বেহুলা লক্ষিান্দরের পৌরাণিক কাহিনীতে উল্লেখ্য, চাঁদ সওদাগর বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে লৌহিত্য সাগর পাড়ি দিয়ে চম্পক নগর থেকে উজানি নগর যেত। পণ্ডিতগণ মনে করেন প্রায় ৪ হাজার বছর আগে হাওরাঞ্চলেই ছিল লৌহিত্য সাগরের বিশাল জলরাশি। দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর দিকে আছড়িয়ে পড়ত লৌহিত্য সাগরের উত্তাল ঊর্মীমালা।
সাগর সংস্কৃত শব্দ, বিবর্তিত শব্দ সায়র। সায়র থেকে কালের বিবর্তনে হাওর শব্দের উৎপত্তি হয়। আক্ষরিক অর্থে হাওর হচ্ছে এক বিস্তৃত জলমগ্ন কিংবা জলশূন্য ভূমি কিংবা নিম্ন জলাভূমি। যা মৌসুমে সাগরের মতো মনে হয় এবং কোন মৌসুমে শুধু ফসলের মাঠ। বড় বড় হাওরে সূর্য উঠে ও অস্ত যায়। শুকনা মৌসুমে যখন সূর্য উদয় হয় তখন দেখা যায় মাটি ভেদ করে অগ্নিদগ্ধ সূর্যটি উদিত হচ্ছে। ইহা কী যে অপরূপ দৃশ্য নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। হাওরাঞ্চলের নয়নাভিরাম দৃশ্য ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে নানা রূপ ধারণ করে। বর্ষাকালে সাগরের মতো চারদিকে পানি আর পানি। জনপদগুলোকে ছোট ছোট দ্বীপের মতো মনে হয়। লোকজন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে নৌকায় পারাপার হয়। ভরা বর্ষায় গ্রামগুলো ডুবু ডুবু। দক্ষিণা বাতাস শন শন শব্দ করে ছুটে চলে হিমালয়ের দিকে, তার প্রিয়তমা মালতির দেশে। তখন সঙ্গে বড় বড় ঢেউ মাথায় সাদা পাগড়ি পরে পাগলা হাতির মতো ছুটে চলে নৃত্যের তালে তালে। আর সামনে যা কিছু পায় ভেঙে চুরমার করে ভাসিয়ে নেয়।
চিক চিকে ইলিশের পিট, শান্ত, সুবোধ রাজকন্যার মতো কুয়াশার চাদর পরে শুয়ে থাকে শরতের সকাল। পূর্ণিমার রাতে ফুটন্ত শাপলা ফুল কথা বলে চাঁদের সনে। সকাল সন্ধ্যায় সাদা বক দল বেঁধে উড়ে যায় নীল নিলীমায়। শরৎ হেমন্তে, সাইবেরিয়া থেকে আগত অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয় হাওরাঞ্চল। মালার মতো দলবেঁধে দৃষ্টি সীমায় উড়ে চলে বলাকার দল। আহাঃ কী অপরূপ দৃশ্য! খলিসা মাছ নায়র যায় রঙিন শাড়ি পরে। ধবধবে সাদা কাশফুল কত যে চমৎকার। চারদিকে শুধু মাঠ, আকাঁবাঁকা সরুপথ চলেছে, দেশ দেশান্তর। গরুগুলো দুর্বা ঘাস চিবুচ্ছে কঙ্কালসার দেহ নিয়ে। কৃষকের কলরবে সারা মাঠ মুখরিত হয়ে উঠে। পৌষ, মাঘ মাসে শীতের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায় কৃষকের ঘরে। মাঠগুলো তখন সরিষা ফুলের হলুদ রঙে রঙিন হয়ে উঠে। উপরে আকাশ নীল, নিচে হলুদের ছড়াছড়ি। বসন্তে সবুজ হতে শুরু করে বৃক্ষরাজি ও তরুলতা। তখন কোকিলের ডাকে জাগিয়ে তুলে বসন্তের আগমনীর বার্তা। কী যে অপরূপ দৃশ্য তা লিখে প্রকাশ করা যায় না।
বৈশাখ মাসে পাকা ধানের সোনালি রঙে সারা মাঠ সোনালি আকার ধারণ করে কৃষাণ কৃষানিরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে শুধু কাজ আর কাজ করে চলে দিন ভর। শুধু এক দুইবার হাওরাঞ্চল দেখে কিছুতেই হাওরের সৌন্দর্য বোঝা যাবে না। যারা হাওরবাসী শুধু তারাই জানে হাওর যে কত সুন্দর।
আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭টি জেলা নিয়ে হাওরাঞ্চলের অবস্থান। এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ হাওরাঞ্চল নামে এই এলাকাটি পরিচিত। কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নিয়ে এ হাওরাঞ্চলের অবস্থান। এ ৭টি জেলায় ছোট বড় অসংখ্যা হাওর আছে। এর মধ্যে ৩৭৩টি আকারে অনেক বড়। তাছাড়া অসংখ্য নদ-নদী ডোবা ও জলাশয় রয়েছে। হাওরের মাটি পলিগঠিত বিধায় খুবই উর্বর এবং প্রচুর ধান জন্মে। ধানই অত্র এলাকায় একমাত্র ফসল। প্রচুর জলাশয় থাকার ফলে অনেক মাছ উৎপন্ন হয়। অত্র এলাকাকে বাংলাদেশের খাদ্য গুদাম বলা হয়। জলাশয় বেশি থাকার কারণে প্রচুর শামুক ঝিনুক উৎপন্ন হয়। যা প্রকৃতির অমূল্য সম্পদ।
ভৌগোলিক অবস্থান অনুসারে হাওরাঞ্চলকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। ১. পাহাড় নিকটবর্তী অঞ্চল। যেমন সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার হাওরগুলো। ২. প্লাবন ভূমির হাওর। যেমন- নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার হাওরসমূহ। ৩. গভীর পানিতে নিমজ্জিত হাওর। যেমন- সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা জেলার কয়েকটি হাওর, কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও নিকলী উপজেলার সব হাওর গভীর পানিতে নিমজ্জিত হাওর। হাওরাঞ্চলে সুনামগঞ্জ জেলাকে হাওরের ‘মা’ বলা হয়। জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি এবং ৭০% কৃষিজীবী। উপজেলাভিত্তিক হাওরের সংখ্যা এখানে তুলে ধরা হলো।
সুনামগঞ্জ জেলা : সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক, দিরাই, ধর্মপাশা, দোয়ারাবাজার জগনাথপুর, টাঙ্গুয়ার হাওর, শনির হাওর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, শাললা এলাকায় মোট হাওর সংখ্যা ৯৫টি ।
সিলেট জেলা : সিলেট সদর, বিয়ানিবাজার, বিশ্বনাথ, কোম্পানিগঞ্জ, কেচুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, কোতোয়ালি, জকিগঞ্জ, বালাগঞ্জ এ ১২টি উপজেলায় মোট হাওর ১০৫টি।
হবিগঞ্জ জেলা : আজমিরিগঞ্জ, বাহুবল, বানিয়াচং, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ সদর, লাখাই, মাধবপুর, নবীগঞ্জ, ৮টি উপজেলা। উল্লেখযোগ্য হাওরের সংখ্যা ১৪টি।
মৌলভীবাজার : বড়লেখা, জুড়ী, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও শ্রীমঙ্গল এ ৭টি উপজেলা। উল্লেখযোগ্য হাওরের সংখ্যা ৩টি।
নেত্রকোনা জেলা : আটপাড়া, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরি, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া, মদন, মহোনগঞ্জ, নেত্রকোনা সদর, পূর্বধলা মোট ১০টি উপজেলা এবং হাওর আছে ৫২টি।
কিশোরগঞ্জ জেলা : ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন, ভৈরব, বাজিতপুর, কুলিয়ারচর, কটিয়াদি, নিকলী, কিশোরগঞ্জ সদর, পাকুন্দিয়া, হোসেনপুর, করিমগঞ্জ, তাড়াইল মোট ১৩টি উপজেলা হাওরের সংখ্যা ৯৭টি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা : আখাউরা, আশুগঞ্জ, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কসবা, নবীনগর, নাসিরনগর, সরাইল মোট ৮টি উপজেলায় হাওর রয়েছে ৭টি।
উপরে উল্লিখিত ৭০টি উপজেলার ৩৭০টি হাওর ছাড়াও এশিয়ার বৃহত্তম কয়েকটি হাওরের নাম উল্লেখ না করলেই নয়। যেমন মৌলভী বাজার ও সিলেট জেলার হাকালুকি হাওর অবস্থিত ধর্মপাশা রুইবিল, হাকালুকি, শনির হাওর, সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত ইহা দ্বিতীয় বৃহত্তম হাওর। কিশোরগঞ্জ জেলায় বড় হাওর তৃতীয় বৃহত্তম হাওর। চলতি হাওর সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। তাছাড়া কিশোরগঞ্জ ধুপিবিল হাওর নেত্রকোনা পুটিয়ার হাওর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দ-খোলা আকাশী বিল। আগেই বলা হয়েছে ছোট বড় আরও অসংখ্যা হাওর রয়েছে। হাতিমারা হাওর এলংজুরী, ছিলানী, শাপলা, নূরপুর, কাতিয়ারকোন বাঘমারা, বনপুর, চিমনি, জয়সিদ্ধির হাওর প্রভৃতি। এ উর্বর হাওরাঞ্চল ও জলাভূমি ঘিরে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও হাওরাঞ্চল জাতীয় উন্নয়নের মূল ধারা থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। সম্প্রতি সরকার হাওরাঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সরকার বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড ইঐডঙই মাধ্যমে এক মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এগুলোর মধ্যে পরিবহন ও যোগাযোগ, কৃষি উন্নয়ন, মৎস্য উন্নয়ন, বিদ্যুৎ শক্তি, বন, খনিজসম্পদ, স্বাস্থ্য, পানিসম্পদ, জীববৈচিত্র্য এবং জলাভূমি ব্যবস্থাপনা নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন, পশুসম্পদ উন্নয়ন শিল্প শিক্ষার, সামাজিক সুবিধাদি, মুক্তা চাষ, আবাসন, পর্যটন ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট প্রধান প্রধান বাস্তবায়নকারী সংস্থা দ্বারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে এবং জরুরিভিত্তিতে কার্যক্রম শুরু করা হবে। ৫ বছর, ১০ বছর ও ২০ বছরমেয়াদি এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারের এ পরিকল্পনাকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
কিন্তু এ মহাপরিকল্পনা যেন কোন অবস্থাতেই মহাসঙ্কটে পরে ভেস্তে না যায় সে বিষয়ে অতি সাবধানে বুঝে শুনে পা বাড়াতে হবে। উল্লিখিত বিষয়ে হাওরবাসীর পক্ষে কতগুলো সুপারিশও পেশ করা হলো-
১. হাওর এলাকার মানুষ যাদের হাওরে জন্ম এবং হাওরে বসবাস করে তাদের কী সুবিধা-অসুবিধা আছে কী করলে কী সুবিধা হবে তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যারা হাওরকে চিনে জানে এ ধরনের লোককে হাওর পরিকল্পনার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।
২. কৃষি খাতে বাজেট বৃদ্ধি এবং বাস্তবায়নই কৃষকের ভাগ্য উন্ময়নে সহায়ক হবে।
৩. বিনামূল্যে কীটনাশক প্রদান, ভর্তুকি মূল্যে সার, তেল ও উন্মত মানের বীজ প্রদান করা এবং কৃষি যন্ত্র পাতির মূল্য হ্রাস করা।
৪. আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার, জমিতে সুষম সারের ব্যবহার, সেচের পানির অপচয় রোধ ইত্যাদি বিষয়ে কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
৫. অকাল বন্যার ক্ষতি থেকে ফসল রক্ষার জন্য নদী খনন ও নদীর বাঁক কেটে সোজাকরণ ও স্থান বিশেষে স্লুইস গেটসহ প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা।
৬. বীজবোনা থেকে শুরু করে হাওরে ধান পাকা পর্যন্ত কৃষকের মোটা অংকের টাকা খরচ হয়। কিন্তু রাস্তাঘাটের অভাবে পাকা ধান কেটে বাড়ি আনতে পারে না। অতি বৃষ্টিতে বা বন্যা হলে জমির পাকা ফসল জমিতে নষ্ট হয়।
সে মর্মে হাওর অঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে ডুবুরাস্তা (সাব মার্সেবল) নির্মাণ করা যা একটি হাওরকে কয়েক ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। এ অবস্থায় যাতায়াত সুবিধাসহ ফসল ঘরে তোলা সহজ হবে।
৭. বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে অতি বৃষ্টির কারণে ধান শুকাতে না পারায় ভিজা ধান অঙ্কুরিত হয়ে ৬০-৭০% ক্ষতি হয়ে যায়। এ ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য প্রতি ওয়ার্ডে সমবায় ভিত্তিতে সরকারি খরচে একটি করে অটো রাইসমিল স্থাপন করলে অতি বৃষ্টির ক্ষতি থেকে ধান রক্ষা পাবে।
৮. পরিবহন ও যোগাযোগ উন্নয়নের চালিকাশক্তি কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থানের দিকটি বিবেচনায় রেখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ফসল রক্ষার জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে হাওর এলাকায় উন্নতি হতে পারে কিন্তু বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রচুর ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ঢেউয়ের আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হবে। এছাড়া উজানের স্রোত বন্ধ হয়ে জমির উর্বরতা হ্রাস পাবে। ফলে ফসলহানি ঘটে উন্নয়ন ব্যাহত হাতে পারে।
এক্ষেত্রে উড়াল সেতু নির্মাণ করে এক উপজেলার সঙ্গে অন্য উপজেলার যোগাযোগ ও শহর থেকে উড়াল সেতুর মধ্যে যোগযোগ করলে পরিবহন ও যোগাযোগে ব্যাপক উন্নতি হবে।
৯. মৎস্যসম্পদ : মৎস্যসম্পদ উন্নয়নের জন্য জাল যার জলা তার- এ উপপাদ্যানুসারে প্রকৃত জেলেদের মধ্যে জলমহাল ইজারা দিতে হবে। মৎস্য সমবায় সমিতিগুলোতে প্রতীকী নাম ব্যবহার করে এক শ্রেণির লোক জলমহাল ইজারা নিয়ে ফুলবাবু সেজে জলমহালের সুবিধা ভোগ করে। এ লোকগুলো অতিশয় চালাক। অর্থ প্রদান করে জলমহালের মালিক বনে যায়। এতে প্রকৃত জেলেরা লভাংশ থেকে বঞ্চিত হন।
১০. বিল বা জলাশয় শুকিয়ে মাছধরা বন্ধ করতে হবে এবং বিষয়টি আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নিতে হবে। মাছের পোনা এবং মা মাছ নিধন বন্ধ করতে হবে ।
১১. বৈশাখ মাস থেকে আষাঢ় মাস এই তিন মাস প্রতি বছর মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হবে এতে অনেকাংশে মাছের বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাবে।
১২. বেশি করে মাছের অভয়ারণ্য স্থাপন করতে হবে। আমাদের দেশের মৎস্য আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই, এটি জোরদার করতে হবে।
১৩. মৎস্য উন্নয়নের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদ শামুক ঝিনুক রক্ষা করতে হবে। মুরগির খামারের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
১৪. প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার জন্য যখন তখন বৃক্ষনিধন বন্ধ করতে হবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি নির্মাণকরণে ফসলের জমি তথা বৃক্ষের নিধনের প্রয়োজন হয়, সুতরাং জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করতে হবে।
১৫. বাড়ির আঙিনায় এবং রাস্তার পাশে বৃক্ষরোপণ করতে হবে এবং খাসজমি বাছাই করে মিঠাপানি সহনশীল গাছ যেমন- বট, হিজল, রেন্ট্রি নল, করুই, মেড়া, আম, জাম, নলখাগরা, মটকা ছাইল্লেয়া ইত্যাদি অনেক প্রজাতির বৃক্ষরোপণ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।
১৬. ঘরবাড়ি, স্কুল, কলেজ ইত্যাদি জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আশঙ্কজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ফসলি জমির পরিমাণ কমে আসছে। এ বিষয়ে আইন পাশ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
১৭. বর্তমান সরকার সব গ্র্রামকে নগরায়ন করার কথা ভাবছে। গ্রামের অবকাঠামো পরিবর্তন করে পরিকল্পিতভাবে ৪র্থতলা করে শহরের সব সুবিধা গ্রামে পোঁছে দেবেন। এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। দ্রুত এর বাস্তবায়ন করতে হবে।
শেখ অলিনেওয়াজ (অলিউল্লাহ)
* সাংবাদিক, পুরান থানা, কিশোরগঞ্জ