বিনা মুগ-৫ ও বিনা মুগ-৮ চাষ করা যায়। এছাড়া খরিফ-১ মৌসুমের মুগ অথবা মাষকলাই সংগ্রহের পর সকল উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমিতে খরিফ-২ মৌসুমে আবারও মাষকলাই চাষ করা যায়। মাসকলাই অধিক অভিযোজনক্ষম ফসল হওয়ায় বিভিন্ন রাস্তা ও বাঁধের ধারে, পুকুর পাড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের ফল বাগানেও মাসকলাই চাষ করা যায়। 
অড়হর : আমাদের ফসল চাষের নিবিড়তার প্রতিযোগিতায় একক ফসল হিসেবে অড়হর চাষের তেমন সুযোগ নেই। তবে দেশের বিস্তৃত এলাকায় বসতবাড়ির ধারে, পুকুর, খাল ও নদীর পাড়ে, সড়ক, রেল সড়ক ও হাইওয়েতে এমনকি পাহাড়ি এলাকায় পাহাড়ের ঢালে পতিত পড়ে থাকা জমিতে শুধু বীজ বপন করে দিলেই এসব এলাকা অড়হর ডাল চাষের আওতায় আসবে এবং প্রচুর পরিমাণ অড়হর ডাল উৎপাদিত হবে যা মানুষ, গবাদি পশু ও হাঁস মুরগীর পুষ্টি চাহিদা পুরণে ব্যাপক অবদান রাখবে। উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি বারি অড়হর-১ নামে অড়হরের একটি জাত অবমুক্ত করা হয়েছে, যার ফলগুলো একই সাথে পাকে এবং উচ্চফলনশীল। অড়হরের ডাল-পালা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জ¦ালানি সংকটও অনেকটা নিরসন করবে।
ফেলন ও মুগ : দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো যেমন- বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগ ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোতে স্থানীয় জাত দ্বারা ফেলনের চাষ হয়ে থাকে। এসব এলাকায় উচ্চফলনশীল বারি ফেলন-১ ও বারি ফেলন-২ চাষ করে ফেলনের উৎপাদন বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এছাড়া বৃহত্তর বরিশাল বিভাগে বিশেষ করে পটুয়াখালী জেলায় উচ্চফলনশীল জাতের মুগ ব্যাপকভাবে চাষ করে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা যায়। এক্ষেত্রে অনেক সময় খরার হাত থেকে ফসলকে রক্ষার জন্য ক্ষেতের পাশে ছোট পুকুর কেটে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে সেই পানি দিয়ে সেচ প্রদান করার ব্যবস্থা রাখলে উৎপাদন অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। 
পরিশেষে বলা যায়, ডালের উৎপাদন বৃদ্ধির এই চিহ্নিত ক্ষেত্রগুলোকে বাস্তব ভিত্তিতে কাজে লাগানোর জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, বিভিন্ন কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও কৃষক ভাইয়েরা সম্মিলিতভাবে এগিয়ে এলে এবং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী আধুনিক প্রযুক্তিতে ডাল চাষ করতে পারলে ডালের উৎপাদন কাক্সিক্ষত মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা আরও বৃদ্ধি পাবে। দরকার শুধু পরিকল্পনামাফিক সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং সেটার বাস্তবায়ন।  

লেখক : মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ডাল গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ  কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঈশ্বরদী, পাবনা। মোবাইল :  ০১৭২৫-০৩৪৫৯৫, ই- মেইল : hossain.draltaf@gmail.com